পুরুলিয়ায় প্রধানমন্ত্রী। নিজস্ব চিত্র।
সভা শুরু হতে তখনও ঘণ্টা দুয়েক বাকি। কানায় কানায় উপচে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সভাস্থল, পুরুলিয়ার গেঙ্গাড়ার মাঠ। এর পরে সময় যত এগিয়েছে, বেড়েছে ভিড়। ভিড় নিয়ন্ত্রণে ঘাম ছুটেছে পুলিশের। এক সময়ে দেখা গেল, সভাস্থলে ঠাঁই না পেয়ে বাইরে প্রখর রোদে দাঁড়িয়ে প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্য শুনছেন হাজার হাজার মানুষ। সভাস্থল থেকে কয়েক কিলোমিটার দূরে হেলিপ্যাডেও ছিল হাজারের ভিড়। ভিড় প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রীও বলেন, “হেলিকপ্টার থেকে নেমে দেখলাম, কত লোক। তাঁদের দেখতে গিয়েছিলাম। দিল্লিতে এয়ার কন্ডিশন্ড ঘরে বসে এক শতাংশ এদিক ওদিক হলে কী হবে, তা নিয়ে মাথা ঘামানো হচ্ছে। এই ছবি দেখলেই বোঝা যাবে, ৪ জুন কী হতে চলেছে।”
জেলা জুড়ে একাধিক সভার বদলে প্রধানমন্ত্রীকে এনে কেন্দ্রীয় ভাবে বিশাল মাপের সভা আয়োজনেরই লক্ষ্য ছিল বিজেপি নেতৃত্বের। জেলার রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের একাংশের মত, সেই লক্ষ্যে অনেকটা সফল বিজেপি। দিনভর জেলার রাজনৈতিক মহলে চর্চায় ছিল গেঙ্গাড়ার সভার ভিড়। বিজেপির রাজ্য নেতা বিদ্যাসাগর চক্রবর্তী বলেন, “আমাদের লক্ষ্য ছিল প্রধানমন্ত্রীর সভায় দেড় লক্ষ লোকের জমায়েত করা। তা পূরণ হয়েছে। দেড় লক্ষাধিকের বেশি ভিড় হয়েছে।” তৃণমূলের জেলা সভাপতি সৌমেন বেলথরিয়ার যদিও দাবি, “পাড়ায় একটি মাত্র বিধানসভার লোক নিয়ে করা মুখ্যমন্ত্রীর সভায় যে ভিড় হয়েছিল, গোটা লোকসভা কেন্দ্র নিয়ে হওয়া প্রধানমন্ত্রী সভায় সেই ভিড় হয়েছে। ঝাড়খণ্ড থেকেও প্রচুর কর্মী-সমর্থকদের সভায় আনা হয়েছে।”
ভিড়ে এ দিন নজর কাড়ে বাঁকুড়ার ওন্দার নিকুঞ্জপুরের সভাও। বিজেপি সূত্রে খবর, মঞ্চে থাকা বিষ্ণুপুরের প্রার্থী সৌমিত্র খাঁ, বিজেপির বিষ্ণুপুর সাংগঠনিক জেলা সভাপতি অমরনাথ শাখাদের মোদী বলেন, “এত বড় সভা করেছেন। হেলিকপ্টার থেকেই দেখলাম প্রচণ্ড ভিড়।” এ দিন সকাল থেকে জেলার নানা প্রান্তের মানুষের ভিড় ছিল নিকুঞ্জপুরের মাঠের দিকে। প্রচুর বাস, ছোট গাড়ির সঙ্গে মোটরবাইক, সাইকেল এমনকি পায়ে হেঁটেও সভাস্থলে পৌঁছন মানুষজন। সভা শুরুর পরেও অনেকে ভিড়ের চাপে সভাস্থলে ঢুকতে পারেননি বলে দাবি। বিজেপির বিষ্ণুপুর সাংগঠনিক জেলা সভাপতি অমরনাথ শাখা কম-বেশি এক লক্ষ মানুষের জমায়েত হয়েছিল বলে দাবি করলেও তা মানতে চাননি তৃণমূল নেতৃত্ব। বরং মোদীর এ দিনের সভাকে টেক্কা দিতে আজ, সোমবার নিকুঞ্জপুরে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সভা হতে চলেছে। তৃণমূলের বিষ্ণুপুর সাংগঠনিক জেলা সভাপতি বিক্রমজিৎ চট্টোপাধ্যায়ের দাবি, প্রধানমন্ত্রীর সভার দ্বিগুণ ভিড় মুখ্যমন্ত্রীর সভায় হবে।