মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মিটিং লাভপুরে ফুল্লরা মাঠে শেষ পর্যায়ে প্রস্তুতি। —নিজস্ব চিত্র।
লাভপুরে এই প্রথম নির্বাচনী সভা করতে আসছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আজ, রবিবার লাভপুরের ফুল্লরাতলা মেলার মাঠে সভা করার কথা মুখ্যমন্ত্রীর। শুক্রবারই লাভপুর বিধানসভা কেন্দ্রের আমোদপুরে সভা করে গিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। জনসমাগমে মোদীর সভাকে ছাপিয়ে যাওয়ার চ্যালেঞ্জ নিয়েছেন বীরভূম জেলা তৃণমূল নেতৃত্ব।
বিজেপি নেতৃত্বের দাবি, প্রধানমন্ত্রীর সভায় লোক হয়েছিল লক্ষাধিক। যদিও পুলিশের হিসাবে, ভিড় হয়েছিল হাজার পঞ্চাশের। তৃণমূল সেই দাবি নস্যাৎ করে দাবি করেছে, সভায় লোক হয়েছিল সাকুল্যে হাজার কুড়ি। তাঁরা মুখ্যমন্ত্রীর সভায় শুধুমাত্র লাভপুর বিধানসভা এলাকা থেকে পঞ্চাশ হাজারেরও বেশি লোক হবে। সভার জন্য হেলিপ্যাড, মঞ্চ এবং দর্শকদের বসার জায়গা তৈরির কাজ প্রায় শেষের মুখে। রবিবার সাঁইথিয়াতেও সভা করার কথা ছিল মমতার। কিন্তু, সেখানে মঞ্চ নির্মাণ-সহ অন্যান্য কাজ সম্পূর্ণ না হওয়ার সভা এক দিন পিছিয়েছে। এ দিন সেখানেও হেলিপ্যাড এবং দর্শকদের বসার জায়গা তৈরি হয়ে গিয়েছে। তৃণমূল নেতৃত্বের দাবি, রাতের মধ্যে মঞ্চ নির্মাণের কাজও সম্পূর্ণ হয়ে যাবে।
লাভপুরে মুখ্যমন্ত্রীর সভা তৃণমূলের কাছে দু’টি কারণে সম্মান রক্ষার প্রশ্ন হয়ে দাঁড়িয়েছে। প্রথমত, এই প্রথম লাভপুরের মাটিতে পা রাখছেন মমতা। দ্বিতীয়ত, আমোদপুরে প্রধানমন্ত্রীর সভায় চোখে পড়ার মতো ভিড় হয়েছিল। তাই ভিড়ের নিরিখে প্রধানমন্ত্রীর সভাকে টেক্কা দেওয়াই লক্ষ্য শাসকদলের। সূত্রের খবর, শুক্রবার সন্ধ্যায় বৈঠক করে ঠিবা পঞ্চায়েত এলাকার ১৬টি বুথ থেকে ৩০০ জন লোক আনার লক্ষ্যমাত্রা বেঁধে দেওয়া হয়েছে। ঠিবা ছাড়াও প্রতিটি পঞ্চায়েত এলাকা থেকে জনসংখ্যার নিরিখে বুথ-ভিত্তিক লোক সমাগমের লক্ষ্যমাত্রা বেঁধে দেওয়া হয়েছে।
তৃণমূল সূত্রে জানা যাচ্ছে, লোক আনার জন্য ২৭৫টি বাস, ১২০০ ট্রাক্টর, ৩৫০ ট্রাক ও পিক-আপ ভ্যান, হাজার দুয়েক অটোরিকশা এবং টোটোর পাশাপাশি ১৫০০ মোটরবাইক ঠিক করা হয়েছে। তৃণমূলের লাভপুর ব্লক সভাপতি তরুণ চক্রবর্তী বলেন, ‘‘রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্ত-সহ ঝাড়খণ্ড থেকে লোক এনেও প্রধানমন্ত্রীর সভায় আশানুরূপ লোক হয়নি। আমরা শুধুমাত্র লাভপুর বিধানসভা কেন্দ্রের ১৭টি পঞ্চায়েত থেকে ৫০ হাজারেরও বেশি লোক সমাগম করে দেখাব। সেই মতো প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে।’’
বিজেপির বোলপুর সাংগঠনিক জেলা সভাপতি সন্ন্যাসীচরণ মণ্ডল পাল্টা বলেন, ‘‘প্রধানমন্ত্রীর সভায় আশানুরূপ লোক হয়েছে কি না, তা সবাই দেখেছেন। সমস্ত রকম অসুবিধা সৃষ্টি করেও তৃণমূল মানুষকে আটকাতে পারেনি। ওদের সভায় মানুষ ভয়ে ও ভক্তি দেখাতে যাবে।’’ লাভপুরের বিধায়ক তথা তৃণমূলের জেলা কোর কমিটির সদস্য অভিজিৎ সিংহের দাবি, ‘‘বহুমুখী উন্নয়ন-সহ মুখ্যমন্ত্রী ফুল্লরা মন্দির এবং তারাশঙ্করের স্মৃতিবিজড়িত হাঁসুলি বাঁকের সৌন্দর্যায়নের জন্য প্রায় আড়াই কোটি টাকা বরাদ্দ করেছেন। এলাকার মানুষ সব দেখছেন। তাই মুখ্যমন্ত্রীর সভায় স্বতঃস্ফূর্ত উপস্থিতি থাকবে এলাকার মানুষের।’’