বেলদায় এসবিএসটিসির ডিপো। উদ্বোধন হলেও ঢোকে না বাস। নিজস্ব চিত্র।
গত লোকসভা নির্বাচনে তৃণমূলের থেকে ৮৭৫০ ভোটে এগিয়েছিল বিজেপি। বিধানসভা নির্বাচনে অবশ্য জয় পায় তৃণমূল। তবে স্বস্তি আসেনি। কারণ ব্যবধান ছিল মাত্র ২৬৮২ ভোটের। ছবিটা নারায়ণগড় বিধানসভা কেন্দ্রের। এবার লোকসভা ভোটে নারায়ণগড়ে ‘লিডে’র আশা করছে দু’দলই।বিজেপির দাবি, ২০১৯ সালের থেকেও এবার বেশি ‘লিড’ আসবে। তৃণমূল বাজি ধরছে উন্নয়নে।
নারায়ণগড়ের প্রাণকেন্দ্র বেলদায় গড়ে উঠেছে সুপার স্পেশালিটি হাসপাতাল। এটির উদ্বোধন হয় গত বছরের ১৬ ফেব্রুয়ারি। তবে তার পরিষেবা চালু হয়েছে অনেক পরে। তবে তার পরিষেবা সেই গ্রামীণ স্বাস্থ্য কেন্দ্রের মতোই। প্রশ্ন রয়েছে বেলদা কেন্দ্রীয় বাসস্ট্যান্ড নিয়েও। এই প্রকল্পের ঘোষণাও হয়েছিল অনেক আগে। তবে সেটা না হয়ে চলতি বছরের ৭ ফেব্রুয়ারি দক্ষিণবঙ্গ রাষ্ট্রীয় পরিবহণ সংস্থার ডিপো উদ্বোধন হয়। তবে সেটাও বন্ধ। এখনও গাড়ি ঢোকে না। বিজেপি মনে করছে, বেলদা সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালের সমস্যা, কেন্দ্রীয় বাসস্ট্যান্ড না হওয়া— এসবই তৃণমূলের বিরুদ্ধে যাবে। বেলদা-কেশিয়াড়ি রাজ্য সড়কের কেশিয়াড়ি মোড়ে ২৪ নম্বর রেলগেটে উড়ালপুল তৈরিতে প্রশাসনের অসহযোগিতার কথাও প্রচার করছে বিজেপি। অভিযোগ মিথ্যা, পাল্টা বলছে তৃণমূল।
যে রেলগেট নিয়ে একে ওপরের দিকে দায় ঠেলছে তৃণমূল ও বিজেপি তার একপ্রান্তে বেলদা সুপার স্পেশালিটি হাসপাতাল। সেই রেলগেটের ফাঁসে দফায় দফায় আটকে যান রোগী ও তাঁদের বাড়ির লোকজন। দাঁড়িয়ে থাকতে হয় অ্যাম্বুল্যান্সকেও। ২০২২ সালে মেদিনীপুরে রেলের একটি কর্মসূচিতে যোগ দিয়ে বেলদায় দু’টি উড়ালপুল হওয়ার কথা ঘোষণা করেছিলেন মেদিনীপুরের বিদায়ী সাংসদ দিলীপ ঘোষ। তারপর একাধিকবার মাপজোপ হয়েছে। তবে একটিরও কোনও কাজ এগোয়নি। দিলীপ বারবার তৃণমূলের অসহযোগিতার অভিযোগ তুলেছেন। দাবি করেছেন, রেল একশো শতাংশ অর্থ খরচ করে কাজ করতে প্রস্তুত। তবে উড়ালপুল গড়তে রাজ্য সরকারের কিছু জমি প্রয়োজন। কিন্তু তারা পদক্ষেপ করেনি।
অভিযোগ অস্বীকার করে তৃণমূল নেতৃত্ব পাল্টা বলছেন, উড়ালপুল তৈরির সদিচ্ছাই নেই বিজেপির। তাই যুক্তি সাজাচ্ছে। নারায়ণগড় বিধানসভা কেন্দ্রে যা উন্নয়ন হচ্ছে তা রাজ্য সরকারই করছে।তৃণমূলের প্রচারে আসছে লক্ষ্মীর ভান্ডার, স্বাস্থ্যসাথীর মতো একাধিক প্রকল্পের কথা। নারায়ণগড় ব্লক তৃণমূলের সভাপতি সুকুমার জানা বলেন, "বিষয় না পেয়ে ভুলভাল অভিযোগ করছে বিজেপি। মানুষ সার্বিক উন্নয়নের নিরিখে ভোট দেবে।’’ বিজেপির জেলা মুখপাত্র অরূপ দাসের কথায়, "স্থানীয় নানা দাবি তো আছেই। বেশি করে সামনে আসছে তৃণমূলের দুর্নীতি। সব মিলিয়ে নারায়ণগড় থেকে আমরা বড় লিড পাব।"
লড়ছেন মেদিনীপুরের বাম-কংগ্রেস জোট প্রার্থী বিপ্লব ভট্টও। নারায়ণগড়ের মতো পুরনো ঘাঁটিতে বামেরা এবার কতটা ভোট নিজেদের দিকে টানতে পারে, সেটা নিয়েও চর্চা রয়েছে। এই বিধানসভা কেন্দ্রের বেলদায় রবিবার প্রচার করে গিয়েছেন প্রাক্তন মন্ত্রী সূর্যকান্ত মিশ্র। যিনি নারায়ণগড়়ের প্রাক্তন বিধায়কও বটে। সিপিএমের নারায়ণগড় বিধানসভা ক্ষেত্রের আহ্বায়ক মদন বসু বলছেন, "এটা কেন্দ্রে সরকার পরিবর্তনের লড়াই। বেলদায় রেলগেটে উড়ালপুলের মতো স্থানীয় দাবির সঙ্গে সেটাও বলছি আমরা প্রচারে।’’