হলদিয়া শিল্পাঞ্চল। নিজস্ব চিত্র।
শিল্প শহরে এ বারে ভোটের লড়াই হচ্ছে মূলত শিল্পকে কেন্দ্র করে। শিল্পকেই হাতিয়ার করে ময়দানে নেমেছে শাসক ও প্রধান বিরোধী দল। পাশাপাশি বাম-কংগ্রেস জোটও।
তৃণমূলের দাবি, তাদের দলের মধ্যে থেকে যারা শিল্প শহরকে লুট করেছিল, তোলাবাজি চালাচ্ছিল এবং শ্রমিক স্বার্থ বিঘ্নিত করেছিল তাদের চরিত্র পরিষ্কার হয়ে গিয়েছে। তারা নিজেরা যেমন দল ছেড়ে গিয়েছে তেমনই তাদের চলে যাওয়ার পর যে দালালেরা রয়ে গিয়েছিল তাদের চিহ্নিত করে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। হলদিয়া পুরসভার প্রাক্তন পুরপ্রধান দেবপ্রসাদ মণ্ডল বলেন, "এখন দলে নেতারা ঠিকাদারি করতে পারে না। দলের পরিষ্কার নির্দেশ, ঠিকাদারি করলে দল ছাড়তে হবে। শিল্পপতিরা তোলার আতঙ্কে ভোগেন না। বিনিয়োগ হচ্ছে। নির্বাচনে তার প্রতিফলন ঘটবেই।"
যদিও বিজেপির পাল্টা অভিযোগ, এখন তোলাবাজি চলে কেন্দ্রীয় ভাবে। তোলা সরাসরি কালীঘাটে পৌঁছায়। ২০১১ সালের পর কোনও নতুন কারখানা চালু হয়নি বরং বহু কারখানার ঝাঁপ বন্ধ হয়েছে, বড় বড় কারখানায় শ্রমিকদের দাবি সনদ কার্যকরী হয়নি। কারণ, মালিকেরা সরাসরি কেন্দ্রীয় নেতৃত্বকে তোলা দিয়ে স্থানীয় ইউনিয়নের মুখ বন্ধ রেখেছে। কথায় কথায় চাকরি খেয়ে নেওয়ার হুমকিতে শ্রমিকরা বিপর্যস্ত।
বিজেপির তমলুক সাংগঠনিক জেলার সভাপতি তথা হলদিয়া বিজেপি বিধায়ক তাপসী মণ্ডলের কথায়, ‘‘হলদিয়ায় ক্রমশ শ্রমিক শোষণের হার বৃদ্ধি পাচ্ছে। শ্রমিকেরা নিস্তার চাইছেন তৃণমূলের থেকে। ২০২১ সালের মতো ২০২৪ সালের লোকসভা ভোটেও হলদিয়া বিধানসভায় বিজেপি এগিয়ে থাকবে। শ্রমিক শোষণের জবাব শ্রমিকরা ইভিএমেই দেবেন। এ বারও ২০১৬ আর ২০১৯-এর মতো হালহবে শাসকদলের।’’
আবার সিপিএম রাস্তায় নেমেছে তৃণমূল আর বিজেপি উভয় দলকে বিঁধে। তাঁরা মনে করিয়ে দিচ্ছে ২০১১ সালের আগের স্মৃতি। বলছে বাম আমলে হলদিয়া পেট্রোকেমিক্যাল-সহ একের পর এক বিনিয়োগের কথা ও সেই সময় ঝাঁকে ঝাঁকে কর্মসংস্থানের কথা। সিপিএম জেলা সম্পাদক মণ্ডলীর সদস্য পরিতোষ পট্টনায়ক বলেন, "শিল্প শহরকে শ্মশানে পরিণত করেছে দু’দলেরই নেতারা। কিছু নেতা শাসকদল থেকে লুট করে বিরোধী দলে গিয়েছেন ফের লুট করার জন্য। হলদিয়ার মানুষ এঁদেরও দেখেছেন আবার আমাদেরও দেখেছেন। আমরা বিশ্বাস করি, সেই অভিজ্ঞতার প্রতিফলনঘটবে ইভিএমে।’’