শুক্রবার ত্রিলোচনপুর মঠে দেব। নিজস্ব চিত্র
শিয়রে ভোট। তার আগে প্রচারে বেরিয়ে মন্দিরে মন্দিরে ছুটছেন প্রার্থীরা! তা সে পদ্মপ্রার্থী হোন কিংবা ঘাসফুলের প্রার্থী— ছবিটা একই।
কেউ পুজো দিচ্ছেন, কেউ আবার রীতিমতো যজ্ঞও করছেন। আর তার ফাঁকেই সারছেন জনসংযোগ। কোথাও আবার মন্দির কর্তৃপক্ষের আবদারও শুনছেন প্রার্থীরা। দিচ্ছেন প্রয়োজনীয় প্রতিশ্রুতিও। ঘাটাল লোকসভা এলাকায় দুই যুযুধান প্রার্থীর মন্দিরে যাওয়ার হিড়িক দেখে পুজো শেষে বাড়তি সময় মন্দির খুলে রেখে তাঁদের অপেক্ষাও করছেন পুরোহিতেরা। চিত্রটা ঘাটালের।
ঘাটাল লোকসভা এলাকায় তৃণমূল ও বিজেপি দুই প্রার্থী ভোট প্রচারে এগিয়ে রয়েছেন। অনেক আগেই ঘাটালে তৃণমূল প্রার্থীর নাম ঘোষণা হয়ে গিয়েছিল। তারপর প্রথম তালিকাতেই ঘাটালে পদ্মপ্রার্থীর নামও ঘোষণা হয়ে যায়। অন্য দিকে, শুক্রবার বিকেলে ঘাটালে প্রার্থী হিসেবে তপন গঙ্গোপাধ্যায়ের নাম ঘোষণা করে সিপিএম। একটা সময় ছিল, যখন ভোটের প্রচার শুরুর আগে কোথাও কোথাও ইষ্ট-দেবতার কাছে আশীর্বাদ নিয়ে প্রচারে নামতে দেখা যেত রাজনৈতিক দলের প্রার্থীদের। মূলত ডানপন্থী দলের মধ্যেই এমন প্রবণতা দেখা যেত। তবে ঘাটালে এর আগে লোকসভা কিংবা বিধানসভার প্রার্থীদের মন্দিরে গিয়ে জনসংযোগ কিংবা পুজো দেওয়ার ছবি সচরাচর দেখা যায়নি। নাম ঘোষণার পর, এ বার বামপ্রার্থী তপনও বিজেপি এবং তৃণমূলের পথে হেঁটে মন্দির-যাত্রায় মন দেন কি না— সেটাইআপাতত দেখার।
ঘাটালের বিশালাক্ষী মন্দিরে যজ্ঞ করতে ব্যস্ত বিজেপি প্রার্থী হিরণ। ফাইল চিত্র
প্রসঙ্গত, এ বার গোড়া থেকেই প্রার্থীদের মন্দিরে গিয়ে জনসংযোগের হুড়োহুড়ি পড়ে গিয়েছে! এ ক্ষেত্রে পিছিয়ে নেই ঘাটালের দুই নায়ক প্রার্থী দেব ও হিরণ দু’জনই। একই মন্দিরে প্রায় পরপর যেতেও দেখা গিয়েছে দু’জনকেই। দিন কয়েক আগে ঘাটালের বরদায় বিশালাক্ষী মন্দিরে গিয়েছিলেন পদ্মপ্রার্থী হিরণ। সেখানে গিয়ে সকলের শান্তি কামনায় যজ্ঞ করেছিলেন। তার আগে সেখানে গিয়েছিলেন দেবও।
বিশালাক্ষী মন্দিরের এক পুরোহিত জয়ন্ত বটব্যাল বলছিলেন, ‘‘দুই প্রার্থীই মন্দিরে এসেছিলেন। মায়ের পুজো দিয়েছেন।’’ প্রচারে বেরিয়ে দাসপুরের রানিচকে শীতলা মন্দিরে গিয়েছিলেন দেব। সেখানে তিনি পুজোও দেন। তারপর গ্রামবাসীদের সঙ্গে কথা বলে জনসংযোগ সারেন। দেবকে কাছে পেয়ে মন্দির কর্তৃপক্ষও তাঁর কাছে আবদার করেন। মন্দিরের পুরোহিত অমিয় পণ্ডিত বলছিলেন, ‘‘মন্দিরের ঘাট এবং চারপাশ পাঁচিল দেওয়ার আর্জি জানিয়েছি। উনি আশ্বাসও দিয়েছেন।’’ আবার দাসপুরের নৈহাটি শিবমন্দিরে গিয়েছিলেন দেব ও হিরণ— দু’জনই। পুজো দিয়ে শিবের আশীর্বাদ নিয়ে জনসংযোগ সারেন তাঁরা। দাসপুরের নিমতলায় রাসমন্দিরেও প্রায় পরপর গিয়েছিলেন দেব এবং হিরণ।