নীলষষ্ঠীর পুজো দিচ্ছেন অগ্নিমিত্রা পাল (বাঁ দিকে)। মেদিনীপুর সদর ব্লকের পাল জাগুল গ্রামে জনসংযোগে জুন (ডান দিকে)। নিজস্ব চিত্র।
ইদের পর নীলষষ্ঠী। জনসংযোগ চলছেই।
শুক্রবার ছিল নীল ষষ্ঠী। আজ, শনিবার চৈত্র সংক্রান্তি, চড়ক। চৈত্র সংক্রান্তির আগের দিন পালিত হয় নীলষষ্ঠী। এ দিন একের পর এক মন্দিরে গিয়েছেন মেদিনীপুরের তৃণমূল প্রার্থী জুন মালিয়া। বেশ কয়েকটি মন্দিরে গিয়েছেন মেদিনীপুরের বিজেপি প্রার্থী অগ্নিমিত্রা পালও। গ্রামাঞ্চলে গিয়ে উৎসবে শামিল হয়ে জনসংযোগ সেরেছেন দু’জনেই।
সকাল থেকে দু’জনেরই এ দিন প্রচারসূচি ছিল মেদিনীপুর গ্রামীণের বিস্তীর্ণ এলাকায়। যে এলাকা খড়্গপুর (গ্রামীণ) বিধানসভার অন্তর্গত। নীলষষ্ঠী ঘিরে উৎসবের মেজাজ ছিল। নাম নীলষষ্ঠী হলেও এই দিনে শিবের আরাধনা করা হয়ে থাকে। এ দিন শিবের মন্দিরে মহিলারা ভিড় করেছিলেন। প্রচারে গিয়ে সেই ভিড়ে মিশে গিয়েছেন জুন, অগ্নিমিত্রাও। খড়্গপুর গ্রামীণ এলাকায় দুই প্রার্থী গেলেও সদর ছবিটা ছিল অন্য। সেখানেও দু’জনেরই আসার কথা ছিল। অগ্নিমিত্রা পৌঁছলেও যাননি জুন।
শুক্রবার সকালে পাথরায় গিয়েছিলেন জুন। পরে গোকুলপুর, ওয়ালিপুর প্রভৃতি এলাকায় গিয়েছেন তিনি। যেখানেই প্রচারে গিয়েছেন, সেখানে শুরুতে সংশ্লিষ্ট এলাকার মন্দিরে গিয়েছেন। পরে প্রচারসূচি সেরেছেন। ভিড়ের মাঝে দাঁড়িয়ে তৃণমূল প্রার্থীকে বলতে শোনা গিয়েছে, ‘‘দিদির বিকল্প এই মুহূর্তে পশ্চিমবঙ্গে নেই। এটা অধিকার অর্জনের লড়াই।’’ তিনি তিন বছর ধরে মেদিনীপুরের পাশে থেকেছেন দাবি করে একটি মন্দিরের সামনে তৃণমূল প্রার্থীকে বলতে শোনা যায়, ‘‘বাবা (মহাদেব) আছেন সামনে। বাবাই বিচার করবেন যে, কে কাজ করেছে, আর কে কাজ করেনি। মা-ও আছেন। সর্বোপরি আছেন এই এলাকার মানুষেরা।’’ তৃণমূল প্রার্থী বলেছেন, ‘‘আমরা যেমন আমাদের সন্তানের মঙ্গল কামনা করব, তেমন বঙ্গজননীর সুস্থতা কামনা করব। এটা তৃণমূলের একার লড়াই নয়, মানুষের অধিকার অর্জনের লড়াই।’’
বিজেপি প্রার্থী অগ্নিমিত্রা প্রত্যাশিতভাবেই বিঁধেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে। এ দিন পাঁচখুরি, মালিদা, বালিপাদা প্রভৃতি এলাকায় গিয়েছেন বিজেপি প্রার্থী। বালিপাদায় শিব মন্দিরে গিয়ে পুজো দিয়েছেন। মালিদার গাজন মেলায় শামিল হয়েছেন। এলাকায় এলাকায় ঘোরার ফাঁকে বিজেপি প্রার্থী বলছিলেন, ‘‘দুর্নীতির নেতৃত্ব দিয়েছেন মমতাই। অনুব্রত মণ্ডলের দুর্নীতির কথা, পার্থ চট্টোপাধ্যায়, জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকের দুর্নীতির কথা, শেখ শাহজাহানের দুর্নীতির কথাও আপনি জানতেন।’’ একুশের বিধানসভা ভোটের পরে ঘরছাড়া হয়েছিলেন, পাঁচখুরিতে এমন কয়েকজন দলীয় কর্মীর সঙ্গে দেখা করেছেন অগ্নিমিত্রা। এ দিন গাজন উৎসবে শামিল হয়ে গ্রামবাসীর সঙ্গে নাচতেও দেখা গিয়েছে বিজেপি প্রার্থীকে। উৎসবে মিশে
গিয়েছেন জুনও।
এ দিন নীলষষ্ঠী ও গাজন উৎসব উপলক্ষে রেলশহরের ঝাড়েশ্বর মন্দিরে যাওয়ার কথা ছিল বিজেপি ও তৃণমূল প্রার্থীর। সূচি মেনে এ দিন খড়্গপুরের ঝাপেটাপুরের ভাড়া বাড়ি থেকে বাইকে ঝাড়েশ্বর মন্দিরে
পৌঁছন অগ্নিমিত্রা।ওই মন্দিরেই প্রতিদ্বন্দ্বী তৃণমূল প্রার্থী জুনের আসার কথা শুনে বিজেপি প্রার্থী অগ্নিমিত্রা বলেন, “উনি স্টিকার দিদির প্রার্থী। কে স্টিকার দিদি? মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মোদীজি যা করেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সেটাই অনুকরণ করেন।’’