Lok Sabha Election 2024

দুর্নীতির দায়ে ধৃত ‘শুভেন্দু-ঘনিষ্ঠ’

কুমারজিৎ বিজেপি প্রার্থী সৌমেন্দু অধিকারীর একাধিক প্রচার কর্মসূচিতেও উপস্থিত ছিলেন। তিনি ‘প্রধানমন্ত্রী কুশল বিকাশ যোজনা কেন্দ্র’-এর দায়িত্বেও ছিলেন।

Advertisement

কেশব মান্না

কাঁথি শেষ আপডেট: ১৩ মে ২০২৪ ০৯:৩৫
Share:

ধৃত বিজেপি নেতা কুমারজিৎ সিংহ। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে। ছবি: ফেসবুক।

দুর্নীতির অভিযোগকে কেন্দ্র করে ঠিক ভোটের মুখে রাজ্যে নতুন করে বেকায়দায় পড়েছে গেরুয়া শিবির। কেন্দ্রীয় প্রকল্পের কয়েক কোটি টাকা নয়ছয়ের অভিযোগে বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর ঘনিষ্ঠ কাঁথির বিজেপি নেতা কুমারজিৎ সিংহ-কে শনিবার রাতে কাঁথি থেকেই গ্রেফতার করেছে বিধাননগর পুলিশ কমিশনারেটের অধীন টেকনোসিটি থানার পুলিশ।

Advertisement

ধৃত কুমারজিতের বাড়ি কাঁথি শহরের কুমারপুরে। ‘ন্যাশনাল স্কিল ডেভেলপমেন্ট কর্পোরেশন’-এর কর্মসূচিতে ভুয়ো প্রতিষ্ঠান এবং ভুয়ো ছাত্র-ছাত্রীদের নাম নথিভুক্ত করে বৃত্তি বাবদ এক কোটির বেশি টাকা তছরুপ করার অভিযোগ উঠেছে তাঁর বিরুদ্ধে। বিজেপির আরও বেশ কিছু বিধায়ক এবং প্রভাবশালী নেতা এর সঙ্গে জড়িত বলে
আশঙ্কা পুলিশের।

সমাজমাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী থেকে শুরু করে শুভেন্দু অধিকারী, অনেক বিজেপি নেতার সঙ্গে কুমারজিতের ছবি পোস্ট করা আছে (যদিও ছবিগুলির সত্যতা আনন্দবাজার পত্রিকা যাচাই করেনি)। কুমারজিৎ বিজেপি প্রার্থী সৌমেন্দু অধিকারীর একাধিক প্রচার কর্মসূচিতেও উপস্থিত ছিলেন। তিনি ‘প্রধানমন্ত্রী কুশল বিকাশ যোজনা কেন্দ্র’-এর দায়িত্বেও ছিলেন। তবে, কুমারজিৎ তাঁদের দলের কোনও পদাধিকারী ন়ন বলে দাবি কাঁথি পুরসভার পুরপ্রতিনিধি তথা বিজেপির নগর মণ্ডলের সভাপতি সুশীল দাসের।

Advertisement

শুভেন্দু অধিকারীর পাশে বসে ধৃত বিজেপি নেতা।

২৬ এপ্রিল রাজ্যের কারিগরি শিক্ষা দফতরের ‘ইন্ডাস্ট্রিয়াল ট্রেনিং’ বিভাগের জয়েন্ট ডিরেক্টর এবং জয়েন্ট অ্যাপ্রেন্টিজ়শিপ অ্যাডভাইসর সুব্রত কুমার দাস লিখিত অভিযোগ করেন বিধাননগর পুলিশ কমিশনারেটের অধীন টেকনোসিটি থানায়। তিনি ‘কন্টাই পূর্ব সোশ্যাল অর্গানাইজেশন’ নামে একটি সংস্থার বিরুদ্ধে সরকারি অর্থ তছরুপের অভিযোগ এনেছেন। অভিযুক্ত বিজেপি নেতার বিরুদ্ধে প্রতারণা-সহ একাধিক ধারায় মামলা রুজু করে পুলিশ।

কেন্দ্রের পোর্টাল অনুযায়ী, ন্যাশনাল স্কিল ডেভেলপমেন্ট কর্পোরেশনের অধীনে ২৫,৬৮৬ জন শিক্ষানবিশ প্রশিক্ষণ পাচ্ছেন। এর মধ্যে দু’টি ক্ষেত্রে ১৯,৬৬৮ জনের নাম নথিভুক্ত রয়েছে। যদিও রাজ্যের কাছে মাত্র ৯৫৫১ জনের তথ্য রয়েছে।

সন্দেহ হতে রাজ্য নড়েচড়ে বসে। ১৬ এপ্রিল থেকে তদন্তকারীরা কাজ শুরু করেন। ১৯ এপ্রিল পর্যন্ত মোট ৩৯টি প্রতিষ্ঠানে তাঁরা তদন্ত চালিয়েছেন। ওই সংস্থাগুলিতেই ৫৯৬৩ জন শিক্ষানবিশের নাম নথিভুক্ত করা হয়েছে। সূত্রের দাবি, তদন্তে প্রমাণিত হয়েছে, অধিকাংশ প্রতিষ্ঠানের অস্তিত্বই নেই। আবার কোথাও প্রতিষ্ঠান রয়েছে, কিন্তু শিক্ষানবিশের অস্তিত্ব নেই। কোথাও আবার প্রতিষ্ঠানগুলির তথ্যের সঙ্গে সরকারি পোর্টালে তথ্যের মিল খুঁজে পাননি আধিকারিকেরা।

তৃণমূলের কাঁথি সাংগঠনিক জেলা সভাপতি পীযূষ কান্তি পন্ডা বলছেন, ‘‘ভারতবর্ষের সবচেয়ে দুর্নীতিগ্রস্ত রাজনৈতিক দল বিজেপি। নীরব মোদী থেকে শুরু করে কাঁথির কুমারজিতেরা বারবার সেই প্রমাণ দিচ্ছেন।’’ কাঁথি লোকসভা কেন্দ্রের বিজেপি প্রার্থী সৌমেন্দু অধিকারী বলছেন, ‘‘উনি যদি কোনও অপরাধ করে থাকেন তবে আইন অনুযায়ী সাজা পাবেন।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement