সিউড়ি ১ ব্লকের আলুন্দা পঞ্চায়েতে রোড শো বীরভূম লোকসভা কেন্দ্রের প্রার্থী শতাব্দী রায়ের। নিজস্ব চিত্র।
রাস্তা তৈরিতে নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহার হয়েছে বলে ভোট-প্রচারে এসে অভিযোগ শুনলেন বীরভূম কেন্দ্রের তৃণমূল প্রার্থী, বিদায়ী সাংসদ শতাব্দী রায়। বাসিন্দাদের একাংশের দাবি, শতাব্দী তাঁদের অভিযোগের ‘যথাযথ’ গুরুত্ব দেননি। তৃণমূলের জেলা সহ-সভাপতি মলয় মুখোপাধ্যায় পাল্টা বলেন, ‘‘কেউ কেউ ভোটের আগে রাজনৈতিক ফায়দা লুটতে চাইছে। কিন্তু লাভ হবে না।”
বৃহস্পতিবার দুপুরে সিউড়ি ১ ব্লকের আলুন্দা পঞ্চায়েতে নির্বাচনী প্রচারে গিয়েছিলেন শতাব্দী রায়। সঙ্গে ছিলেন স্থানীয় পঞ্চায়েত ও জেলা পরিষদের সদস্যরাও। প্রচারের শুরুর দিকেই ইটাগড়িয়া বাসস্ট্যান্ড সংলগ্ন এলাকায় পৌঁছান শতাব্দী। তখনই স্থানীয় কয়েকজন যুবক তাঁকে সিউড়ি-সাঁইথিয়া রাস্তা সারাইয়ের ক্ষেত্রে নিম্নমানের নির্মাণ সামগ্রী ব্যবহার নিয়ে অভিযোগ করেন। বিদায়ী সাংসদের সামনেই হাত দিয়ে কিছুটা পিচ তুলেও দেখান তাঁরা। ওই বাসিন্দাদের দাবি, শুধুমাত্র ‘দেখছি’ বলে এলাকা ছাড়েন শতাব্দী৷
স্থানীয় বাসিন্দাদের দাবি, সিউড়ি-সাঁইথিয়া রাস্তার কিছু অংশ দীর্ঘদিন ধরেই বেহাল অবস্থায় ছিল। বেশ কিছু দিন আগেই সেই রাস্তা সারাইয়ের কাজে হাত দেয় পূর্ত দফতর। কিন্তু কাজ শুরু হলেও সেখানে সঠিক নিয়ম মেনে কাজ হচ্ছে না বলেই বাসিন্দাদের অনেকের দাবি৷ স্থানীয় বাসিন্দা শেখ ফিরোজ হোসেন, শেখ ইয়াকুবউদ্দিনরা বলেন, “রাস্তার পিচ কি কখনও হাতে করে উঠিয়ে দেওয়া যায়? এই কাজে প্রচুর কারচুপি হচ্ছে৷ আমরা সেই বিষয়ে সাংসদকে বললাম। কিন্তু তিনি দেখছি বলেই চলে গেলেন। কোনও কাজ হবে বলে তো মনে হয় না।”
পূর্ত দফতরের এক্সিকিউটিভ ইঞ্জিনিয়ার উৎপল চৌধুরী বলেন, ‘‘বিভিন্ন জায়গায় স্থানীয় মানুষরা নানা কারণে কাজ আটকে রেখেছেন, না হলে কাজ কয়েক মাস আগেই শেষ হয়ে যাওয়ার কথা। যেখানে কাজ হয়ে গেছে সেখানে কোনও ত্রুটি বিচ্যুতি নেই।’’ তাঁর যুক্তি, ‘‘এই কাজের রাজ্য ও কেন্দ্র দুই পর্যায়ে অডিট হয়৷ কোথাও যদি কোনও ভ্রান্তি বা গাফিলতি থাকে তাহলে ধরা পড়বেই।”
এ দিন বিক্ষোভকারীরা শতাব্দীর ‘আচরণে’ ক্ষোভও জানান। তাঁদের দাবি, “উনি যদি দেখছি বলেও না দেখেন, তাহলেও আমরাও ভোট দেওয়ার সময় ওনাকে দেখছি বলে দেখব না।” তবে পূর্ত দফতরের একাধিক আধিকারিক দাবি করেন, ‘‘কোথাও কোনও কাজ শুরু হলেই ঠিকাদারকে অনৈতিকভাবে টাকা দেওয়ার জন্য চাপ দিচ্ছে কিছু মানুষ। আর সেই টাকা না পেলেই ঠিকাদারের বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ এনে ঝামেলা পাকাচ্ছেন তাঁরা৷’’
তৃণমূলের জেলা সহ সভাপতি মলয় মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘এখন জেলায় যে পরিমাণ তাপমাত্রা রয়েছে, তাতে নতুন কাজ হওয়া রাস্তায় পিচ কিছুটা নরম থাকবে। এখনই সেখানে ভুলত্রুটি ধরতে যাওয়ার কোনও অর্থ নেই। ওই রাস্তায় এক বছরের মধ্যে কিছু হলে তা সম্পূর্ণ বিনামূল্যে ঠিকাদারই ঠিক করতে বাধ্য৷’’