হেলিকপ্টার দেখতে ভিড়। আমতার বাকসি ফুটবল মাঠে। ছবি: সুব্রত জানা।
দলের তরফে প্রায় ৫০ কর্মী-সমর্থককে হাজির করানোর লক্ষ্যমাত্রা নেওয়া হয়েছিল। তা না হলেও প্রবল গরম উপেক্ষা করে সোমবার আমতার বাকসিতে ওই সভায় তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের সভায় ভিড় জমল চোখে পড়ার মতোই।
উলুবেড়িয়া লোকসভা কেন্দ্রের দলীয় প্রার্থী সাজদা আহমেদের সমর্থনেই এ দিন জনসভা করতে আসেন অভিষেক। দলীয় কর্মী-সমর্থকদের জন্য গরম থেকে রেহাই দিতে মাঠে ছাউনির ব্যবস্থা করা হয়েছিল। অভিষেকের আসার কথা ছিল বেলা ৩টেয়। বেলা আড়াইটে পর্যন্ত মাঠ প্রায় ফাঁকা ছিল। কিন্তু মাঠ ভরে যায় সাড়ে তিনটের মধ্যেই। অভিষেক আসেন বিকেল চারটেয়।
আমতার বিধায়ক সুকান্ত পালের দাবি, প্রায় ৪০ হাজার মানুষ এসেছিলেন। তবে, পুলিশের হিসাবে, হাজার পঁচিশেক মানুষের জমায়েত হয়েছিল। ভিড় দেখে দৃশ্য্ত আপ্লুত অভিষেক বলেন, ‘‘প্রচণ্ড গরমে ৪২/৪৩ ডিগ্রি তাপমাত্রা উপেক্ষা করেও যে ভাবে ২৫-৩০ হাজার মানুষ এই সমাবেশে এসেছেন, তাঁরা আমাকে বা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে দেখে আসেননি। তাঁরা নিজেদের অধিকার আদায় করে নিতে এবং বিজেপিকে উচিত শিক্ষা দিতে এসেছেন।’’
জেলার ‘দ্বীপাঞ্চল’ বলে পরিচিত ভাটোরা ও ঘোড়াবেড়িয়া-চিৎনানের সাথে যোগাযোগের জন্য কুলিয়াতে সেতু, জেলায় বন্যা নিয়ন্ত্রণের কাজ-সহ উলুবেড়িয়া তথা হাওড়া জেলার উন্নয়নে তৃণমূল সরকার কী করেছে, তার ফিরিস্তি দেন অভিষেক। শোনান রাজ্য সরকারের বিভিন্ন প্রকল্পে এই জেলার কত মানুষ উপকৃত হচ্ছেন, তার সংখ্যাও। তোলেন সাজদা ও তাঁর স্বামী, প্রয়াত সাংসদ সুলতান আহমেদের আবেদনের কথাও।
তবে, বিজেপি প্রার্থী অরুণ উদয় পাল চৌধুরীর পাল্টা দাবি, ‘‘উলুবেড়িয়ায় কোনও উন্নয়ন হয়নি। উন্নয়ন হয়েছে বলে যা বলা হয়েছে, তা আসলে সরকারি টাকার নয়ছয় ও দুর্নীতি।’’
অভিষেকের সভায় মহিলাদের ভিড় ছিল দেখার মতো। ফলে, অভিষেকের কথায় ওঠে লক্ষ্মীর ভান্ডারের বরাদ্দ বৃদ্ধির কথাও। তিনি মহিলাদের উদ্দেশে বলেন, ‘‘নবজোয়ার কর্মসূচিতে মহিলাদের অনেকেই আমাকে জানিয়েছিলেন, ৫০০ টাকা তাঁদের পক্ষে যথেষ্ট নয়। আমি তখন মুখ্যমন্ত্রীকে জানাই, ওই টাকা বাড়িয়ে এক হাজার করার জন্য। তিনি মেনে নেন।’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘বিজেপি ক্ষমতায় এলে লক্ষীর ভান্ডার বন্ধ করে দেওয়ার হুমকি দিচ্ছে। আমি গ্যারান্টি দিচ্ছি, তৃণমূল যতদিন থাকবে, লক্ষ্মীর ভান্ডার বন্ধ হবে না।’’
মঞ্চে হাজির ছিলেন তৃণমূল প্রার্থী সাজদা আহমেদ, মন্ত্রী তথা উলুবেড়িয়া লোকসভা কেন্দ্রে তৃণমূলের নির্বাচন কমিটির সভাপতি পুলক রায়, বাগনানের বিধায়ক তথা গ্রামীণ জেলা তৃণমূল সভাপতি অরুণাভ সেন-সহ বিভিন্ন স্তরের নেতা এবং জনপ্রতিনিধিরা।
সিপিএম নেতা সাবিরুদ্দিন মোল্লার কটাক্ষ, ‘‘এটা লোকসভার ভোট। এখানে সাংসদের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন উঠবে। তৃণমূল সাংসদ গত পাঁচ বছরে এই এলাকার উন্নতিতে কী করেছেন, তা কিন্তু অভিষেককে বলতে শুনলাম না।’’