শুভেন্দু অধিকারী। —ফাইল চিত্র।
রাত পোহালে লোকসভা ভোটের গণনা। আগামী কাল, মঙ্গলবার সকাল থেকে কাঁথি লোকসভা কেন্দ্রের ন’জন প্রার্থীর ভাগ্য পরীক্ষা হবে প্রভাত কুমার কলেজে। যা বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী এবং কাঁথির বিজেপি প্রার্থী সৌমেন্দু অধিকারীর বাড়ি ‘শান্তি কুঞ্জে’র লাগায়ো এলাকায় রয়েছে। বিষয়টি নজরে রেখে তাই গণনা কেন্দ্র চত্বরে বিশেষ ব্যবস্থা নিয়েছে নির্বাচন কমিশন। ‘শান্তি কুঞ্জ’ এবং তার আশেপাশের এলাকায় পুলিশি প্রহরা বাড়ানো হচ্ছে। শুভেন্দুর বাড়ির আশেপাশে কোনও জমায়েত করা যাবে না বলে সব রাজনৈতিক দলকে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে। জারি করা হয়েছে ১৪৪ ধারা।
দীর্ঘ কয়েক দশক ধরে প্রভাত কুমার কলেজে কাঁথি লোকসভা কেন্দ্রের ভোট গণনা হয়। এবারও সেখানেই রয়েছে কাঁথি লোকসভা কেন্দ্রের স্ট্রং রুম। পরপর তিনবার এই গণনা কেন্দ্র থেকেই ফলাফল জেনে এলাকার সাংসদ পরিচয় পেয়েছে শুভেন্দুর বাবা শিশির অধিকারী। তখন অবশ্য অধিকারী বাড়ির অদূরে ভিড় জমাতেন উৎসাহিত তৃণমূল কর্মীরা। পরিস্থিতি বদলেছে ২০২০ সালে। তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দেন শিশিরবাবুর মেজো ছেলে শুভেন্দু অধিকারী। তারপর যত দিন গড়িয়েছে, ততই কালীঘাট এবং কাঁথির ‘শান্তি কুঞ্জে’র দূরত্ব বেড়েছে। ‘শান্তি কুঞ্জে’র ধারে মাইক বেঁধে তৃণমূলের কর্মসূচিতে একাধিকবার শুভেন্দু এবং শিশির অধিকারী বিরুদ্ধে কুরুচিকর স্লোগান দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে।
লোকসভা ভোটের গণনার দিন বিজেপি নেতা শুভেন্দু তথা অধিকারীর বাড়ির চত্বরে যাতে কোনও উত্তেজনা না ছড়ায়, সে জন্য ১৪৪ ধারা জারি করার নির্দেশ দিয়েছে হাই কোর্ট। এই প্রথমবার অধিকারী বাড়ি থেকে বিজেপির প্রতীকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে ভাগ্য যাচাইয়ে প্রভাত কুমার কলেজে পা রাখবেন সৌমেন্দু। তিনি বলছেন, ‘‘বাড়ির পাশে গণনা কেন্দ্র। এমনিতেই ১৪৪ ধারা জারি রয়েছে। তার পরেও শুনেছি প্রশাসন সব রকমের পদক্ষেপ নেবে।’’
প্রতিবার লোকসভা ভোটের গণনাকে কেন্দ্র করে প্রভাত কুমার কলেজের চারপাশে ভিড় জমান যুযুধান দুপক্ষের নেতা-কর্মীরা। এবারও ব্যতিক্রম হবে না। তৃণমূলের তরফে প্রভাত কুমার কলেজের দু'দিকে দুটি শিবির খোলা হচ্ছে। একটি খোলা হচ্ছে ক্যানাল পাড় সেতুর ধারে রবীন্দ্র মূর্তির কাছে। অন্যটি খোলা হচ্ছে কলেজ মাঠের একেবারে শেষ প্রান্তে। খেজুরি, পটাশপুর, রামনগর এবং চণ্ডীপুর, ভগবানপুরের মতো বিভিন্ন এলাকা থেকে আসা শাসক দলের নেতাকর্মীদের বসার বন্দোবস্ত করা হচ্ছে ওই দুটি শিবিরে। যদিও সে পথে হাঁটছে না গেরুয়া শিবির। এ প্রসঙ্গে বিজেপি প্রার্থীর মুখ্য নির্বাচনী এজেন্ট চন্দ্রশেখর মণ্ডল বলছেন, ‘‘নির্বাচন কমিশনের স্পষ্ট নির্দেশ রয়েছে কোনও জমায়েত করা যাবে না। সেই মাফিক আমরা গণনা কেন্দ্র এবং তার আশেপাশের এলাকায় কোনও জমায়েত করছি না। উৎসাহিত হয়ে কেউ যেতেই পারেন। তবে বিশৃঙ্খলা হবে না।’’