আইএসএফ প্রার্থী মেঘনাথ হালদারের নির্বাচনী প্রচারের এই গাড়িতে ভাঙচুর চলে বলে অভিযোগ। নিজস্ব চিত্র ।
পঞ্চায়েত ভোটের আগে-পরে আইএসএফ-তৃণমূল সংঘর্ষে বার বার উত্তপ্ত হয়েছে ভাঙড় ও সংলগ্ন এলাকা। লোকসভা ভোটের প্রাক্কালেও দু’দলের গোলমালে তেতে উঠছে এলাকা। মঙ্গলবার সন্ধ্যায় গোলমাল বাধে ভাঙড়ের বেঁওতা অঞ্চলে। বুধবার ভোগালি, চন্দনেশ্বরে গোলমাল হয়। চন্দনেশ্বরে আইএসফ প্রার্থীর গাড়িতে হামলার অভিযোগ উঠেছে তৃণমূলের বিরুদ্ধে।
চন্দনেশ্বরে এ দিন প্রার্থীর প্রচার গাড়িতে হামলার অভিযোগ ঘিরে দু’পক্ষের মধ্যে মারামারি বেধে যায়। পুলিশ বাধা দিতে গেলে বেশ কয়েক জন পুলিশ কর্মীও জখম হন বলে অভিযোগ। পুলিশ জানিয়েছে, উভয়পক্ষের অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত শুরু হয়েছে। কাউকে গ্রেফতার করা যায়নি।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রের খবর, জয়নগর লোকসভা কেন্দ্রের আইএসএফ প্রার্থী মেঘনাথ হালদার এ দিন ভাঙড়ের চন্দনেশ্বর ২ অঞ্চলের মাধবপুর এলাকা থেকে গাড়িতে করে প্রচার শুরু করেন। তাঁর সঙ্গে ছিলেন দলের জয়নগর লোকসভা কেন্দ্রের পর্যবেক্ষক গাজি শাহাবুদ্দিন সিরাজি। প্রচার গাড়ি ঝিঁঝেরাইট এলাকায় পৌঁছলে গাড়ি লক্ষ্য করে ইট-পাটকেল ছোড়া হয় বলে অভিযোগ। গাড়ির কাচ ভেঙে যায়। মেঘনাথ এবং শাহাবুদ্দিনকে জোর করে গাড়ি থেকে নামানোর চেষ্টা করা হয় বলেও অভিযোগ। প্রার্থী ও তাঁর সঙ্গী অল্পবিস্তর জখম হন বলে দাবি আইএসএফের।
তৃণমূলের দাবি, নির্বাচনী প্রচারের নামে আইএসএফ বিভিন্ন ধরনের প্ররোচনামূলক কথা বলছিল। তৃণমূল কর্মীরা প্রতিবাদ করলে উভয়পক্ষের মধ্যে গোলমাল বাধে। পুলিশ লাঠি চালিয়ে উভয়পক্ষকে হটিয়ে দেয়। এই ঘটনায় বেশ কয়েক জন তৃণমূল কর্মীও জখম হন বলে দাবি দলের নেতাদের।
মেঘনাথ বলেন, “আমরা যখন ওই এলাকায় নির্বাচনী প্রচারে যাই, সে সময়ে তৃণমূল অতর্কিতে আমাদের উপরে হামলা চালায়। গাড়ির কাচ ভেঙে দেয়। গালিগালাজ করে। আমার সঙ্গী শাহাবুদ্দিনকে টানা-হেঁচড়া করে জামা ছিঁড়ে দেয়। আমরা প্রশাসনকে জানিয়েছি প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য।”
অভিযোগ উড়িয়ে দিয়ে ক্যানিং পূর্বের বিধায়ক তথা ভাঙড়ের তৃণমূল পর্যবেক্ষক সওকাত মোল্লা বলেন, “ওরা মিথ্যা অভিযোগ করছে। আসলে এ দিন ওই এলাকায় গ্রামের মহিলারা আইএসএফের লোকজনকে জিজ্ঞাসা করেছিলেন, এত দিন কোথায় ছিলেন। তা নিয়ে সাধারণ মানুষের সঙ্গে ওদের ঝামেলা হয়। পুলিশ সামাল দিতে গেলে পুলিশও জখম হয়েছে। এই ঘটনার সঙ্গে আমাদের কোনও সম্পর্ক নেই।”
এ দিন ভোগালি ১ অঞ্চলে আইএসএফ-তৃণমূলের মারামারিতে জখম হন উভয় পক্ষের বেশ কয়েক জন। অভিযোগ, দুই তৃণমূল কর্মী বাড়ি ফেরার সময়ে তাঁদের গালাগালি করেন আইএসএফ কর্মীরা। উভয় পক্ষের মারপিট বেধে যায়।
মঙ্গলবার সন্ধ্যায় বেঁওতা ১, ২ অঞ্চলে যাদবপুরের আইএসএফ প্রার্থী নুর আলম খানের নির্বাচনী প্রচার ছিল। অভিযোগ, ফেরার পথে আইএসএফ কর্মীদের কটূক্তি করে তৃণমূলের লোকজন। আইএসএফ কর্মীরা প্রতিবাদ করলে মারামারি বাধে। তৃণমূলের দাবি, তাদের পঞ্চায়েত সদস্যের উপরে চড়াও হয়ে মারধর করেছে আইএসএফ। আইএসএফ অভিযোগ মানেনি। উভয় পক্ষের কয়েক জন জখম হন। পুলিশ জানিয়েছে, দু’পক্ষের অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত শুরু হয়েছে।