Lok Sabha Election 2024

আজহারের প্রচারে কংগ্রেস কর্মীরা কই!

জেলা স্তরের কংগ্রেস নেতাদের একটা বড় অংশ স্বীকার করেছেন, প্রার্থীকে নিয়ে তাঁদের সমস্যা আছে। তাঁদের বক্তব্য, কংগ্রেস প্রার্থী যুব কংগ্রেসের সভাপতি।

Advertisement

নুরুল আবসার

উলুবেড়িয়া শেষ আপডেট: ০৫ মে ২০২৪ ০৯:৫০
Share:

উলুবেড়িয়া লোকসভা কেন্দ্রের কংগ্রেস প্রার্থী আজহার মল্লিকের প্রচারের সঙ্গী সিপিএম কর্মীরা। নিজস্ব চিত্র।

ভোটের দিন এগিয়ে আসছে। অথচ, উলুবেড়িয়া লোকসভা কেন্দ্রের দলীয় প্রার্থী আজহার মল্লিকের প্রচারে এখনও সে ভাবে দেখাই মিলছে না স্থানীয় কংগ্রেস নেতা-কর্মীদের। তাঁর প্রচারে দলে ভারী জোটসঙ্গী সিপিএম কর্মী-সমর্থকেরাই। তাঁরাই পথসভা-সহ প্রচারের বিভিন্ন কর্মসূচির পরিকল্পনা এবং রূপায়ণের দায়িত্ব নিজেদের ঘাড়ে তুলে নিয়েছেন।

Advertisement

কংগ্রেসকে সমর্থন না করার নীতিতে না হয় হাত গুটিয়ে বসে আছে অন্যতম বাম শরিক ফরওয়ার্ড ব্লক। কিন্তু কংগ্রেসের স্থানীয় কর্মী-সমর্থকদের হল কী?

জেলা স্তরের কংগ্রেস নেতাদের একটা বড় অংশ স্বীকার করেছেন, প্রার্থীকে নিয়ে তাঁদের সমস্যা আছে। তাঁদের বক্তব্য, কংগ্রেস প্রার্থী যুব কংগ্রেসের সভাপতি। তাই তিনি জেলায় যুব কংগ্রেসের পরিকাঠামো নিয়ে চলতে চাইছেন। প্রবীণ ও অভিজ্ঞ নেতাদের তিনি পাত্তা দিচ্ছেন না বলে অভিযোগ। সেটাই হয়েছে সমস্যা। সামগ্রিক ভাবে জেলা কংগ্রেসের তরফে কোনও পরিকল্পনা যে এখনও নেই, তা দলের নেতাদের একটা অংশ স্বীকার করেছেন। তাঁদের বক্তব্য, সবটাই সিপিএমের হাতে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। আজহারের প্রচারে বিচ্ছিন্ন ভাবে দেখা যাচ্ছে প্রদেশ কংগ্রেসের অন্যতম সম্পাদক অলোক কোলে, আমতার প্রাক্তন বিধায়ক অসিত মিত্র, শ্যামপুরের আতিয়ার রহমান খানদের।

Advertisement

আজহার প্রার্থী হওয়ায় দলের একাংশের মধ্যে ক্ষোভও দেখা দিয়েছে বলে কংগ্রেস সূত্রের খবর। ‘বিক্ষুব্ধেরা’ প্রদেশ কংগ্রেস অফিসে গিয়ে সে কথা জানিয়েও এসেছেন বলে দলীয় সূত্রের খবর। জেলা কংগ্রেস সভাপতি পলাশ ভান্ডারী বলেন, ‘‘প্রার্থী বহিরাগত। তাঁরই উচিত ছিল অগ্রণী হয়ে সকলের সঙ্গে যোগাযোগ করার। সেটা হয়নি। তার ফলেই ভুল বোঝাবুঝির অবকাশ তৈরি হয়েছে।’’ একইসঙ্গে অবশ্য পলাশ বলেন, ‘‘দু’এক দিনের মধ্যেই আমরা পূর্ণ শক্তি নিয়ে মাঠে নামব।’’

আজহার দাবি করেন, ‘‘আমি দলে সকলের সঙ্গে কথা বলেছি। অনেকে আমার সঙ্গে আছেন। বাকিরাও
পথে নামবেন। আমরা সর্বশক্তি দিয়ে লড়াই করব।’’

উলুবেড়িয়ার পানপুর মোড়ে বাড়ি ভাড়া নিয়ে আছেন আজহার। তাঁর কর্মসূচি শুরু হয়ে যাচ্ছে সকাল আটটা থেকে। তাঁকে বাড়ি থেকে খুব সকালে নিয়ে যাচ্ছেন সিপিএম নেতা-কর্মীরা। গত শুক্রবার এআইসিসি-র প্রতিনিধি অংশুমান সেল প্রার্থীকে নিয়ে উলুবেড়িয়া প্রেস ক্লাবে সাংবাদিক সম্মেলন করেন। সেখানে স্থানীয় কোনও কংগ্রেস নেতাকে দেখা যায়নি। প্রদেশ কংগ্রেসের দু’এক জন প্রতিনিধি অবশ্য ছিলেন। আর ছিলেন সিপিএমের স্থানীয় নেতারা।

সিপিএমের জেলা সম্পাদক দিলীপ ঘোষ স্বীকার করেন, কংগ্রেসের তরফে সামঞ্জস্যের একটা অভাব আছে। তিনি বলেন, ‘‘কংগ্রেস তাদের প্রার্থী ঘোষণা করার পরেই আমরা সিপিএমের তরফে উলুবেড়িয়ায় জরুরি বৈঠকে বসি। যে হেতু তিনি জোটপ্রার্থী, তাই আমাদের দলের তরফে সিদ্ধান্ত নিই লড়াইয়ে তৃণমূল-বিজেপিকে এক ইঞ্চি জায়গা দেওয়া হবে না। সেই মতো পরিকল্পনা করেছি। কিন্তু কোথাও যেন কংগ্রেসের তরফে একটা ফাঁক লক্ষ্য করা যাচ্ছে। প্রার্থী পাওয়ায় তাদের যে স্বতঃস্ফূর্ততা থাকা উচিত ছিল তার একটু অভাব দেখছি।’’ একইসঙ্গে তাঁর দাবি, ‘‘ওদের মনে হয় গুছিয়ে নিতে একটু সময় লাগছে। নিশ্চয় ওঁরা পুরোদমে ঝাঁপাবেন।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement