—প্রতীকী চিত্র।
লোকসভা নির্বাচনে দলীয় প্রার্থী শতাব্দী রায় প্রায় দু’লক্ষ ভোটে জয়ী হয়েছেন বীরভূম কেন্দ্রে। কিন্তু সেই কেন্দ্রের অন্তর্গত, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যারে মামাবাড়ির গ্রাম কুসুম্বায় ‘হার’ এড়াতে পারল না তৃণমূল। গত লোকসভা ও বিধানসভা-সহ সম্প্রতি পঞ্চায়েত নির্বাচনেও কুসুম্বা গ্রামে পিছিয়ে ছিল তৃণমূল। এ বারে লোকসভা ভোটে কুসুম্বা জিততে শাসক দল ঝাঁপালেও সেই আশা পূরণ হল না।
গত পঞ্চায়েত নির্বাচনে কুসুম্বা গ্রামের তিনটি আসনের মধ্যে দু’টিতে বিজেপির কাছে হার মানতে হয় তৃণমূলকে। পঞ্চায়েত সমিতির একটি আসনে মুখ্যমন্ত্রীর মামাতো ভাই, তৃণমূল নেতা নীহার মুখোপাধ্যায়ের স্ত্রী পম্পাও বিজেপি প্রার্থীর কাছে হেরে যান। এর পরে নীহারকে দলের রামপুরহাট ১ ব্লক সভাপতি করা হয়। লোকসভা ভোটে ‘মর্যাদার লড়াই’ হিসেবে কুসুম্বায় জয়ের লক্ষ্য নেওয়া হয় বলে তৃণমূল নেতারাই দাবি করেছিলেন। কিন্তু সেই লক্ষ্য পূরণ হল না এ বারও।
৪ জুন লোকসভা ভোটের ফল বেরোতে দেখা যাচ্ছে, কুসুম্বা গ্রাম পঞ্চায়েতে ২ হাজার ৭৪৩ ভোটে বিজেপির থেকে পিছিয়ে আছে তৃণমূল। নীহারের ব্যাখ্যা, ‘‘অঞ্চলে হার হলেও ব্লকে আমরা বিজেপির থেকে এগিয়ে আছি। গ্রামে ও অঞ্চলে কেন হার হল সেই ব্যাপারে আমরা পর্যালোচনা করব।’’ তাঁর আশা, ‘‘আগামী বিধানসভা নির্বাচনে আমাদের ভোট পুনরুদ্ধার করতে পারব বলে আশাবাদী।’’
কুসুম্বা যে বিধানসভার অন্তর্গত, সেই রামপুরহাট বিধানসভায় ৬ হাজার ৯৬১ ভোটে এগিয়ে রয়েছে তৃণমূল। কিন্তু কুসুম্বার মতোই পিছিয়ে রয়েছে বিধানসভা এলাকার কাষ্ঠগড়া, খরুণ, গণপুর, কাপিষ্ঠা ও রামপুর পঞ্চায়েতে। রামপুরহাট শহরেও তৃণমূল বিজেপির থেকে পিছিয়ে রয়েছে। তবে নারায়ণপুর, মাসড়া অঞ্চল এ বারে প্রথম লোকসভা নির্বাচনে বিজেপির থেকে তৃণমূল বেশি ভোট পেয়েছে।
তবে তৃণমূল নেতৃত্বকে কিছুটা চিন্তায় রেখেছে রামপুরহাট শহরের ফলাফল। রামপুরহাট শহরে এ বার সবচেয়ে বেশি ব্যবধানে হেরেছে তৃণমূল। রামপুরহাট পুরসভার ১৮টি ওয়ার্ডের মধ্যে ১৫টি ওয়ার্ডেই তৃণমূল বিজেপির চেয়ে পিছিয়ে রয়েছে। ৭ হাজার ৩২৭ ভোটে পুরসভায় পিছিয়ে থাকার জন্য দলের নেতৃত্বের মধ্যেই ক্ষোভ ছড়িয়েছে বলে তৃণমূল সূত্রে দাবি।
রামপুরহাট পুরসভার চেয়ারম্যান সৌমেন ভকতের ৯ নম্বর ওয়ার্ড-সহ দলের জেলা চেয়ারম্যান তথা রামপুরহাটের বিধায়ক আশিস বন্দ্যোপাধ্যায়ের ৫ নম্বর ওয়ার্ড, শহর সভাপতি সৈয়দ সিরাজ জিম্মির ১১ নম্বর ওয়ার্ডে পিছিয়ে রয়েছে তৃণমূল। আশিস বলেন, ‘‘সাঁইথিয়া, দুবরাজপুর, নলহাটি যেখানে পারছে, সেখানে আমরা কেন পারছি না এটা আমাদের অবশ্য্ই ভাবতে হবে। দলের প্রতিটি কর্মী পরিশ্রম করলেও আমরা কেন শহরে পিছিয়ে পড়ছি তার কারণ অবশ্যই বের করতে হবে।’’ আশিস মানছেন, ‘‘এ ক্ষেত্রে নেতৃত্বের গ্রহণযোগ্যতার হয়তো কোথাও ফাঁক থাকছে বা জনগণ নেতৃত্বকে পছন্দ করছেন না। যাই হোক দলের শীর্ষ নেতৃত্বর কাছে শহরের রিপোর্ট পাঠানো হবে।’’