মুকুটমনি অধিকারী। —ফাইল চিত্র।
সদ্য শেষ হওয়া লোকসভা ভোটের পর তৃণমূল এবং বিজেপি দু’দলই দাবি করছে, নবদ্বীপ থেকে তারা অন্তত ২০ হাজার ভোটে এগিয়ে থাকবে। তৃণমূলের দাবি, শুধু নবদ্বীপ পুর এলাকা থেকেই তারা ওই লিড পাবে। ও দিকে, বামেদের দাবি, তাদের ভোট অন্তত ২০ শতাংশ বাড়বে!
সবে কয়েক দিন হল রানাঘাট লোকসভা আসনে ভোটপর্ব মিটেছে। দলীয় দফতরে বসে চুলচেরা হিসাবে ব্যস্ত সব রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীরা। বিজেপির নবদ্বীপ বিধানসভা কেন্দ্রের আহ্বায়ক জীবনকৃষ্ণ সেনের দাবি, “ভোট যেমন হয়েছে তাতে নবদ্বীপ থেকে জগন্নাথ সরকার কমপক্ষে ২০ হাজার ভোটে এগিয়ে থাকবেন।” অন্য দিকে নবদ্বীপের পুরপ্রধান তথা তৃণমূলের দক্ষিণ নদিয়া সাংগঠনিক জেলার সাধারণ সম্পাদক বিমানকৃষ্ণ সাহার দাবি, “নবদ্বীপ শহর থেকে মুকুটমণি অধিকারী অন্তত ২০ হাজার ভোটে এগিয়ে থাকবেন। নবদ্বীপ ব্লক ধরলে সেটা দ্বিগুণের কাছাকাছি যাবে বলেই আমরা মনে করছি।”
গত বার রানাঘাট লোকসভা আসনের সাতটি বিধানসভা কেন্দ্রের মধ্যে একমাত্র নবদ্বীপেই পিছিয়ে ছিলেন বিজেপি প্রার্থী। এই পরিস্থিতিতে এবারের লোকসভা ভোটে কার বাক্সে কত ভোট পড়তে পারে তা এক জটিল ধাঁধার আকার নিয়েছে। গত বার রানাঘাট কেন্দ্রে জগন্নাথ সরকার দু’লাখ ৩৩ হাজারের বেশি ভোটের ব্যবধানে জয়লাভ করেছিলেন। মতুয়া ভোটের বেশির ভাগটাই তিনি পেয়েছিলেন বলে ধরে নেওয়া যায়। কিন্তু এ বার ছবিটা অনেকখানি বদলে গিয়েছে মুকুটমণি অধিকারী তৃণমূলের হয়ে দাঁড়ানোয়। একদা সর্বভারতীয় মতুয়া মহাসঙ্ঘের নদিয়ার সভাপতি মুকুটমণির সঙ্গে সঙ্গে মতুয়া ভোটের বড় অংশ জোড়াফুলের দিকে ঢলে পড়েছে বলে তৃণমূলের দাবি। তবে রাজনৈতিক মহলের মতে, তৃণমূল প্রার্থীর সব থেকে বড় পরীক্ষা গত বার বিজেপির পাওয়া ওই বিপুল পরিমাণ ভোট ছাপিয়ে যাওয়া। সে ক্ষেত্রে নবদ্বীপ এবং শান্তিপুর— দক্ষিণ নদিয়ায় তৃণমুলের দখলে থাকা দুই বিধানসভা কেন্দ্রের ভূমিকা খুবই গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠতে পারে। যদিও জগন্নাথ এবং মুকুটমণি দু’জনেই জয়ের ব্যাপারে আত্মবিশ্বাসী বলে দাবি।
সিপিএমের নবদ্বীপ এরিয়া কমিটির সম্পাদক বেচুগোপাল সিংহের দাবি, এ বারের ভোটে গোটা রাজ্যে সব হিসাব ওলটপালট করে দেবে বাম-কংগ্রেস জোট। তাঁর মতে, “নবদ্বীপও তার ব্যতিক্রম হবে না। এখানে আমরা খুব ভাল জায়গায় থাকব।” গত পুরভোটে নবদ্বীপে বামেদের প্রাপ্ত ভোটের পরিমাণ ছিল সাড়ে ছয় থেকে সাত শতাংশ মাত্র। স্থানীয় নেতৃত্বের দাবি, এ বার তা বেড়ে ২০ শতাংশ ছাড়িয়ে যাবে। যদি সত্যিই তা হয়, তা হলে হিসাব যে অন্য রকম হবে তা সকলেই মানছেন।