স্ট্রং রুমে সিসিটিভি। বৃহস্পতিবার রানাঘাট কলেজে। বি: সুদেব দাস
রানাঘাট কলেজে স্ট্রং রুমে পাঁচটি ক্লোজ় সার্কিট ক্যামেরা কিছু সময়ের জন্য বন্ধ রেখে বিজেপি প্রার্থী জগন্নাথ সরকার সেখানে ঢুকেছিলেন বলে তৃণমূলের অভিযোগ। বিজেপির পাল্টা অভিযোগ, তৃণমূল প্রার্থী মুকুটমণি অধিকারী দলবল নিয়ে গভীর রাতে স্ট্রং রুমে গিয়েছিলেন। দুই তরফেই নির্বাচন কমিশনের কাছে নালিশ জানানো হয়েছে। যদিও কমিশনের দাবি, সমস্ত কিছু নিয়ম মেনেই হয়েছে।
রানাঘাট কলেজের পৃথক দু’টি ভবনের একটিতে রানাঘাট উত্তর-পূর্ব এবং অপরটিতে রানাঘাট দক্ষিণ বিধানসভা কেন্দ্রের জন্য স্ট্রং রুম করা হয়েছে। ত্রিস্তরীয় নিরাপত্তা বলয়ে মুড়ে ফেলা হয়েছে কলেজ চত্বর। প্রায় আড়াইশো ক্লোজ় সার্কিট ক্যামেরায় চলছে কলেজের অন্দরমহলের নজরদারি। এ ছাড়া স্ট্রং রুমের বাইরে ২৪ ঘণ্টা অতন্দ্র প্রহরায় রয়েছেন কেন্দ্রীয় বাহিনীর জওয়ানেরা।
বুধবার রাত সাড়ে ৯টা নাগাদ রানাঘাট লোকসভা কেন্দ্রের তৃণমূল প্রার্থী মুকুটমণি ও বিজেপি প্রার্থী জগন্নাথ দু’জনেই স্ট্রং রুমের নজরদারি ঠিক মতো হচ্ছে কি না, তা দেখতে কলেজে যান। মুকুটমণির অভিযোগ, "স্ট্রং রুম বাইরে থেকে দেখার অধিকার থাকলেও আমাকে তা দেখতে দেওয়া হয়নি। সেই সময় ম্যাজিস্ট্রেট বা সমতুল্য পদমর্যাদার অফিসার থাকার কথা থাকলেও, কেউ ছিলেন না সেখানে।'' তিনি আরও বলেন, "বাধার মুখে পড়ে আমি ফিরে আসি। কিছু সময় পর খবর পাই, বিজেপি প্রার্থীকে স্ট্রং রুম পরিদর্শনের অনুমতি দেওয়া হয়েছে।" সেই খবর পেয়েই ফের কলেজে আসেন মুকুটমণি। তাঁর দাবি, "যে সময় বিজেপি প্রার্থী ঢোকেন, তখন পাঁচটি ক্লোজ় সার্কিট ক্যামেরা কাজ করছিল না।"
জগন্নাথের পাল্টা দাবি , "সন্ধ্যা সাড়ে ৬টা থেকে ঘন্টার পর ঘন্টা আমি স্ট্রং রুমের বাইরে অপেক্ষা করেছি। অথচ আমাকে ঢুকতে দেওয়া হয়নি। ‘হাইকোর্টে মামলা করব’ বলার পরেই আমাকে ঢুকতে দেওয়া হয়। কিন্তু আমি ঢুকতেই পুলিশ খবর দিয়ে তৃণমূল প্রার্থীকে ডেকে নিয়ে আসে।” তাঁর আরও দাবি, “আমি চলে আসার পর গভীর রাতে দলবল নিয়ে মুকুটমণি পুলিশের সাহায্যে সেখানে গিয়েছিল। বিষয়টি খুবই সন্দেহজনক মনে হচ্ছে।"
রানাঘাট লোকসভা কেন্দ্রের রিটার্নিং অফিসার তথা নদিয়ার অতিরিক্ত জেলাশাসক (ভূমি ও ভূমি সংস্কার) প্রলয় রায়চৌধুরী বলেন, "কমিশনের নির্দেশ মতোই সমস্ত কিছু হয়েছে। বিভিন্ন দলের প্রার্থীরা যাতে স্ট্রং রুমের নিরাপত্তা দেখতে পারেন, সে জন্য বৃহস্পতিবার তাঁদের সঙ্গে নিয়ে বৈঠক করে পরিদর্শনের জন্য সময় নির্দিষ্ট করে দেওয়া হয়েছে।" নদিয়ার জেলাশাসক এস অরুণ প্রসাদ বলেন, "স্ট্রং রুমের বাইরে ২৪ ঘণ্টায় ম্যাজিস্ট্রেট পদমর্যাদার কোনও অফিসারকে থাকতে হবে, এমন কোনও উল্লেখ কমিশনের নির্দেশিকায় নেই। সব কিছু কমিশনের নিয়ম অনুযায়ী করা হয়েছে।"