অনন্ত মহারাজ। —ফাইল চিত্র।
গ্রেটার নেতা নগেন্দ্র রায় তথা অনন্ত মহারাজকে রাজ্যসভার সাংসদ করে বিজেপির কী লাভ হল? কোচবিহারে লোকসভা আসনে ভোটের হারের পরে সেই প্রশ্নে তোলপাড় বিজেপির অন্দরমহল। এক পক্ষের দাবি, অনন্তকে সাংসদ করতে উঠেপড়ে লেগেছিলেন প্রাক্তন কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী নিশীথ প্রামাণিক। কিন্তু ভোটে নিশীথের হয়ে প্রচারে অনন্তকে তেমন ভাবে দেখা যায়নি। অন্য পক্ষের দাবি, অনন্তকে রাজ্যসভার সাংসদ করায় ক্ষোভ তৈরি হয়েছিল রাজবংশী সমাজের একটি অংশের ভোটারের মধ্যে। তার ফল ভুগতে হয়েছে।
অনন্ত বলেন, ‘‘উত্তরবঙ্গের ছ’টি আসনে জয়লাভ করেছে বিজেপি। রাজবংশী সমাজের মানুষেরা ভোট দিয়েছেন বলেই জয় হয়েছে। কোচবিহারে কেন জয় হয়নি তা দলের পর্যালোচনা করে দেখা উচিত। এ বিষয়ে আমি আর বেশি কথা বলতে চাই না।’’ বিজেপির কোচবিহার জেলা সভাপতি সুকুমার রায় বলেন, ‘‘যা বলার কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব বলবেন।’’ বিজেপির কোচবিহার দক্ষিণ কেন্দ্রের বিধায়ক নিখিলরঞ্জন দে বলেন, ‘‘নগেন্দ্র রায় বিজেপির রাজ্যসভার সাংসদ। স্বাভাবিক ভাবেই দলের প্রার্থীর হয়ে প্রচার তাঁর দায়িত্ব-কর্তব্যের মধ্যে পড়ে। কিন্তু তিনি তা করেননি। ’’ দলীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, অনন্তকে রাজ্যসভার সাংসদ করার জন্য জোরালো দাবি ছিল নিশীথের। রাজবংশীদের ভোট নিজেদের কব্জায় নিতেই ওই সিদ্ধান্ত বলে মনে করা হয়। কিন্তু সাংসদ হওয়ার কিছু দিনের মধ্যে অনন্তের সঙ্গে নিশীথের সম্পর্কে ‘চিড়’ ধরে। লোকসভা আসনের প্রার্থী হিসেবে নিশীথের নাম ঘোষণা হওয়ার পরে ক্ষোভের কথা জানিয়েছিলেন অনন্ত। পরে অবশ্য নিশীথের মনোনয়নের দিন এবং প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর কোচবিহারে জনসভার দিন বিজেপির মঞ্চে অনন্তকে দেখা যায়। বিজেপির একটি অংশ দাবি করে, তার পরে আর অনন্তকে নিশীথের কোনও প্রচারে দেখা যায়নি। ফল ঘোষণার পরে তৃণমূলের কোচবিহার জেলা সভাপতি অভিজিৎ দে ভৌমিক বিজেপির হয়ে প্রচার না করার জন্য অনন্তকে ধন্যবাদ জানান। তাতে বিজেপির অন্দরে ক্ষোভ আরও বাড়ে। অনন্ত অবশ্য বলেন, ‘‘কে আমাকে ধন্যবাদ জানাবেন, সেটা তাঁর ব্যাপার। এ বিষয়ে আমার কিছু করণীয় নেই।’’