বাঁকুড়ার পদযাত্রায় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও দলীয় প্রার্থী অরূপ চক্রবর্তী। ছবি: শুভেন্দু তন্তুবায়।
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর জনসভার ‘পাল্টা’ পুরুলিয়া ও বাঁকুড়া শহরে দলীয় প্রার্থীদের সমর্থনে রবিবার পদযাত্রা করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। পদযাত্রা ঘিরে ভাল জমায়েত হয়েছে। বিজেপির তবে দাবি, মোদীর সভার কাছে ম্লান ছিল মমতার কর্মসূচি।
দুপুর তখন প্রায় আড়াইটে। গনগনে রোদ মাথায় পুরুলিয়া শহরের এমএসএ ময়দানের কাছ থেকে পদযাত্রা শুরু করেন তৃণমূল নেত্রী। সঙ্গে ছিলেন প্রার্থী শান্তিরাম মাহাতো, আইনমন্ত্রী মলয় ঘটক। পুরুলিয়া শহরের পোস্টঅফিস মোড় হয়ে, চকবাজার কালীমন্দির ছুঁয়ে পুরুলিয়া স্টেশনের কাছে ডাকবাংলো এলাকায় পদযাত্রা শেষ হয়। পরে ফের পুরুলিয়া মফস্সল থানার কাছ থেকে দু-তিনশো মিটার পথ হাঁটেন তিনি। প্রায় সাড়ে চার কিলোমিটারের যাত্রাপথে মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে করমর্দন করতে ও নিজস্বী তুলতে ভিড় চোখে পড়েছে। হাঁটার মাঝে রাস্তার পাশে একটি বাচ্চার সঙ্গে হাত মেলান মুখ্যমন্ত্রী। মিছিলে পা মেলানো তৃণমূল কর্মী বিষ্ণু মাহাতো, মনোরঞ্জন মাহাতোরা বলেন, “দিদিকে (মমতা) কাছ থেকে দেখতে পেলাম। এই রোদ-গরম উপেক্ষা করে যে ভাবে দীর্ঘপথ হাঁটলেন, আশ্চর্য হতে হয়।”
তৃণমূলের জেলা সভাপতি সৌমেন বেলথরিয়া বলেন, “আমরা শুধু পুরুলিয়া বিধানসভার উপরে জোর দিয়েছিলাম। তাতেই পুরুলিয়া শহর লোকারণ্য হয়ে উঠেছিল।” পাল্টা জেলা বিজেপি সভাপতি বিবেক রঙ্গার দাবি, “জনসভায় লোক হবে না জেনেই তৃণমূল রোড-শো করেছে। তবে তা-ও ফ্লপ হয়েছে।”
পুরুলিয়ায় পদযাত্রা সেরে বাঁকুড়ার উদ্দেশে রওনা দেন মুখ্যমন্ত্রী। বিকেল ৪টে নাগাদ তাঁর হেলিকপ্টার নামে বাঁকুড়া শহরের খ্রিস্টান কলেজের মাঠে। শুরু হয় মিছিল। মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে ছিলেন বাঁকুড়ার দলীয় প্রার্থী অরূপ চক্রবর্তী ও জেলার দলীয় পর্যবেক্ষক সমীর চক্রবর্তী। পিছনের সারিতে ছিলেন লক্ষ্মীর ভান্ডারের কলস হাতে ‘লক্ষ্মী’র সাজে থাকা মহিলারা। ছিল আদিবাসী নাচের দলও। সাত বছরের মেয়েকে নিয়ে জেলা স্কুলের কাছে দাঁড়িয়েছিলেন বাঁকুড়া শহরের তনুশ্রী মণ্ডল। তিনি বলেন, “দিদিকে দেখব বলেই সকাল সকাল রান্না-খাওয়ার পাট চুকিয়ে এসেছি।” প্রচুর শিক্ষক-শিক্ষিকাও মিছিলে যোগ দেন, জানান মিছিলে থাকা পশ্চিমবঙ্গ তৃণমূল মাধ্যমিক শিক্ষক সমিতির বাঁকুড়া সাংগঠনিক জেলার সভাপতি গোরাচাঁদ কান্ত।
প্রায় চার সাড়ে কিলোমিটার হেঁটে হিন্দু স্কুলের কাছে শেষ হয় মিছিল। পরে গাড়িতে দুর্গাপুরের উদ্দেশে রওনা দেন মুখ্যমন্ত্রী। অরূপ বলেন, “পঞ্চাশ হাজারের বেশি লোকের জমায়েত হয়েছিল।” বিজেপি প্রার্থী সুভাষ সরকারের যদিও কটাক্ষ, প্রধানমন্ত্রীর সভার কাছে জৌলুসহীন ছিল মুখ্যমন্ত্রীর মিছিল।