তেহট্টে মুখ্যমন্ত্রীর সভা। নদিয়ার তেহট্টে। ছবি : সুদীপ ভট্টাচার্য।
এক দিকে মতুয়াদের কাছে টানার চেষ্টা আর এক দিকে কাজের ফিরিস্তি। এই দুই তাসেই বৃহস্পতিহবার কৃষ্ণনগর কেন্দ্রের মন জয় করার চেষ্টা করলেন তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
নদিয়ার তেহট্টে মতুয়া গুরুদের নামাঙ্কিত হরিচাঁদ গুরুচাঁদ ক্রীড়াঙ্গনে বক্তব্যের শুরু থেকেই বার বার মতুয়াদের সম্বোধন করেন তিনি, উন্নয়ন থেকে নাগরিকত্বের প্রসঙ্গ তুলে তাঁদের আশ্বস্ত করার চেষ্টা করেন। এমনিতে মতুয়া অধ্যুষিত দক্ষিণ নদিয়া মূলত রানাঘাট কেন্দ্রের মধ্যে পড়ে। উত্তরের সংখ্যালঘু অধ্যুষিত কৃষ্ণনগর কেন্দ্রে মতুয়া ভোট সেই তুলনায় সামান্যই রয়েছে, যতটা আছে তার বেশির ভাগটাই অবশ্য রয়েছে তেহট্ট বিধানসভা কেন্দ্রে। এবং তাঁদের বড় অংশই বিজেপি সমর্থক বলে রাজনৈতিক মহলের ধারণা। গত লোকসভা ভোটে এই কেন্দ্রে বিজেপির তুলনায় পিছিয়ে ছিল তৃণমূল, গত পঞ্চায়েত ভোটেও তারা ধরাশায়ী হয়েছে। এ দিন মমতা কার্যত সেই পরিস্থিতিটাই পাল্টানোর চেষ্টা করেছেন বলে দলের নেতাকর্মীদের একাংশের ধারণা।
এ দিন দুপুর আড়াইটে নাগাদ সভায় এসে বক্তব্যের শুরুতেই মমতা বলেন, “মতুয়া ভাইবোনদের অনেক অভিনন্দন। নমঃশূদ্র ভাইবোনেরা ভাল থাকবেন।” বক্তৃতার মধ্যেই মতুয়া বাড়ির উন্নয়ন, ‘বড়মা’র চিকিৎসার কথা, কৃষ্ণনগরে হরিচাঁদ গুরুচাঁদ ঠাকুর ক্যাম্পাস, ঠাকুরনগরে বিশ্ববিদ্যালয় গড়ার ছাড়াও হরিচাঁদ গুরুচাঁদ ঠাকুরের জন্মদিনে রাজ্য সরকারি ছুটির দিন ঘোষণার কথাও তোলেন তিনি। তোলেন মতুয়া পরিষদ, নমঃশূদ্র বিকাশ পরিষদ গঠনের কথাও। সিএএ প্রসঙ্গ তুলে মমতার দাবি, “আপনাদের নাগরিকত্ব কাড়ার অধিকার কারও নেই।” পরে মতুয়াদের নৃত্যগীত দিয়েই সভা শেষ হয়। এ ছাড়া লক্ষ্মীর ভান্ডার বা আবাসের আশ্বাস ছাড়াও ইসকন ও এমসের জন্য জমি দেওয়া, নবদ্বীপের সংস্কৃতি গবেষণা কেন্দ্র, মৌলনা আবুল কালাম আজ়াদ ইউনিভার্সিটি অব টেকনোলজি, কল্যাণীর এডুকেশনাল ফার্ম, কৃষ্ণনগরের কন্যাশ্রী বিশ্ববিদ্যালয়, চারটি সরকারি কলেজ, মডেল স্কুল ও মাদ্রাসার খতিয়ান দেন মমতা। বিজেপির মিডিয়া আহ্বায়ক সন্দীপ মজুমদারের দাবি, “মমতার কথার সঙ্গে কাজের কোনও মিল নেই।” কৃষ্ণনগরের সিপিএম প্রার্থী এস এম সাদি বলেন, “ভোটের মুখে এ সব বলে উনি নির্বাচনী বিধি লঙ্ঘন করছেন বলেই আমার মনে হয়।”