মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। —ফাইল চিত্র।
মতুয়া ভক্তদের ঠাকুরবাড়ি এই কেন্দ্রেই। মতুয়া মন না জিতে এই কেন্দ্রের রাশ হাতে পাওয়া অসম্ভব। রানাঘাটের ভোটের দিনেই মিটতেই তাই বনগাঁ কেন্দ্রের অন্তর্গত কল্যাণীতে জনসভা করতে আসছেন তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
সব কিছু ঠিকঠাক চললে আগামী ১৪ মে, মঙ্গলবার বনগাঁ কেন্দ্রের তৃণমূল প্রার্থী বিশ্বজিৎ দাসের সমর্থনে কল্যাণীতে জনসভা করবেন মমতা। তার আগের দিনই নদিয়ার প্রধান দুই কেন্দ্র কৃষ্ণনগর এবং রানাঘাটের ভোট মিটে যাচ্ছে। তৃণমূলের রানাঘাট সাংগঠনিক জেলা সূত্রের খবর, দলনেত্রীর জনসভার জন্য ইতিমধ্যেই মাঠ চিহ্নিত করা হয়েছে।
বনগাঁ লোকসভার অধীনে রয়েছে নদিয়ার কল্যাণী ও হরিণঘাটা বিধানসভা। ২০২১ সালের বিধানসভা নির্বাচনে ওই দুই বিধানসভা বিজেপির দখলে যায়। অথচ গত পঞ্চায়েত ও পুরসভা নির্বাচনে আশানুরূপ ফল করতে পারেনি বিজেপি। দুই বিধানসভার অধীনে থাকা ১৬টি পঞ্চায়েতের মধ্যে মাত্র একটি পঞ্চায়েত দখল নিতে পেরেছে বিজেপি। এই পরিস্থিতিতে এ বারের লোকসভা নির্বাচনে এই দুই বিধানসভায় ভোটে ‘লিড’ নিয়ে চিন্তিত বিজেপির একাংশ। পাল্টা এই দুই বিধানসভা থেকে ‘লিড’ বাড়াতে ময়দানে নেমেছে তৃণমূল।
তৃণমূল সূত্রের দাবি, গত বিধানসভা নির্বাচনে কল্যাণী কেন্দ্রটি সামান্য ব্যবধানে তৃণমূলের হাতছাড়া হয়েছিল। এখানে দলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বও পথের কাঁটা। তৃণমূল প্রার্থীর জিততে হলে এই কেন্দ্র থেকে ভাল লিড পাওয়া প্রয়োজন। তা ছাড়া, কল্যাণীতে এমস হাসপাতাল নিয়ে বিজেপি ইতিমধ্যে হাসপাতাল সীমান্ত ঘেঁষা বনগাঁ ও নদিয়া জেলার দুই বিধানসভায় প্রচারে নেমেছে। সব মিলিয়ে রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে কল্যাণী বিধানসভা। যে কারণে এ বার খোদ তৃণমূল সুপ্রিমো জনসভার জন্য কল্যাণীকে বেছে নেওয়া হয়েছে।
তৃণমূল সূত্রের খবর, গত লোকসভা নির্বাচনের আগে সেই সময় বনগাঁর পুরপ্রধান শঙ্কর আঢ্যের সঙ্গে মতানৈক্য হয়েছিল বিশ্বজিতের। পরে তিনি বিজেপিতে যোগ দেন। ২০২১ সালের বিধানসভা নির্বাচনে বাগদা কেন্দ্র থেকে বিজেপির টিকিটে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে তৃণমূলের প্রার্থী পরিতোষকুমার সাহাকে পরাজিত করেন বিশ্বজিৎ। বিজেপি সূত্রে জানা গিয়েছে, বিজেপিতে শান্তনু ঠাকুরের বিরোধী গোষ্ঠী হওয়াতে প্রভাব ফেলতে পারেননি বিশ্বজিৎ। ফের তৃণমূলে ফেরেন তিনি। এ বারে বনগাঁ লোকসভা কেন্দ্রের প্রার্থী হয়েছেন বিশ্বজিৎ। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ওই কেন্দ্রের জন্য ওই দিন কী বার্তা দেবেন, এখন সেই অপেক্ষাতেই রয়েছেন দলের নেতা ও কর্মী-সমর্থকেরা।
রানাঘাট সাংগঠনিক জেলা তৃণমূলের সভাপতি দেবাশীষ গঙ্গোপাধ্যায় বলেন, ‘‘রানাঘাট কেন্দ্রের নির্বাচন শেষ হলেই কল্যাণী ও হরিণঘাটায় দলীয় প্রচারে আমরা জোর বাড়াব। আমাদের নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও সভা করতে কল্যাণীতে ইতিমধ্যেই আমরা তার প্রস্তুতি শুরু করেছি।’’
যদিও বনগাঁ সাংগঠনিক জেলার বিজেপির সভাপতি দেবদাস মণ্ডল বলেন, ‘‘শেষ পাঁচ বছরে সাংসদ শান্তনু ঠাকুর মানুষের সঙ্গে ছিলেন। আমাদের এই কেন্দ্র জয় এখন শুধু মাত্র সময়ের অপেক্ষা।’’