বোলপুর সাংগঠনিক জেলার সভাপতি সন্ন্যাসীচরণ মণ্ডলের সঙ্গে বাকবিতন্ডা দলীয় কর্মীদের। বোলপুরে বিজেপির কার্যালয়ে। নিজস্ব চিত্র।
ভোট পর্ব শেষ হতে না হতেই ফের প্রকাশ্যে এল বিজেপির দলীয় কোন্দল। এ বার বোলপুর কেন্দ্রের বিজেপি প্রার্থী পিয়া সাহা এবং বিজেপি সাংগঠনিক জেলা সভাপতি সন্ন্যাসীচরণ মণ্ডলের বিরুদ্ধে আর্থিক তছরুপের অভিযোগ তুলে ক্ষোভ উগরে দিলেন দলের কর্মীদের একাংশ। রবিবার দুপুরে ঘটনাটি ঘটে বোলপুর রামকৃষ্ণ রোড এলাকায় থাকা বিজেপির অস্থায়ী দলীয় কার্যালয়ে। যদিও অভিযোগ অস্বীকার করেছেন বিজেপি নেতৃত্ব। তবে এ নিয়ে কটাক্ষ করতে ছাড়েনি তৃণমূল।
দলীয় সূত্রে খবর, ১৩ মে ভোট মেটার পরে জেলার কয়েকটি জায়গায় রাজনৈতিক অশান্তি হয়। কোথাও বিজেপি এজেন্টকে মারধর, কোথাও বিজেপি এজেন্টের বাড়ি পুড়িয়ে দেওয়ার অভিযোগ সামনে এসেছে। কিন্তু দলের একটি বড় অংশের নেতাদের আক্রান্তদের পাশে থাকতে দেখা যায়নি বলে কর্মীদের অভিযোগ। এমনকি, কয়েক দিন আগে জেলা বিজেপির হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপে এজেন্টদের একাংশকে ও প্রচারের খরচের টাকা দেওয়া হয়নি বলে অভিযোগ তোলেন কর্মীদের একাংশ।
বিজেপি সূত্রের খবর, এই সমস্ত বিষয় এবং ৪ জুন কী ভাবে দলীয় কর্মীরা ভোট গণনার এজেন্ট হিসেবে কাজ করবে এ নিয়ে এ দিন বিজেপির বোলপুর সাংগঠনিক জেলা নেতৃত্ব একটি আলোচনা সভা ডাকেন। সেখানে উপস্থিত ছিলেন সাংগঠনিক জেলা সভাপতি সন্ন্যাসীচরণ মণ্ডল, বিজেপি প্রার্থী পিয়া সাহা, বিভিন্ন মণ্ডল সভাপতি ও জেলার কার্যকর্তারা। সেই বৈঠক শেষ হতে না হতেই জেলা নেতৃত্বে বিরুদ্ধে আর্থিক তছরুপের অভিযোগ তুলে কার্যালয়ের ভিতরে ঢুকে জেলা নেতৃত্বের সামনে ক্ষোভ প্রকাশ করতে থাকেন দলের কর্মী, সমর্থকদের একাংশ। জেলা সভাপতি এবং প্রার্থীর সঙ্গেও শুরু হয় তাঁদের বাকবিতন্ডা। যার মধ্যে ছিলেন এ বার নির্বাচনে বিজেপি এজেন্ট শম্ভু বারুইও। এর পরে তাঁদের কার্যালয় থেকে বের করে দেওয়া হয় বলে অভিযোগ।
শম্ভু বলেন, ‘‘বিজেপির এজেন্ট ছিলাম বলে ঘর পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। কোনও সাহায্য মেলেনি। এই ঘটনার পর থেকে বিজেপির অনেক নেতা আমার ফোন ধরা বন্ধ করে দিয়েছেন। চার জুনের পরে প্রার্থীকে কর্মীরা পাশে পাবেন কি না তা নিয়েও সংশয় দেখা দিয়েছে।” আর এক কর্মী ধর্মেন্দ্র রজক বলেন, “ভোটে প্রতিটা বুথে টাকা এসেছে। অথচ বহু কর্মী ভোটের খরচের টাকা পাননি। সেই সমস্ত টাকা আত্মসাৎ করে নেওয়া হয়েছে। এরই প্রতিবাদ জানিয়েছি।”
যদিও সমস্ত অভিযোগ অস্বীকার করেছেন জেলা সভাপতি সন্ন্যাসীচরণ মণ্ডল তিনি বলেন, “যাঁরা অভিযোগ করছেন তাঁরা বিজেপির কেউ নন। আর এই ধরনের কোনও ঘটনা বোলপুর সাংগঠনিক জেলায় ঘটেনি। কৃত্রিম ভাবে তৈরি করা হচ্ছে।”
এ নিয়ে কটাক্ষ করতে ছাড়েনি তৃণমূল। তৃণমূলের জেলা সহ সভাপতি মলয় মুখোপাধ্যায় বলেন, “জেলায় বিজেপির অস্তিত্ব নেই বললেই চলে। এরই মধ্যে ভোট শেষ হতে না হতে বিভিন্ন জায়গায় তাদের গোষ্ঠী-কোন্দল মাথা চারা দিয়ে উঠতে শুরু করেছে। ফল বেরনোর পরে তা আরও বাড়বে বলে আমাদের ধারণা।”