পাঁশকুড়ার দক্ষিণ কাটাল গ্রামে বিজেপি প্রার্থী হিরণ। নিজস্ব চিত্র।
সাংসদ হিসাবে পাঁশকুড়ায় দেবের দীর্ঘ অদর্শন ও অনুপস্থিতি নিয়ে এমনিতেই ক্ষোভ ছিল যথেষ্ট। যা নিয়ে কটাক্ষ করে গত বৃহস্পতিবার পাঁশকুড়ায় ভোট প্রচারে এসে প্রতিপক্ষ তারকা প্রার্থী বিজেপির হিরণ গানের সুরে বলেছিলেন, 'তোমার দেখা নাই রে, তোমার দেখা নাই!’
অভিযোগকারীদের আরও বেশি সমালোচনার সুযোগ করে দিয়ে বুধবার বৃষ্টির কারণ দেখিয়ে পশ্চিম মেদিনীপুরে একাধিক নির্বাচনী কর্মসূচি বাতিল করলেন দেব। অথচ, প্রাকৃতিক দুর্যোগকে উপেক্ষা করে পাঁশকুড়ায় দিনভর ভোটের প্রচার সারলেন ঘাটাল লোকসভা কেন্দ্রের বিজেপি প্রার্থী অভিনেতা হিরণ চট্টোপাধ্যায়।
মঙ্গলবার রাত থেকে শুরু হয়েছে বৃষ্টি। তার মধ্যেই এ দিন দুপুর ১২ টা নাগাদ হিরণ পৌঁছে যান প্রচারে। প্রথমে যান ঘোষপুর গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার এরাপুরে রামানন্দ গোস্বামীর মন্দিরে। সেখানে প্রচুর মানুষ এসেছিলেন। মন্দিরে পুজো দেওয়ার পাশাপাশি মন্দির সংলগ্ন এলাকায় জনসংযোগ সারেন হিরণ। এর পর যান পাঁশকুড়ার ঘোষপুর এলাকার দক্ষিণ কাটাল গ্রামে। সেখানে বিশ্বজিৎ জানা নামে বিজেপির এক পঞ্চায়েত সদস্যের বাড়িতে মধ্যাহ্নভোজ সারেন। তাঁর সঙ্গে ছিলেন বিজেপি নেতা সিন্টু সেনাপতি, তরুণ ভট্টাচার্য, শঙ্কর প্রসাদ সামন্ত, সুকুমার ভুঁইয়া প্রমুখ।
গ্রামে হিরণ এসেছে শুনে বৃষ্টির মধ্যেও দক্ষিণ কাটাল এবং উত্তর কাটাল গ্রামে মানুষের ঢল নামে। কংসাবতী নদী বাঁধের রাস্তা, গ্রামের ভিতরের সব রাস্তায় ভিড় জমে যায়। মধ্যাহ্নভোজ সেরে হিরণ উত্তর কাটাল ও দক্ষিণ কাটাল গ্রামে জনসংযোগ সারেন। এরপর যান পাঁশকুড়া ১ গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার নস্করদিঘি গ্রামে। সেখানেও প্রচুর মানুষের জমায়েত ছিল। উত্তর মেচগ্রাম দোলই পাড়ায় একটি কালীমন্দিরে পুজো দেওয়ার পাশাপাশি এলাকার মানুষজনের সুবিধা-অসুবিধার খোঁজ নেন, তার পর যান পাঁশকুড়া শহরের ৬ নম্বর ওয়ার্ডে ভবতারিণী কালী মন্দিরে। সেখানেও হিরণ পুজো দেন। তবে বৃষ্টির কারণে পাঁশকুড়ায় হিরণের দু'টি কর্মিসভা এ দিন বাতিল হয়।
বিজেপির তারকাপ্রার্থী বুধবার বলেন,"আমার দলের কর্মকর্তাদের আমি কথা দিয়েছিলাম যে আসব। ওঁরা বৃষ্টির মধ্যে যদি রাস্তায় নামতে পারেন তা হলে আমি কেন পারব না?" এ দিন নিজের প্রতিপক্ষ দেবকে এলাকায় অনুপস্থিতি নিয়ে কটাক্ষ করেন হিরণ। বলেন,"২০১৪ সালে দেব ভোট প্রচারে এসে বলেছিলেন, সিপিআই সাংসদ গুরুদাস দাশগুপ্তের থেকে বেশি এলাকায় আসবেন। তাঁর থেকে বেশি কাজ করবেন। কিন্তু এখানকার মানুষজনই বলছেন, তাঁরা দেবকে দশ বছরে এক বারও এলাকায় দেখেননি। দেবের সাংসদ উন্নয়ন তহবিল থেকে পাঁশকুড়ায় এক টাকার কাজও হয়নি।’’
ঘাটাল মাস্টার প্ল্যানের কথাও এ দিন হিরণের মুখে শোনা গিয়েছে। বলেছেন, ‘‘আমি কথা দিচ্ছি, ভোটে জেতার এক মাসের মধ্যে ঘাটাল মাস্টার প্ল্যান বাস্তবায়িত করব। রাজ্য সরকার ঘাটাল মাস্টার প্ল্যান নিয়ে মিথ্যাচার করছে।"