—প্রতীকী চিত্র।
গত লোকসভা ভোটে হুগলি কেন্দ্রে বিজেপি জিতলেও ধনেখালি ও চন্দননগর বিধানসভায় সামান্য এগিয়ে ছিল তৃণমূল। এ বার এই লোকসভা কেন্দ্রের সাতটি বিধানসভার মধ্যে ভোটদানের হার সবচেয়ে কম চন্দননগরে। ৭১ শতাংশের আশপাশে। কারণ নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলি পর্যালোচনা চালালেও তৃণমূলের দাবি, এখানে ৩০ হাজারের বেশি ভোটে তারাই এগিয়ে থাকবে। বিরোধীদের পাল্টা দাবি, সেটা সহজ হবে না।
চন্দননগরে ভোট পড়ার হার এ বারে সত্যিই কম বলে মানছেন মেয়র তথা তৃণমূলের বর্ষীয়ান নেতা রাম চক্রবর্তী। তিনি বলেন, ‘‘ভোট যতই কম পড়ুক, গত বিধানসভা নির্বাচনের থেকেও বেশি ভোটে আমরা লিড দেব।" ২০২১-এর বিধানসভা নির্বাচনে ৩০ হাজারের বেশি ভোটে চন্দননগরের বিজেপি প্রার্থী দীপাঞ্জন গুহকে ধরাশায়ী করেছিলেন রাজ্যের বর্তমান মন্ত্রী ইন্দ্রনীল সেন। যদিও, বিগত লোকসভায় বিজেপির থেকে তৃণমূল মাত্র ৩ হাজারের কাছাকাছি ভোটে এগিয়ে ছিল এখানে।
হুগলি জেলার তিন লোকসভা কেন্দ্রের মধ্যে মোট ভোটারের নিরিখে এই কেন্দ্রেই মহিলাদের সংখ্যা বেশি। মোট ভোটারের ৫০ শতাংশের বেশি মহিলা হওয়ায় এই কেন্দ্রে আগে থেকেই উজ্জীবিত ছিল তৃণমূল। প্রচার পর্বেও ‘লক্ষ্মীর ভান্ডার’কে প্রাধান্য দিয়েছে ঘাসফুল। নেতৃত্বের দাবি, দু’একটি বিধানসভায় গেরুয়ার সঙ্গে লড়াই হলেও বেশিরভাগ জায়গায় ওই প্রকল্পের দৌলতে উড়ে যাবে পদ্ম।
চন্দননগর হুগলি লোকসভার একমাত্র বিধানসভা, যেখানে কোনও পঞ্চায়েত নেই। চন্দননগর ও ভদ্রেশ্বর— দু'টি পুর এলাকা নিয়েই এই বিধানসভা। দু'টি পুরসভাতেই নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা তৃণমূলের। তা সত্ত্বেও বিজেপির দাবি, এ বার চন্দননগরের মানুষ তাদের পক্ষেই রায় দিয়েছেন। বিজেপির নির্বাচনী কমিটির আহ্বায়ক সুবীর নাগ বলেন, "চন্দননগরের মানুষ অনেক সচেতন। গত লোকসভায় আমাদের সাংগঠনিক কিছু দুর্বলতা ছিল, তাই হয়তো পিছিয়ে ছিলাম। কিন্তু এ বার আমরা শক্তিশালী। আমরাই এগিয়ে থাকব।’’
জেলা বিজেপি সূত্রে খবর, এ বারের ভোটে বলাগড় ও সপ্তগ্রাম বিধানসভাকে মূলত ‘পাখির চোখ’ করা হয়েছিল। গত লোকসভায় এই দু'টি বিধানসভা মিলিয়েই ৫০ হাজারের বেশি ভোটে এগিয়ে ছিলেন বিদায়ী সাংসদ তথা এ বারেরও দলীয় প্রার্থী লকেট চট্টোপাধ্যায়। পান্ডুয়া, চুঁচুড়া ও সিঙ্গুর মিলিয়ে সেই
‘লিড’ ৭৩ হাজারের কিছু বেশি সংখ্যায় গিয়ে থামে।
যে ক’টি বিধানসভায় সিপিএম লড়াই দেবে বলে মনে করছে, তার মধ্যে অন্যতম চন্দননগর। স্থানীয় সিপিএম নেতৃত্বের দাবি, ফল যা-ই হোক, চন্দননগরে তাঁরা ভাল
ভোট টানবেন।
এই কেন্দ্রে মোট ১২ জন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করলেও মূলত ত্রিমুখী লড়াই। ময়দানে সিপিএমের মনোদীপ ঘোষ, বিজেপির লকেট এবং তৃণমূলের রচনা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিন পক্ষই ভোট শতাংশের উপর পর্যালোচনা শুরু করেছে। চলতি বছর ভোট পড়েছে ৮১.৩৮ শতাংশ। গত লোকসভা নির্বাচনের যা সামান্য কম। গতবার ভোট পড়েছিল ৮২.৫২%।