—প্রতীকী চিত্র।
কেউ দু’জন, আবার কেউ নিরাপত্তার জন্য পাচ্ছেন চারজন সিআরপি কর্মী। বিজেপির মণ্ডল সভাপতিদের পাশাপাশি মোর্চার মণ্ডলের পদাধিকারীরাও পেয়েছেন কেন্দ্রীয় নিরাপত্তা রক্ষী। লোকসভা ভোটের ফল ঘোষণার আগেই এক ঝাঁক বিজেপি নেতা কেন্দ্রীয় বাহিনীর নিরাপত্তা পাচ্ছেন বলে গেরুয়া শিবির সূত্রের খবর।
বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর এলাকা কাঁথিতে এমন ঘটনায় শোরগোল পড়েছে। আগামী ৪ জুন লোকসভা ভোটের ফল ঘোষণা হবে। এ বার ভোটে অন্যতম নজরকাড়া কেন্দ্র কাঁথি। ২০০৯ সাল থেকে কাঁথির সাংসদ ছিলেন শিশির অধিকারী। তখন তিনি ছিলেন তৃণমূলে। তারপর পরিস্থিতি বদলেছে। অধিকারী বাড়ির ছোট ছেলে সৌমেন্দু অধিকারী এ বার বাবার আসনে বিজেপি প্রার্থী হয়েছে। ষষ্ঠ দফায় বিক্ষিপ্ত অশান্তি ছাড়া নির্বিঘ্নেই ভোট মিটেছে এখানে। তবে রয়েছে হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ের ইঙ্গিত।
এই আবহেই উত্তর কাঁথি বিধানসভায় বিজেপির মণ্ডল সভাপতি দেবদাস মাইতি, ভগবানপুরের ওবিসি মোর্চার সাধারণ সম্পাদক রাজশেখর বর্মন, খেজুরি ২ পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি উদয়শঙ্কর মাইতি-সহ কয়েকজন সিআরপি-র নিরাপত্তা পাচ্ছেন। ভগবানপুরের আড়গোয়াল এবং অর্জুননগর গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার ৬জন বিজেপি নেতা কেন্দ্রীয় বাহিনী নিরাপত্তা পাচ্ছেন। ২৫ মে থেকে তাঁরা নিরাপত্তা পাচ্ছেন বলে জেলা বিজেপি সূত্রের খবর। এর মধ্যে উদয় তৃণমূলের খেজুরি ২ পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি হিসেবে আগে রাজ্য পুলিশের নিরাপত্তা পেতেন। লোকসভা ভোটের মুখে তিনি বিজেপিতে যোগ দেন। তারপর তাঁর নিরাপত্তা প্রত্যাহার করে পুলিশ। এখন তিনি কেন্দ্রীয় নিরাপত্তা পাচ্ছেন।
কেউ কেউ আবার কেন্দ্রীয় বাহিনীর নিরাপত্তা নিতে অস্বীকার করেছেন। তাঁদেরই অন্যতম ভগবানপুর-৩ মণ্ডল বিজেপি সভাপতি তপন মিদ্যা বলছেন, ‘‘ভোট তো শেষ হতে চলল। এখন আর কেন্দ্রীয় বাহিনীর নিরাপত্তা নিয়ে কী হবে!’’ কয়েকজন বিজেপির মণ্ডল সভাপতি এবং অন্য পদাধিকারীর আর্থিক অবস্থা দুর্বল হওয়ায় তাঁরা কেন্দ্রীয় নিরাপত্তা নিতে রাজি হননি। কারণ, নিরাপত্তাকর্মীদের থাকা-খাওয়ার বন্দোবস্ত সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিক্তেই করতে হয়। পূর্ব মেদিনীপুর জেলায় বিজেপির ৭ বিধায়ক এবং তমলুক ও কাঁথি লোকসভার বিদায়ী সাংসদ দিব্যেন্দু অধিকারী এবং শিশির অধিকারী জনপ্রতিনিধি হিসেবে কেন্দ্রীয় নিরাপত্তা পান। এ ছাড়া ও বিজেপির কাঁথি সাংগঠনিক জেলার অন্যতম সাধারণ সম্পাদক সৌমেন্দু অধিকারী, তমলুক সাংগঠনিক জেলার সাধারণ সম্পাদক মেঘনাদ পাল আগে থেকেই কেন্দ্রীয় নিরাপত্তা পেতেন। এখন বিজেপির মণ্ডল সভাপতি এবং শাখা সংগঠনের পদাধিকারীদের কেন্দ্রীয় নিরাপত্তা দেওয়া নিয়ে চর্চা তুঙ্গে। বিজেপির কাঁথি সাংগঠনিক জেলার অন্যতম সাধারণ সম্পাদক চন্দ্রশেখর মণ্ডলের যুক্তি, ‘‘দলের বহু কার্যকর্তার প্রাণসংশয় রয়েছে। তাঁরা তো আর রাজ্য পুলিশের নিরাপত্তা পাবেন না। তাই তাঁরা যাতে কেন্দ্রীয় সরকারের নিরাপত্তা পেতে পারেন সে জন্য হাই কোর্টে আবেদন জানানো হয়েছিল। মহামান্য হাই কোর্টের নির্দেশে অনেকে কেন্দ্রীয় নিরাপত্তা পাচ্ছেন।’’ যদিও, তৃণমূলের কাঁথি সাংগঠনিক জেলার সভাপতি পীযূষকান্তি পন্ডা বলছেন, ‘‘বিজেপিতে যারা চোর-ডাকাত, তাদেরকেও নিরাপত্তা দিচ্ছে কেন্দ্রীয় সরকার।’’