মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। —ফাইল চিত্র।
আসছেন বিরোধী দলনেতার শহরে। দলীয় প্রার্থীর সমর্থনে হেঁটে প্রচার সারবেন। কিন্তু তৃণমূল নেত্রী তথা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের এবারও নির্বাচনী কর্মসূচি থাকছে না বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর কাছে হেরে যাওয়া বিধানসভা এলাকা নন্দীগ্রামে। তাঁর বদলে দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় সেখানে কর্মসূচি করবেন। আপাতত তৃণমূলের এই দুই শীর্ষ নেতৃত্বের কর্মসূচির জন্য প্রস্তুতি শুরু হয়েছে।
গত বিধানসভা নির্বাচনে মমতা নন্দীগ্রামে প্রার্থী হয়েছিলেন। সে সময় তিনি প্রচারে এসে জানান, ভবানীপুর তাঁর বড় বোন আর নন্দীগ্রাম মেজো বোন। তবে শুভেন্দুর কাছে হারার পরে গত তিন বছরে মমতা জেলা সফরে এলেও নন্দীগ্রামমুখো হননি। লোকসভা নির্বাচনেও সেই ধারা বজায় থাকায় প্রশ্ন উঠছে, তিনি কি নন্দীগ্রাম ‘এড়াচ্ছেন?’
এবার আগামী ১৭ মে শুভেন্দুর নিজের শহর কাঁথিতে আসার কথা মুখ্যমন্ত্রীর। সে জন্য শনিবার সন্ধ্যায় কাঁথি সাংগঠনিক জেলা কার্যালয়ে একটি প্রস্তুতি বৈঠক হয়। সকালে একই রকম একটি প্রস্তুতি বৈঠক হয়েছে চণ্ডীপুরে। কারণ, ১৭ মে চণ্ডীপুরেও জনসভা করবেন মমতা। এদিন চণ্ডীপুর, খেজুরি, ভগবানপুর এবং পটাশপুর বিধানসভার নেতৃত্বকে নিয়ে প্রথম বৈঠক হয়েছে। বিকেলে বৃষ্টি থামতে উত্তর এবং দক্ষিণ কাঁথি, রামনগর বিধানসভার নেতাদের নিয়ে আরেকটি বৈঠক হয়। দুটি বৈঠকেই কাঁথি সাংগঠনিক জেলা তৃণমূল সভাপতি পীযূষকান্তি পন্ডা, তৃণমূলের নির্বাচনী পর্যবেক্ষক রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়, মন্ত্রী অখিল গিরি ছিলেন।
তমলুকের তৃণমূল প্রার্থী দেবাংশু ভট্টাচার্যের সমর্থনে মহিষাদল সভা করেছেন মমতা। কাঁথিতে তিনি প্রথম আসছেন প্রচারে। কাঁথি শহরে মমতার ওই পদযাত্রা ঘিরে উন্মাদনা তৈরি হয়েছে তৃণমূলে। জেলা (কাঁথি) সভাপতি পীযূষকান্তি পন্ডা বলছেন, ‘‘চণ্ডীপুরে দুটি মাঠ ঠিক করা হয়েছে। প্রশাসন যেখানে অনুমতি দেবে সেখানেই সভা হবে। কাঁথির পদযাত্রার জন্য কর্মীদের মধ্যে আবেগ তৈরি হয়েছে।’’
মমতার সভার দিন বড় কর্মসূচি নেই বিজেপির। তবে ১৮ মে খেজুরিতে বিজেপি প্রার্থী সৌমেন্দু অধিকারীর সমর্থনে রোড শো এবং সভা করার কথা মিঠুন চক্রবর্তীর। ২২ মে খেজুরির বোগা থেকে হেড়িয়া পর্যন্ত রোড শো রয়েছে শুভেন্দুর। বিকেলে হেঁড়িয়া থেকে ইটাবেড়িয়া হয়ে খাড় পর্যন্ত আরেকটি রোড শো রয়েছে তাঁর। এছাড়া কাঁথিতে সভা করার কথা স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ এবং উত্তর প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথের। বিজেপির জেলা (কাঁথি) সভাপতি অরূপ দাস বলছেন, ‘‘১৭ মে বড় কোনও কর্মসূচি নেই। তবে তার পরে ঠাসা কর্মসূচি।’’
অন্যদিকে, ২২ মে নন্দীগ্রামে অভিষেকের সভার প্রস্তুতি বৈঠক এ দিন হয়েছে নন্দীগ্রাম-১ ব্লকে। ওই দিন নন্দীগ্রামের বাইপাস সংলগ্ন এলাকায় অভিষেকের সভাটি হবে। নন্দীগ্রাম পার্শ্ববর্তী বিধানসভা খেজুরি, চণ্ডীপুর থেকেও তৃণমূল কর্মীরা আসবেন। নন্দীগ্রামের তৃণমূল নেতা শেখ সুফিয়ান বলেন, ‘‘অভিষেকের সভায় লক্ষাধিক জনসমাগম ঘটবে।’’ যদিও বিজেপির তরফে তমলুকে সাংগঠনিক জেলা সম্পাদক মেঘনাদ পালের পাল্টা দাবি, ‘‘অভিষেক যত বেশি আসবেন, বিজেপির ভোট তত বাড়বে।’’