—প্রতীকী চিত্র।
আর্থিক সমস্যা, রাস্তাঘাটের সংস্কারের মতো এলাকার উন্নয়ন তেমন ভাবায় না পটাশপুরবাসীকে। সে সবের থেকেও তাঁদের বড় চিন্তা— বর্ষাকালে কেলেঘাই নদীর বাঁধ ভাঙবে না তো!
কেলেঘাই নদীর তীরে থাকা পটাশপুরের অর্থনৈতিক ভিত দাঁড়িয়ে রয়েছে মৎস্য শিকার এবং কৃষি কাজের উপরে। এক সময় পটাশপুরের মানুষের কাছে ‘দুঃখের নদী’ হিসেবে পরিচিত ছিল কেলেঘাই। এখনও পটাশপুরবাসীর সেই ‘দুঃখ’ কেউ দূর করতে পারেনি কেন্দ্র বা রাজ্যের কোনও রাজনৈতিক দল। লোকসভা নির্বাচনে ভোট দেওয়ার আগে এই বিষয়টি পটাশপুর বিধানসভা এলাকার একটা বিস্তীর্ণ অংশের বাসিন্দার মাথায় থাকবে বলে মত রাজনৈতিক মহলের।
পটাশপুরে দেহাটি থেকে ভগবানপুর পর্যন্ত প্রায় ২৪ কিলোমিটার এলাকায় কেলেঘাই নদী বরাবর জুড়ে বাঁধ রয়েছে। কেন্দ্রের ইউপিএ সরকারের আমলে ২০১২ সালে এই নদী ও বাঘুই খাল কিছুটা সংস্কার হয়। তবে তৃণমূল আমলে মাটি মাফিয়ারা দেদার বাঁধের মাটি চুরি করেছে বলে অভিযোগ উঠেছে। এ নিয়ে রাজ্য সেচ দফতরের উদাসীনতার বিরুদ্ধে সরব হয়েছিল বিরোধী দল বাম ও কংগ্রেস। অন্যদিকে, কেন্দ্র ও রাজ্যের মধ্যে বাঁধের মেরামতিতে বরাদ্দ টাকা দেওয়া নিয়ে মাঝে টানাপোড়েন চলেছে। প্রথম দফার বরাদ্দে পটাশপুর পর্যন্ত নদী সংস্কার হয়েছে। এই পরিস্থিতিতে ২০২১ সালে পটাশপুরে নদীবাঁধ ভেঙে বন্যা হয়েছে। ২০২৩ সালেও বাঁধ এবং বাঘুই খালের বাঁধ উপচে পটাশপুরের ১০টি অঞ্চল প্লাবিত হয়। ওই সময়ে রাজ্যের তরফে পটাশপুরকে বন্যা কবলিত ঘোষণা না করায় ক্ষতিপূরণ মেলেনি। অন্যদিকে, অমর্ষি-১ কৃষক বাজার ও মতিরামপুরে কর্মতীর্থ তৈরি হলেও সেগুলি ভাঙাচোরা অবস্থায় রয়েছে।
পটাশপুর বিধানসভা এলাকায় গত লোকসভা, বিধানসভা এবং পঞ্চায়েত নির্বাচনের ফলাফল দেখলে বোঝা যায়, তৃণমূলের শক্ত ঘাঁটি রয়েছে। তবে তাদের পিছনেই রয়েছে বিজেপি। গেরুয়া শিবির লোকসভা ভোটে কেলেঘাই নদীর জলে ‘পদ্ম’ ফোটাতে এবার বাঁধ সমস্যাকে হাতিয়ার করেছে। বিজেপির জেলা (কাঁথি) সম্পাদক স্বপন দাস বলেন, ‘‘কেলেঘাই নদী সংস্কারের উদাসীনতার কারণে পটাশপুরবাসী প্রতি বছর দুর্দশায় ভোগেন। রাজ্য সরকারের তরফে ক্ষতিপূরণও দেওয়া হয় না।’’ কেলেঘাই নদীর বন্যা নিয়ন্ত্রণ নিয়ে বাম-কংগ্রেসের জোট প্রার্থী ঊর্বশী বন্দ্যোপাধ্যায়ও সরব হয়েছেন। জেলা কংগ্রেস সভাপতি মানস কর মহাপাত্র বলেন, ‘‘আমাদের সময়ে কেন্দ্রের সরকারের বরাদ্দে নদী সংস্কার শুরু হয়েছিল। এর পরে এখনও কাজ অসম্পূর্ণ।’’ এ ব্যাপারে পটাশপুর-১ পঞ্চায়েত সমিতির সহ-সভাপতি পীযূষ পন্ডা অবশ্য বলছেন, ‘‘বকেয়া টাকা এখনও কেন্দ্র দিচ্ছে না।