অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। —ফাইল চিত্র।
আইএসএফের ‘গড়ে’ দাঁড়িয়ে নওসাদ সিদ্দিকীর দলকে বিজেপির ‘বি টিম’ বলে কটাক্ষ করলেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। বৃহস্পতিবার ভাঙড়ে এক প্রচারসভায় অভিষেকের ওই কটাক্ষে নওসাদও ছেড়ে কথা বলেননি। ঘণ্টা পাঁচেকের ব্যবধানে ভাঙড়েই সভা করে তাঁর পাল্টা, ‘‘বিজেপির হাত ধরেই তৃণমূলের জন্ম।’’ যাদবপুর লোকসভার তৃণমূল প্রার্থী সায়নী ঘোষের সমর্থনে এ দিন ভাঙড়ের ভোজেরহাটে সভা করেন অভিষেক।
তিনি বলেন, “ধর্মের উস্কানি দিয়ে মানুষকে ভুল বুঝিয়ে ভাঙড়ে আইএসএফ বিধানসভা ভোটে জিতেছিল। তারা মানুষের জন্য কোনও কাজ করেনি। গত তিন বছর ধরে তারা বিজেপির বি টিম হয়ে কাজ করেছে।” আইএসএফ বিধায়ক নওসাদের নাম না করে কটাক্ষ করেন অভিষেক, ‘‘এনআরসি-সিএএ যখন হয়েছে, তখন তিনি (নওসাদ) শুভেন্দুর পাশে দাঁড়িয়েছেন। তিনি মোদী, সুকান্ত বা শুভেন্দুর বিরুদ্ধে কিছু বলেন না। কারণ, টিকি দিল্লিতে বাঁধা। একশো দিনের কাজের টাকা নিয়ে যখন দিল্লিতে আমাদের বিধায়কেরা আন্দোলন করছেন, তখন তিনি একটি চিঠিও লেখেননি রাজ্যের মানুষের পাওনা টাকা নিয়ে।’’
একই সঙ্গে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের দাবি, ‘‘ভাঙড়ের উন্নয়নের জন্য তিনি কোনওদিন কোনও কাজ করেননি।”
জনসভায় তৃণমূল কর্মী-সমর্থকদের উপস্থিতি ছিল চোখে পড়ার মতো। তৃণমূলের দাবি, ৪০-৫০ হাজার লোক হয়েছিল। এসেছিলেন প্রচুর মহিলাও। উচ্ছ্বসিত অভিষেক বলেন, “আজ ভাঙড়ের মানুষের স্বতঃস্ফূর্ত সাড়া বুঝিয়ে দিয়েছে, তাঁরা কাকে চান।’’ বিজেপিকে তাঁর চ্যালেঞ্জ, “বিজেপির সর্বভারতীয় কোনও নেতা এই মাঠে সভা করে দেখান। দেখি কত হিম্মত।”
হাজার খানেক কর্মী-সমর্থকের উপস্থিতিতে রাতে পোলেরহাটের সভায় নওসাদ পাল্টা বলেন, “বিজেপির বি-টিম বলে আমাদের দেগে দেওয়া হচ্ছে। বিজেপির হাত ধরেই তৃণমূলের জন্ম। তৃণমূল প্রথমে বিজেপির সঙ্গেই ঘর-সংসার করেছে। যখন সিএএ-এনআরসি নিয়ে মুসলমানদের লাথি মেরে বাংলাদেশে পাঠিয়ে দেওয়ার কথা বলে, তখন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কেন তাদের বিরুদ্ধে মামলা করে না? সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের পুলিশ অফিসারকে নিয়ে শুভেন্দু অধিকারী যখন বলেছিল, তখন কেন তাঁর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি?”
সিএএ-র বিরুদ্ধে তিনি সুপ্রিম কোর্টে মামলা করেছেন দাবি করে নওসাদ বলেন, “ঠাকুরনগরে গিয়ে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় কেন শর্তসাপেক্ষে সিএএ সমর্থন করার কথা বলেন?”
দুই নেতার চাপানউতোর নিয়ে বিজেপির রাজ্য কমিটির সদস্য সুনীপ দাস বলেন, “আইএসএফ ও তৃণমূল দুই ভাই। দুই ভাইয়ের মধ্যে গন্ডগোল। সংখ্যালঘু ভোট ভাগ করার জন্য এ সব করেছে। এটা আমরা বলছি না, আইএসএফের জোটসঙ্গী সিপিএম বলছে। ওদের সঙ্গে আমাদের কোনও রকমের সম্পর্ক নেই।”