—প্রতীকী চিত্র।
পুরসভা নির্বাচনে রেকর্ড ‘লিডে’ জিতেছিল সিপিআই। তারপরে পুর প্রতিনিধি দল বদলান। এ বার লোকসভা ভোটে রেলশহরের সেই ওয়ার্ডে রেকর্ড ‘লিড’ পেলেন তৃণমূল প্রার্থী— প্রায় সাড়ে ৯হাজার!
খড়্গপুর শহরের ৪ নম্বর ওয়ার্ডের এই ফল শোরগোল ফেলেছে। এই ওয়ার্ডে তৃতীয়স্থানে চলে গিয়েছে বিজেপি। আর গোটা শহরে বিভিন্ন বুথে শূন্য পাওয়া সিপিআই হয়েছে দ্বিতীয়। তারা পেয়েছে ২৭৩টি ভোট। আর তৃণমূলের প্রাপ্তি ৯,৬৪৬টি ভোট। ব্যবধান ৯,৩৭৩টি ভোটের। বিজেপির থেকে এই ওয়ার্ডে প্রথম তৃণমূল ৯,৪৪০ভোটে এগিয়ে ।
অথচ ২০২২ সালের পুরভোটে এই ৪ নম্বর ওয়ার্ডেই সিপিআই প্রার্থী ৭,৪৭৩টি ভোট পেয়ে জিতেছিলেন। প্রায় সাড়ে ৫হাজার ভোটে কার্যত রেকর্ড ‘লিডে’ জিতেছিলেন সিপিআই প্রার্থী। তবে পরে তিনি তৃণমূলে যোগ দেন। এ বার মস্ত লিডের পরে সেই ‘দলবদলু’ পুর প্রতিনিধি নারগিস পরভিন বলেন, “যদি দল কারণ হত, তাহলে তো এ বারেও সিপিআই লিড পেত। আমার ওয়ার্ডের মানুষ ২০২২ সালে আমাকে দেখে ভোট দিয়েছিলেন। আমি দল বদল করলেও সেই ভোটাররা আমার সঙ্গেই আছেন। আর দিদির (মুখ্যমন্ত্রী) উন্নয়ন তো আছেই। সব মিলিয়েই দলের প্রার্থী জুন মালিয়া এই ওয়ার্ডে প্রায় সাড়ে ৯ হাজার লিড পেয়েছেন।”
তৃণমূল নেতৃত্ব অবশ্য দলকেই বড় করে দেখছে। আর ধর্মীয় মেরুকরণের অঙ্ক দেখছে বিরোধীরা। ৪নম্বর ওয়ার্ড সংখ্যালঘু অধ্যষিত। সেখানে বিজেপি প্রার্থী প্রচারেই যেতে পারেননি। আর বিরোধীরা বিজেপির উগ্র হিন্দুত্বের বিরুদ্ধে প্রচার চালিয়েছিল। কিন্তু তাঁরা বাম প্রার্থীকে বেছে নিলেন না কেন? সিপিএমের জেলা নেতা সবুজ ঘোড়াইয়ের মতে, “এই নির্বাচনে বিজেপির বিরুদ্ধে লড়াই করার জন্য মানুষ তৃণমূলকেই উপযুক্ত মনে করেছে। এখানে পুর প্রতিনিধি কোনও বিষয় নয়।” মেদিনীপুর কেন্দ্রের সিপিআই প্রার্থী বিপ্লব ভট্টও বলেন, “ওই ওয়ার্ডের ভোটাররাও মনে-প্রাণে সিপিআই। কিন্তু দেশজুড়ে ধর্মীয় মেরুকরণে সংখ্যালঘু ভোটাররা বিজেপিকে ভয় পেয়েছে। দেশের সরকার গড়ার নির্বাচনে বিজেপির বিরুদ্ধে ধর্ম নিরপেক্ষ বামেরা লড়াই করতে পারবে না ভেবেই হয়তো তৃণমূলকে ভোটটা দিয়েছে।”
সংখ্যালঘু তত্ত্বে জোর দিয়ে তৃণমূলের জেলা সহ-সভাপতি দেবাশিস চৌধুরীও বলেন, “পুরসভা ও লোকসভা নির্বাচনের গুরুত্ব সম্পূর্ণ আলাদা। এ বার সংখ্যালঘু ভোটাররা বুঝেছিল বিজেপি নিরাপদ নয়। আর বিজেপির বিরুদ্ধে লড়াই একমাত্র করতে পারবে তৃণমূল। তবে এক্ষেত্রে পুর প্রতিনিধিকেও অস্বীকার করতে পারি না।”