শুক্রবার ময়নায় বিজেপি প্রার্থী অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়কে নিয়ে শুভেন্দু অধিকারীর র্যালি। নিজস্ব চিত্র।
একই দিনে তাঁদের দু’জনের কর্মসূচি। প্রত্যাশামতো শুভেন্দু অধিকারী আর অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় চোখা মন্তব্যের অস্ত্র হানলেন পরস্পরের বিরুদ্ধে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে নিয়ে তমলুকের বিজেপি প্রার্থী অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের মন্তব্যের প্রেক্ষিতে অভিষেক যেমন কড়া বক্তব্যে বিদ্ধ করলেন অভিজিৎকে, তেমনই ‘দেশদ্রোহী’ বিশেষণও দিলেন।
পাল্টা অভিজিতের পাশে দাঁড়িয়ে তৃণমূলের ‘বিসর্জন’ ঘোষণা করলেন শুভেন্দু অধিকারী। অভিজিৎকে ‘নবজাগরণের প্রতীক’ বলার পাশাপাশি জেলে পোড়ার হুমকি দিলেন অভিষেককে। নন্দীগ্রাম আন্দোলনের সময় অভিষেক কোথায় ছিলেন বলে প্রশ্ন তুলে করা কটাক্ষও শোনা গেল বিরোধী দলনেতার গলায়।
লোকসভা ভোটে তমলুকের তৃণমূল প্রার্থী দেবাংশু ভট্টাচার্যর সমর্থনে শুক্রবার তমলুক শহরে রোড-শো করতে এসেছিলেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। রোড-শোয়ের শেষে বক্তব্য রাখতে গিয়ে অভিষেক বলেন, ‘‘তমলুকের মাটিতে বিজেপি এমন একজন প্রার্থীকে দাঁড় করিয়েছে যে শুধু বাংলা বিরোধী নয়, দেশদ্রোহী। যে ভদ্রলোক নাথুরাম গডসে আর গান্ধীজির মধ্যে এক জনকে বেছে নিতে ইতস্তত বোধ করে, তাঁর থেকে বড় দেশদ্রোহী কেউ হতে পারে না।’’
সন্দেশখালির ঘটনার প্রেক্ষিতে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সম্পর্কে হলদিয়ার এক সভায় অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় করা মন্তব্য নিয়ে তৃণমূল নির্বাচন কমিশনে অভিযোগ জানিয়েছে। নির্বাচন কমিশন অভিজিৎকে শুক্রবার শোকজ করেছে। সেই প্রসঙ্গে এ দিন অভিষেক বলেন, ’’আমি আজকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দাম বলতে এসেছি।(এরপরেই একটি ছবি হাতে তুলে ধরেন অভিষেক। যাতে দেখা যাচ্ছে যে, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে নমস্কার করছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী)। এই হচ্ছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দাম। তুমি যার টিকি ধরে রাজনীতি কর সে মাথা নিচু করে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কেপ্রণাম করে।’’
এখানেও না থেমে অভিজিৎকে আক্রমণ করে অভিষেকের মন্তব্য, ’’আপনার দাম তো সবাই জানে। আপনি লোকেদের চাকরি খেয়েছেন। যুব সমাজের হাত থেকে কর্মসংস্থানের নিয়োগপত্র কেড়ে নিয়েছেন বিজেপির কথায়, সিপিএমের কথায়।’’
এ প্রসঙ্গে অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় এ দিন বলেন, "আমি শুনেছি ওরা(তৃণমূল) আমার নামে নির্বাচন কমিশনে অভিযোগ করেছে। কমিশন জানতে চাইলে আমি পুরো ভিডিও দিয়ে দেখিয়ে দেব যে, আমি আসলে কী বলতে চেয়েছিলাম এবং তার কী অর্থ কী। চিঠি পেলে তার উত্তর দেব।’’
এ দিন হলদিয়ার সভায় শুভেন্দু নন্দীগ্রাম আন্দোলনে মমতা ও অভিষেকের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন। তাঁর মুখে শোনা যায়, ‘‘ আমি যদি মেদিনীপুরের ছেলে। আপনাকে প্রাক্তন করব আর আপনার ভাইপোকে জেলে পুরব। নন্দীগ্রামে আন্দোলনের শুরু হয়েছিল ২০০৬ সালে তেসরা ডিসেম্বর। ১৪ মার্চ আপনারা কোথায় ছিলেন? তার আগের দিন রাতে আমি নন্দীগ্রামে মিটিং করেছি। পরে আমি আর শিশির অধিকারী সকাল আটটা থেকে বাড়ি থেকে বেরিয়ে সবং বালিচক হয়ে নদী পেরিয়ে নন্দীগ্রামে ঢুকেছিলাম। সমস্ত দেহ পরিবারের হাতে তুলে দিয়েছিলাম।’’ এ দিন বিরোধী দলনেতা ময়নাতে রোডশো-ও করেন।