মিছিলের সামনের সারিতে বিজেপি প্রার্থী সুভাষ সরকার। নিজস্ব চিত্র।
বাঁকুড়ায় মহিলা বিজেপির মিছিলে হাঁটলেন সন্দেশখালির মহিলারা। তাঁদের মধ্যে কেউ কেউ নিজেকে ধৃত তৃণমূল নেতা শেখ শাহজাহানের বাহিনীর হাতে নির্যাতিতা বলেও দাবি করলেন। যদিও পুরো ঘটনাটিকে ‘নোংরা রাজনীতি’ বলে কটাক্ষ করেছেন বাঁকুড়ার তৃণমূল প্রার্থী অরূপ চক্রবর্তী।
বুধবার দুপুরে বাঁকুড়া শহরে মিছিল করে বিজেপির মহিলা মোর্চা। হাজার দুয়েক মহিলা যোগ দেন। তাদের কারও হাতে পোস্টার ‘আমরা নারীশক্তি, সাথে আছেন মোদীজি’, আবার কোথাও রাজ্য সরকারের লক্ষ্মীর ভান্ডার প্রকল্পকে কটাক্ষ করে ‘ভিক্ষের দান নয়, কাজ চাই, কারখানা চাই’ প্রভৃতি স্লোগান লেখা ছিল। মিছিলে প্রধান স্বেচ্ছাসেবক হিসেবে যোগ দেন বাঁকুড়া কেন্দ্রের বিজেপি প্রার্থী সুভাষ সরকার।
জেলার রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের একাংশের দাবি, সন্দেশখালির ঘটনায় মূল অভিযুক্ত তৃণমূল নেতা শেখ শাহজাহান গ্রেফতার হওয়ার পরে ধীরে ধীরে বিষয়টি নিয়ে চর্চা কমছিল। ভোটের মুখে সেই বিষয়টিকে ফের তুলে ধরে তৃণমূলের বিরুদ্ধে জনমত তৈরির চেষ্টা চালাচ্ছেন বিজেপি নেতৃত্ব।
সন্দেশখালির এক মহিলা নিজেকে নির্যাতিতা দাবি করে বলেন, ‘‘তৃণমূলের মিছিলে হাঁটতে মাঝরাতে আমাকে ডাকা হয়েছিল। যাইনি বলে আমার স্বামী, শ্বশুর, ছেলেকে মারধর করে শাহজাহান বাহিনী। ওদের অত্যাচার থেকে কেউ রেহাই পাননি।’’ আর এক মহিলার দাবি, ‘‘আমরা দশ বছর ধরে মুখ বন্ধ রেখে অত্যাচার সহ্য করেছি। এ বার আর নয়। দেশের প্রধানমন্ত্রী আমাদের পাশে দাঁড়িয়েছেন। আমরা তৃণমূল সরকারকে আর চাই না।’’
বাঁকুড়ায় কেন? ওই মহিলারা বলেন, ‘‘এই জেলায় যাতে কোনও মহিলাকে আমাদের মতো দিনের পর দিন অত্যাচারিত হতে না হয়, সেই বার্তা দিতে এসেছি। বাঁকুড়ার মানুষের সঙ্গে নিজেদের কষ্ট ভাগ করে নিতে চাই আমরা।’’
বিজেপির মহিলা মোর্চার বাঁকুড়া সাংগঠনিক জেলা সভানেত্রী ববিতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দাবি, ‘‘এখানকার তৃণমূল প্রার্থী সন্দেশখালির ঘটনাকে ‘সাজানো’ বলে দাবি করেছিলেন। আজ তাঁর শহরে এসেই সন্দেশখালির নির্যাতিতারা মিছিল করে জানালেন তাঁদের কষ্টের কথা। এ বার নিশ্চয় তৃণমূল প্রার্থী নিজের ভুল স্বীকার করবেন।’’
তৃণমূল প্রার্থী অরূপ বলেন, ‘‘ভোটের স্বার্থে বিজেপি আর কত নীচে নামবে? টাকা দিয়ে মহিলাদের এনে এখানে নাটক করাচ্ছেন বিজেপি প্রার্থী। বাঁকুড়া জেলার মহিলারা শিক্ষা থেকে শুরু করে নানা ক্ষেত্রে রাজ্যে প্রথম শ্রেণিতে থাকেন। এখানকার মানুষ এ সব নাটক মেনে নেবেন না।’’
বিজেপি প্রার্থী সুভাষের পাল্টা দাবি, ‘‘তৃণমূলের অত্যাচারের কথা যত ফাঁস হচ্ছে, লজ্জায় মুখ লুকোতে হচ্ছে ওদের নেতাদের। সন্দেশখালির নির্যাতিতাদের পায়ে ধরে ওদের ক্ষমা চাওয়া উচিত।’’
যদিও মহিলা তৃণমূলের বাঁকুড়া সাংগঠনিক জেলা সভানেত্রী বিশ্বরূপা সেনগুপ্তের কটাক্ষ, ‘‘বিজেপি-শাসিত উত্তরপ্রদেশ নারী নির্যাতনে দেশের শীর্ষে! রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মহিলাদের জন্য যে কাজ করেছেন তাতেই ভোটের আগে আত্মবিশ্বাস টলে গিয়েছে বিজেপি নেতাদের। তাই এ সব নাটক করা হচ্ছে।’’