কাঁথি মহিষাদলে চলছে মুখ্যমন্ত্রীর সভার মঞ্চের কাজ। নিজস্ব চিত্র।
বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর জেলায় এই পর্বে প্রথম নির্বাচনী সভা করবেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। পশ্চিম মেদিনীপুরের দাঁতনে জনসভা করার পর বৃহস্পতিবার বিকেলের দিকে তাঁর আসার কথা পূর্ব মেদিনীপুরের মহিষাদলে। সে জন্য বুধবার শেষবেলায় মঞ্চ বাঁধা, জলের বন্দোবস্ত করা মতো কাজ চলছে তুঙ্গে। কিন্তু শাসকদল তৃণমূলের নেতাদের চিন্তা একটাই— প্রখর রোদ আর তীব্র গরমে মাঠ পূর্ণ করা যাবে তো!
মুখ্যমন্ত্রী গত মার্চের প্রথম সপ্তাহে পূর্ব মেদিনীপুরে প্রশাসনিক সভা করতে এসেছিলেন। সেবার তমলুকের নিমতৌড়িতে জেলা প্রশাসনিক অফিস সংলগ্ন ময়দানে সভা হয়েছিল। এবার তমলুক লোকসভার তৃণমূল প্রার্থী দেবাংশু ভট্টাচার্যের সমর্থনে মহিষাদল রাজ ময়দানে আসছেন মমতা। সে জন্য মঞ্চ তৈরি হয়েছে। দলীয় সূত্রের খবর, মূল মঞ্চ হিসেবে একটি হ্যাঙ্গার তৈরি করা হয়েছে। তার দু’দিকে দু’টি কাপড় দিয়ে ঘেরা মঞ্চ বানানো চলছে। সেখানে ৩০ হাজার তৃণমূল কর্মীর বসতে পারবেন। রাজবাড়ির যে ময়দানে সভা হচ্ছে, সেখানে আরও কিছুটা এলাকা জুড়ে দলের কর্মীদের বসার বন্দোবস্ত করা হচ্ছিল। তবে মুখ্যমন্ত্রীর নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা আধিকারিকেরা এতে রাজি হননি। কারণ, মহিষাদলে মমতা আট আসন বিশিষ্ট হেলিকপ্টারে চেপে আসবেন। ওই কপ্টারের পাখা তুলনামূলকভাবে বড়। সে জন্য অনেকটা জায়গা ফাঁকা রাখতে হচ্ছে।
আলিপুর আবহাওয়া দফতর বুধবার জানিয়েছে, পূর্ব ও পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা জুড়ে লাল সর্তকতা জারি থাকছে। তাপপ্রবাহ চরম হবে। যা বৃহস্পতিবারও জারি থাকবে। এতে দুশ্চিন্তায় পড়েছেন শাসকদলের নেতারা। তৃণমূল সূত্রের খবর, প্রথমে বৃহস্পতিবার দুপুর ১২টায় জনসভার সময় ছিল। প্রবল তাপপ্রবাহের জেরে তা কিছুটা পিছিয়ে দেওয়া হয়েছে। দুপুরে জমায়েত সমর্থকদের জন্য বাড়তি সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। ১৫ হাজারের কাছাকাছি টুপি এবং হাত পাখা রাখা হচ্ছে। ৫০ হাজার জলের পাউচও আনা হয়েছে। মহিষাদলের তৃণমূল বিধায়ক তিলক চক্রবর্তী বলছেন, ‘‘এই গরম তাতে অন্য বিধানসভাগুলি থেক লোকেরা কীভাবে, আসবেন তা যথেষ্ট ভাবনার। তাই মহিষাদল বিধানসভায় এলাকা থেকেই অধিক সংখ্যক সমর্থককে জনসভায় নিয়ে যাওয়া যাওয়ার চেষ্টা চলছে।’’
তৃণমূল সূত্রের খবর, তমলুক লোকসভা এলাকার মধ্যে থাকা ১০টি ব্লক এবং দুই পুরসভা এলাকা থেকে ৫০ হাজার সমর্থক জমায়েতের লক্ষ্য নেওয়া হয়েছে। সভায় তাঁদের নিয়ে যেতে বাস, ট্রেকার, ছোট গাড়ি ভাড়া করা হয়েছে। সব মিলিয়ে জেলার বিভিন্ন রুটে চলা প্রায় ১,১০০টি বেসরকারি বাসের মধ্যে অন্তত ৫০০টি ভাড়া নেওয়া হয়েছে। এর ফলে বৃহস্পতিবার সকাল থেকে জেলার বিভিন্ন এলাকার রুটের বাস চলাচল কম হবে। পূর্ব মেদিনীপুর ডিস্ট্রিক্ট বাস ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনে’র সাধারণ সম্পাদক সুকুমার বেরা বলেন, ‘‘বিভিন্ন ব্লকে তৃণমূল নেতৃত্ব রুটের বাস ভাড়ায় নিয়েছেন। ফলে বৃহস্পতিবার রাস্তায় বাস কম থাকবে।’’
সভার প্রস্তুতি দেখতে মঙ্গলবার রাতে মহিষাদলে যান তমলুক লোকসভা নির্বাচন কমিটির চেয়ারম্যান সৌমেন মহাপাত্র। বুধবার বিকেলে সভাস্থল পরিদর্শনে করেন তমলুক লোকসভা কেন্দ্রে তৃণমূলের পর্যবেক্ষক রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়। সৌমেন বলছেন, ‘‘প্রস্তুতি শেষের পথে। অপেক্ষাকৃত দূরবর্তী এলাকাগুলির জন্য বাস এবং কাছাকাছি এলাকাগুলির জন্য ট্রেকার, টোটো ভাড়া নেওয়া হয়েছে।’’