ভোটের আগে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের বড় বড় হোডিং এ সাজছে বহরমপুর। ছবি: গৌতম প্রামাণিক।
উনিশের লোকসভা নির্বাচনে বহরমপুর বিধানসভা কেন্দ্র ডুবিয়েছিল শাসক দল তৃণমূলকে। সে বার বহরমপুর লোকসভা কেন্দ্রের অন্য বিধানসভাগুলিতে তৃণমূল ভাল ফল করলেও বহরমপুরে এসে থমকে দাঁড়িয়েছিল। বহরমপুরে বিধানসভায় কংগ্রেস প্রার্থী অধীর চৌধুরী ১ লক্ষ ৩০ হাজার ১৯০ টি ভোট পেয়েছিলেন। সেখানে তৃণমূল প্রার্থী অপূর্ব সরকার ভোট পেয়েছিলেন ৪১ হাজার ১২৯ টি। অর্থাৎ এই বহরমপুর বিধানসভা কেন্দ্রে ৮৯ হাজার ৬১টি ভোটের লিডই অধীরকে জয়ী করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিল। তার পর থেকে তৎকালীন জেলা তৃণমূলের পর্যবেক্ষক অধুনা বিজেপি নেতা শুভেন্দু অধিকারী বহরমপুরের তৃণমূলের নেতাদের ‘কালিদাস’ আখ্যা দিয়ে এই শহর দলের কর্মসূচি করতে আসছিলেন না।
তবে গত পাঁচ বছরে বহরমপুরের ভাগীরথী দিয়ে অনেক জল গড়িয়েছে। শুভেন্দু অধিকারী দল বদল করে বিজেপিতে গিয়েছেন। বিধানসভা নির্বাচনে বহরমপুরে কংগ্রেসকে পিছনে ফেলে দ্বিতীয় স্থান উঠে এসেছে তৃণমূল। তার পরে পুরসভা নির্বাচনে বহরমপুর পুরসভা দখল করেছে তৃণমূল। গ্রাম পঞ্চায়েতেও তৃণমূল ভাল ফল করেছে। এই আবহে আগামী সোমবার বহরমপুর লোকসভা কেন্দ্রের নির্বাচন। বহরমপুরে তৃণমূল নেতৃত্ব কি এ বারে ‘কালিদাস’ নাম ঘোচাতে পারবে সেই প্রশ্ন উঠছে।
উনিশের লোকসভা নির্বাচনের সময়ে বহরমপুর শহর তৃণমূলের সভাপতি ছিলেন নাড়ুগোপাল মুখোপাধ্যায়। একুশের বিধানসভা নির্বাচনে সেই নাড়ুগোপালকে বহরমপুর বিধানসভা কেন্দ্র প্রার্থী করে লড়াই করেছিল তৃণমূল। কংগ্রেসকে নাড়ুগোপাল পিছনে ফেলতে পারলেও শেষ হাসি হাসেন বিজেপির সুব্রত মৈত্র। বিজেপির থেকে ২৬ হাজার ৮৫২ টি ভোট কম পেয়েছিলেন নাড়ুগোপাল। বিধানসভার পরে পুরসভা নির্বাচনে বহরমপুরের ২৮ টি ওয়ার্ডের মধ্যে ২২ টিতে জয়লাভ করে বহরমপুরের পুরপ্রধান হন নাড়ুগোপাল। এখন বহরমপুর শহর তৃণমূলের সভাপতি পদে বসেছেন নাড়ুগোপাল ঘনিষ্ঠ বাবন রায়।
দিন কয়েক আগে বহরমপুরে নির্বাচনী প্রচারে এসেছিলেন তৃণমূলের সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। অভিষেক বলেছেন, এ বারে লোকসভা নির্বাচনে বহরমপুর বিধানসভাকে লিড দিতে হবে। নাডুগোপাল বলেন, ‘‘শেষ লোকসভা নির্বাচনের পর থেকে সব নির্বাচনে আমাদের ভোট বেড়েছে।’’ যা শুনে প্রদেশ কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক মনোজ চক্রবর্তী বলেন, ‘‘গত বারের মতো এ বারে পরাজিত হবে তৃণমূল।’’