সাগরদিঘির বিধায়ক বাইরন বিশ্বাস। —ফাইল চিত্র।
তাঁরা দু’জনের কেউই প্রার্থী নন এ বারের লোকসভা নির্বাচনে। তবু জঙ্গিপুর লোকসভা আসনে কার্যত লড়ছেন তাঁরাই। এ বারের লোকসভা নির্বাচনে বাপ-ছেলের লড়াই দেখবে জঙ্গিপুর।
এক দিকে তৃণমূলের প্রার্থী খলিলুর রহমানের পাশে দাঁড়িয়েছেন ছেলে তথা সাগরদিঘির বিধায়ক বাইরন বিশ্বাস, অন্য দিকে নির্দল প্রার্থী ভাগ্নে আসাদুল শেখের পাশে দাঁড়িয়েছেন বাইরনেরই বাবা বিড়ি শিল্পপতি বাবর আলি বিশ্বাস। বৃহস্পতিবার অনেক গাড়ির বিশাল কনভয় ও হাজার খানেক বন্ধু, বান্ধব ও সমর্থকদের নিয়ে বহরমপুরে মনোনয়নপত্র জমা দিলেন আসাদুল। এ পর্যন্ত বহরমপুরে যে ক’জন প্রার্থীর মনোনয়ন জমা পড়েছে, আসাদুলের এই এলাহি আয়োজন সম্ভবত সবাইকে ছাড়িয়ে গেছে এ দিন।
বছর দুই আগে ঠিক এমনই এক অস্বস্তির মুখে পড়তে হয়েছিল খলিলুরকেও। তাঁর যমজ ভাই জইদুর রহমান কংগ্রেসের প্রার্থী হিসেবে শমসেরগঞ্জ বিধানসভায় দাঁড়িয়ে পড়েন তৃণমূল প্রার্থী আমিরুল ইসলামের বিরুদ্ধে। ঘোর রাজনৈতিক সঙ্কটে পড়ে ঘর ছাড়তে হয় ভাইকে। খলিলুরের বিশ্বাসযোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছিল দলের মধ্যে। শেষ পর্যন্ত অবশ্য সঙ্কট মুক্তি ঘটে ভাই জইদুরের হারে। বাইরনের পরিবারে যেন তারই পুনরাবৃত্তি।
এ দিন বাবর বলেন, “ছেলে বাইরন কী করছে আমি জানি না। তবে আমি ভাগ্নে আসাদুলের পাশে আছি। আমার ছোট বোনের ছেলে সে। আরও একটি সম্পর্কে জড়িয়ে আছে সে। আমার স্ত্রী ওর নিজের পিসি। ওকে জঙ্গিপুরের মানুষই জেতাবে। গণনার পরে দেখবেন ফল কী হয়।” আসাদুলও বলছেন, “রাজনীতি সরাসরি না করলেও রাজনীতির সঙ্গে আমার যোগ রয়েছে। নির্দল হলেও লড়াই করতেই দাঁড়িয়েছি আমি। কিছু শিল্পপতি গরিব মানুষকে চুষে খাচ্ছে। অসহায় মানুষকে শোষণ করছে। জঙ্গিপুরে সর্ব স্তরে ব্যাপক দুর্নীতি চলছে। আমার বিশ্বাস, আমি জিতব।”এই অবস্থায় যথেষ্ট অস্বস্তিতে পড়েছেন সাগরদিঘির তৃণমূল বিধায়ক বাইরন বিশ্বাস। বাইরন বলছেন, “ভোটে দাঁড়ালে অনেকেই দু’দশটি ভোট পায়। জঙ্গিপুর লোকসভাতে নির্দল হিসেবে দাঁড়িয়ে হাজার পাঁচেক ভোট পেতেই পারেন ভাই।”
কিন্তু রাজনৈতিক মহলের খবর, বিড়ি শিল্পপতিদের বিরাট একটি অংশের সমর্থন রয়েছে আসাদুলের পিছনে। বাবর বিশ্বাস সামনে এলেও পিছনে রয়েছেন অনেকেই। তৃণমূলের বেশ কয়েক জন নেতাও রয়েছেন আসাদুলের সঙ্গে।