চালু হয়নি পানশিলা ফুলবাজার। নিজস্ব চিত্র
বিধানসভার নাম পাঁশকুড়া পূর্ব। তমলুক লোকসভার মধ্যে থাকা এই বিধানসভা এলাকায় রয়েছে কোলাঘাট।সড়কপথে পূর্ব মেদিনীপুরের প্রবেশদ্বার। জেলায় যে কোনও গুরুত্বপূর্ণ বৈঠক-সমাবেশের জন্য অধিকাংশ সময় কোলাঘাটকেই বেছে নেন রাজ্যের নেতা-মন্ত্রীরা। এই এলাকারই বাসিন্দা রাজ্যের মৎস্য মন্ত্রী বিপ্লব রায়চৌধুরী। এমন একটি এলাকায় দেড় দশকেও কলেজের ভবন তৈরি করতে পারেনি তৃণমূল সরকার। পাশাপাশি, জেলার অন্যতম ফুল বিপণনের কেন্দ্র কোলাঘাটে একটিও ফুলবাজার চালু হয়নি। কোলাঘাটের এই সমস্ত অনুন্নয়নকে হাতিয়ার করেই ভোট প্রচারের ঝাঁঝ বাড়াচ্ছে বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলি।
২০১০ সালে কোলাঘাটে একটি ডিগ্রি কলেজের অনুমোদন দেয় তৎকালীন বামফ্রন্ট সরকার। ২০১১ সালের মার্চে কোলাঘাটে ৬ নম্বর জাতীয় সড়কের পাশে এক ব্যক্তির বাড়িতে প্রথম কোলাঘাট রবীন্দ্রভারতী মহাবিদ্যালয়ের ক্লাস শুরু হয়। ২০১৩ সালে কোলা ইউনিয়ন হাইস্কুলে কলেজটি স্থানান্তর হয়। প্রত্যেকদিন সকাল থেকে হাই স্কুল ভবনেই চলে কলেজের পঠনপাঠন। সকাল ১০টার দিকে স্কুল শুরুর আগে শেষ হয় কলেজ। বর্তমানে কলেজের পড়ুয়া সংখ্যা ১৪০০। চালু রয়েছে স্নাতকের ছ’টি বিষয় এবং ছ’টি পাস কোর্সের বিষয়। ২০২১ সালের বিধানসভা নির্বাচনের আগে কোলাঘাট থানা সংলগ্ন তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের প্রায় ১৪ বিঘা জায়গায় কলেজ ভবন তৈরির ছাড়পত্র দেয় বিদ্যুৎ দফতর। মাত্র মাস কয়েক আগে কাজ শুরু হয়েছে।
অনুমোদনের ১৪ বছর পরও কেন কলেজ ভবন চালু করা গেল না, ভোটের তা নিয়ে প্রশ্ন তুলছে বিরোধীরা। বিজেপির তমলুক জেলার সহ-সভাপতি দেবব্রত পট্টনায়েক বলেন, ‘‘মৎস্যমন্ত্রী কলেজ ভবনের শিলান্যাস করেছিলেন। বিধায়ক তহবিল থেকে সামান্য অর্থ বরাদ্দ করে কলেজের নামে ছোট্ট একটি নির্মাণ শুরু হয়েছে। আমাদের আশঙ্কা ভোট মিটলেই ওই কাজ বন্ধ হয়ে যাবে।"
জেলায় ফুলচাষ হয় প্রচুর পরিমাণে। কোলাঘাট ফুল বাজার বসে। বাজারটি কোলাঘাট স্টেশনের পাশে রেলের ছোট্ট একটি জায়গায় রয়েছে। এছাড়া, দেউলিয়া ফুলবাজার বসে ১৬ নম্বর জাতীয় সড়কের পাশে। রাজ্য সরকার বছর তিনেক আগে দেউলিয়ার অদূরে পানশিলায় একটি ফুল বাজার গড়ে। কিন্তু সেটি এখনও চালু হয়নি। আর কোলঘাটের বাজারে ন্যূনতম পরিকাঠামো নেই বলে দাবি। এ নিয়ে ক্ষুব্ধ জেলার ফুলচাষি ও ফুল ব্যবসায়ীরা। ফুল চাষিদের ক্ষোভের প্রভাব ভোট বাক্সে পড়বে বলে অনুমান করা হচ্ছে।
তমলুক লোকসভার এই এলাকায় অবশ্য তৃণমূলের দাপট রয়েছে। গত বিধানসভা ভোটে বিজেপি তাদের টক্কর দিলেও পঞ্চায়েত নির্বাচনে ১৩টির মধ্যে তৃণমূল ন’ট পেয়েছে। ফলে এই লোকসভা নির্বাচনেও এখানে তারা ভাল ফল করার আশা করছে। আর বিরোধীদের অভিযোগ প্রসঙ্গে তৃণমূলের তমলুক জেলা সভাপতি অসিত বন্দ্যোপাধ্যায় বলছেন, ‘‘কলেজ ভবন নির্মাণের কাজ জোর কদমে চলছে। পানশিলা ফুলবাজার তৈরির কাজ শেষ। তবে কিছু প্রশাসনিক জতিলতার কারণে সেটি চালু করা যায়নি। সেটিও
চালু হবে।’’