Lok Sabha Election 2024

হারানো ভোট ফেরার আশা বামেদের, চিন্তা পদ্ম-শিবিরে

রাজনৈতিক মহলের মতে, ২০১৯-এ সিপিএমের ভোট বিজেপিকে ‘পুষ্ট’ করে। নিজেদের পরাজয় সুনিশ্চিত ধরে নিয়ে সিপিএমকে ২০১৯ সালে নির্বাচনে খুব একটা গা লাগাতেও দেখা যায়নি।

Advertisement

অর্ঘ্য ঘোষ

ময়ূরেশ্বর শেষ আপডেট: ০৪ জুন ২০২৪ ০৫:৩৫
Share:

—প্রতীকী চিত্র।

নির্বাচনের ফল ঘোষণা শুরু হয়ে গিয়েছে। প্রকাশ্যে জয়ের ব্যাপারে আশাবাদী সব দল। কিন্তু এর আগে প্রত্যেক দলের অভ্যন্তরে চলছে চুলচেরা বিশ্লেষণ। ২০১৯ সালের নির্বাচনী ফলাফলকে সূচক ধরে কেউ উল্লসিত, কেউ বা আশঙ্কিত। কারণ, ওই নির্বাচনে প্রধান বিরোধী দল হিসেবে উঠে আসে বিজেপি।

Advertisement

এক সময় বোলপুর লোকসভা কেন্দ্রটি বামেদের ‘দুর্গ’ বলে পরিচিত ছিল। ২০১৪ সালে ওই কেন্দ্রে চর্তুমুখী প্রতিদ্বন্দ্বীতায় তৃণমূলের অনুপম হাজরা সিপিএমের রামচন্দ্র ডোমকে ২,৩৬,১০৯ ভোটের ব্যবধানে হারান। অনুপম এবং রামচন্দ্র যথাক্রমে ৬,৩০,৬৯৩ এবং ৩,৯৪, ৫৮৪ টি ভোট পেয়েছিলেন। বিজেপির কামিনীমোহন সরকার এবং কংগ্রেসের তপনকুমার সাহার প্রাপ্ত ভোট ছিল যথাক্রমে ১, ৯৭,৪৭৪ এবং ৪৬,৯৫৩।

২০১৯ সালের নির্বাচনে সিপিএমকে পিছনে ফেলে দ্বিতীয় স্থানে উঠে আসে বিজেপি। ওই নির্বাচনে তৃণমূলের অসিত মাল ৬, ৯৯, ১৭২ এবং নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী বিজেপির রামপ্রসাদ দাস ৫,৯২,৭৬৯টি ভোট পান। সিপিএমের রামচন্দ্র ডোম ৯১,৯৬৪ এবং কংগ্রেসের অভিজিৎ সাহা ৩০,১১২টি ভোট পান। পাঁচ বছরের ব্যবধানে বিজেপির ভোট বেড়ে দাঁড়ায় ৩,৯৫,২৯৫। অন্য দিকে, সিপিএমের ৩ লক্ষ ২ হাজার ৬২০টি ভোট কমে যায়।

Advertisement

রাজনৈতিক মহলের মতে, ২০১৯-এ সিপিএমের ভোট বিজেপিকে ‘পুষ্ট’ করে। নিজেদের পরাজয় সুনিশ্চিত ধরে নিয়ে সিপিএমকে ২০১৯ সালে নির্বাচনে খুব একটা গা লাগাতেও দেখা যায়নি। বরং রাজনৈতিক মহল সূত্রে খবর, ‘শত্রুর শত্রু আমার মিত্র’ এই নীতিতে নিজেদের ভোটের একটা বড় অংশ পরোক্ষে বিজেপিকে উপহার দিয়েছিল তারা।

বামের ভোটে ‘পুষ্ট’ হয়ে বিজেপি দ্বিতীয় স্থানে উঠে এলেও পরের বিধানসভা এবং পঞ্চায়েত নির্বাচনে বামেরা কার্যত ‘গুরুত্বহীন’ হয়ে পড়ে। এ বারে তাই ‘লড়াকু’ নেত্রী নানুরের প্রাক্তন বিধায়ক শ্যামলী প্রধানকে প্রার্থী করেছিল দল। কংগ্রেসকেও পাশে পেয়েছে। তাই হারানো ভোট ফিরে পাওয়ার ব্যাপারে আশাবাদী তারা। অন্য দিকে, ভোটে ধস নামার ‘আশঙ্কা’ বিজেপির অন্দরে।

সিপিএমের জেলা সম্পাদক গৌতম ঘোষ বলেন, ‘‘প্রান্তিক স্তরের ভোটারেরা এক সময় আমাদের প্রতি ভরসা হারিয়ে এক বার তৃণমূল এবং এক বার বিজেপিকে ভোট নিয়ে তাদের স্বরূপ বুঝে নিয়েছে। তাই এ বারে তাঁরা আমাদের উপরে ফের আস্থা রাখবেন বলেই বিশ্বাস। ফল, ঘোষণা হলেই তা প্রমাণ হয়ে যাবে।’’ অন্য দিকে, বিজেপির সাংগঠনিক জেলা সভাপতি (বোলপুর) সন্ন্যাসীচরণ মণ্ডল বলেন, ‘‘যে যাই অঙ্ক কসবে কসুক। ভোট বাড়িয়ে আমরা জয়ের পথে এগিয়ে যাব।’’

এ বার অনুব্রত মণ্ডলকে ছাড়াই ভোটে লড়ছে তৃণমূল। ভাল ফলের ব্যাপারে আত্মবিশ্বাসী তারা। দলের জেলা কোর কমিটির আহ্বায়ক বিকাশ রায়চৌধুরী বলেন, ‘‘বিজেপির ধর্মীয় রাজনীতি আর ভাঁওতাবাজিতে ভুলে কিছু মানুষ ওদের ভোট দিয়েছিলেন। তাঁদের ভুল ভেঙেছে। রাজ্য সরকারের বহুমুখী উন্নয়নের জন্য এ বারে তাঁরা ব্যবধান বাড়িয়ে আমাদের পক্ষে রায় দেবেন।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement