লড়াইটা ছিল কঠিন। ‘ঘুষের বিনিময়ে প্রশ্ন’ বতর্কের জেরে সংসদ থেকে বহিষ্কারের পরে মহুয়া মৈত্রকে তাঁর নিজের কেন্দ্রে পরাজিত করা যে তাঁদের কাছে ‘মর্যাদার লড়াই’ তা বিজেপি নেতৃত্ব কার্যত স্পষ্ট করে দিয়েছিলেন।
গোটা রাজ্যে কৃষ্ণনগরই সম্ভবত একমাত্র কেন্দ্র যেখানে নরেন্দ্র মোদী দু’বার জনসভা করে গিয়েছেন। রোড-শো করেছেন অমিত শাহ। কৃষ্ণচন্দ্র-আবেগ কাজে লাগাতে রাজপরিবারের সদস্য অমৃতা রায়কে প্রার্থী করা হয়েছিল। তার উপর মহুয়ার প্রতি দলের একটা বড় অংশের ক্ষোভ এবং অন্তর্ঘাতের আশঙ্কা তো ছিলই। কিন্তু শেষ হাসি হাসলেন মহুয়াই। জয়ের ব্যবধান সামান্য কমলেও জয় হাসিল করলেন তিনিই।
রাজনৈতিক মহলের একাংশের ধারণা ছিল, সংখ্যালঘু ভোট কেটে তৃণমূলকে বিপাকে ফেলে দিতে পারে সিপিএম। কিন্তু কার্যক্ষেত্রে তা তেমনটা হয়নি। যদি সংখ্যালঘু ভোট তৃণমূলের থেকে বাম-কংগ্রেসের দিকে গিয়েও থাকে তা এক শতাংশের বেশি নয়। যার জেরে মহুয়ার প্রাপ্ত ভোট ৪৫ শতাংশ ৪৪ শতাংশের কাছাকাছি নেমে এসেছে। বিজেপিও তাদের আগের ভোটই ধরে রেখেছে।
ভোটের দিন শেষবেলায় মহুয়াকে যে রকম ফুরফুরে মেজাজে দেখা গিয়েছিল, এ দিনও দিনভর তেমনই আত্মবিশ্বাসী দেখিয়েছে। একেবারে গোড়ায় অমৃতা এগিয়ে গেলেও খানিক বাদেই তাঁকে টপকে মহুয়া যে এগোতে শুরু করেন আর পিছন ফিরে তাকাননি। পাঁচ-ছয় রাউন্ড গণনার পরেই জয় একপ্রকার নিশ্চিত বুঝে এক দলীয় কর্মীর সাইকেলের পিছনে চেপে তিনি সমর্থকদের জমায়েতের দিকে চলে যান। সেখানে ততক্ষণে সবুজ আবির খেলা আর বাজি পোড়ানো শুরু হয়ে গিয়েছে।