—প্রতীকী চিত্র।
ভোটে বোমা-গুলির লড়াই আর ছাপ্পার দৌরাত্ম্য আরামবাগে বহু পুরনো। তবে, কেন্দ্রীয় বাহিনীর সক্রিয়তায় ২০১৯ সালের পরে এ বারও নিজের ভোট নিজে দিতে পেরে অনেক সাধারণ মানুষই খুশি।
বিক্ষিপ্ত কয়েকটি গোলমাল হয়নি, এমন নয়। তবে, তা ধর্তব্যে আনছেন না সাধারণ মানুষ। গত লোকসভা ভোটের পরে বিধানসভা নির্বাচন, পুরভোট, পঞ্চায়েত ভোট হয়েছে। শেষ তিন ভোটে সাধারণ মানুষের এমন স্বস্তি সে ভাবে চোখে পড়েনি। গোলমাল, অশান্তি নিয়ে অনেকেই ভীত-সন্ত্রস্ত ভাবেই বুথমুখী হয়েছিলেন। কিন্তু এ বার গোঘাটের বদনগঞ্জের বৃদ্ধ সুদর্শন প্রামাণিক বলেন, “এ রকমই ভোট হওয়া উচিত। বুথ চত্বর তো দূর, তার ২০০ মিটার জুড়ে কেন্দ্রীয় বাহিনী কাউকে ঘেঁষতে দেয়নি। নির্বাচন কমিশনকে ধন্যবাদ।”
একই রকম ভাবে কেন্দ্রীয় বাহিনীর প্রশংসা করেছেন খানাকুলের মদনবাটীর অবসরপ্রাপ্ত সরকারি কর্মী আশিসকুমার সামন্ত, খানাকুলের বন্দিপুরের স্কুল শিক্ষক ধর্মরাজ দোলুই, আরামবাগের সালেপুরের রঘুনাথ বাড়ুই প্রমুখ। যুবকদের মধ্যে গত দশ বছর ধরে ভোট দিচ্ছেন পুরশুড়ার চিলাডাঙ্গির শেখ ইসামাইল, খানাকুলের মদনপুরের সুমিত প্রামাণিকরা। তাঁদেরও বক্তব্য, এত শান্তিপূর্ণ ভোট আগে দেখেননি। শেখ ইসমাইল বলেন, “ভোটে হার-জিৎ আছে। কিন্তু সবাই চাই ভোটটা এ রকমই হোক।”
শান্তির ভোট নিয়ে চর্চা চললেও এ বার ভোটে কী হতে পারে, সেই প্রশ্নে যথারীতি কারওরই রা নেই। আরামবাগ, গোঘাট, পুরশুড়া, খানাকুলের বুথগুলিতে সকাল থেকে প্রায় সাড়ে ১২টা পর্যন্ত সর্বত্রই মহিলাদেরই বেশি ভিড় দেখা গিয়েছিল। কেন্দ্রীয় বাহিনীর প্রশংসা করেছেন বিরোধী দলের নেতারাও। বিজেপির আরামবাগ সাংগঠনিক জেলা সভাপতি বিমান ঘোষ বলেন, “খুব ভাল ভূমিকা ছিল কেন্দ্রীয় বাহিনীর।” সিপিএমের জেলা সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য পূর্ণেন্দু চট্টোপাধ্যায় বলেন, “খুব সক্রিয় ছিল কেন্দ্রীয় বাহিনী। কোনও অভিযোগ করলে সঙ্গে সঙ্গে ব্যবস্থাও নিয়েছে।”
তৃণমূলের একাংশ বাহিনীর সক্রিয়তায় অসন্তোষ প্রকাশ করলেও দলের আরামবাগ সাংগঠনিক জেলা সভাপতি রামেন্দু সিংহরায় বলেন, “কয়েক জায়গায় বিজেপি সন্ত্রাস করার চেষ্টা করলেও ভোট নির্বিঘ্নে হয়েছে। মানুষ শান্তিতে ভোট দিয়েছেন।” তাঁর অভিযোগ, বিজেপি খানাকুলে তাদের ২২টি বুথের এজেন্ট তুলে দেয়। রাতে খানাকুলে এবং আরামবাগে দলের কয়েক জনকে মারধর করছে। এজেন্ট তুলে দেওয়া এবং মারধরের অভিযোগ অস্বীকার করেছে বিজেপি।