Rahul Gandhi

রাহুলের যাত্রায় পুরনো লোক দলের নেতারা

ভারুচ কেন্দ্র আপের হাতে তুলে দেওয়া আসলে আহমেদ পটলের প্রতি রাহুলের প্রতিশোধ বলে কংগ্রেসে কোন্দল উস্কে দেওয়ার কৌশল নিয়েছে বিজেপি।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ২৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ ০৭:৫৬
Share:

রাহুল গান্ধী। ছবি: পিটিআই।

উত্তরপ্রদেশে রাহুল গান্ধীর ‘ভারত জোড়ো ন্যায় যাত্রা’ চলাকালীন নতুন সঙ্গীর সমর্থন পেল কংগ্রেস। কিছুটা অযাচিত ভাবেই! বিরোধী মঞ্চ ‘ইন্ডিয়া’ ছেড়ে রাষ্ট্রীয় লোক দল (আরএলডি) সম্প্রতি এনডিএ-র শরিক হওয়ার কথা ঘোষণা করেছে। আজ লোক দলের নেতারা কংগ্রেসের পাশে দাঁড়ানোর ইঙ্গিত দিয়েছেন।

Advertisement

এক সময়ে লোক দল গঠন করেছিলেন প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী চৌধরী চরণ সিংহ। পরবর্তী কালে নেতৃত্বের দাবিদাওয়া নিয়ে মতান্তরে লোক দল ভেঙে আরএলডি গঠন করেন চৌধরী চরণ সিংহের ছেলে অজিত চৌধরী। এখন অজিত-পুত্র জয়ন্ত চৌধরীর হাতে। গত কয়েকটি নির্বাচন তিনি উত্তরপ্রদেশে এসপি-র সঙ্গে জোট করে লড়েছেন। এ বারও প্রথমে ‘ইন্ডিয়া’য় থাকলেও, গত মাসে এনডিএ শিবিরে যোগ দেয় আরএলডি। যা জাঠ অধ্যুষিত পশ্চিম উত্তরপ্রদেশে এসপি ও কংগ্রেসের জন্য বড় ধাক্কা বলেই মনে করছে রাজনীতির অনেকে। তাঁদের মতে, আরএলডি-কে পাশে পাওয়ায় কৃষক আন্দোলন সত্ত্বেও পশ্চিম উত্তরপ্রদেশে কৃষিজীবী জাঠ সমাজের ভোট অনেকাংশে নিশ্চিত করে নিতে সক্ষম হল বিজেপি।

এই আবহে আজ রাহুলের ‘ভারত জোড়ো ন্যায় যাত্রা’ আলিগড়ে পৌঁছলে তাকে স্বাগত জানাতে এগিয়ে আসেন পুরনো লোক দলের নেতারা। কংগ্রেসের মতে, এটা যথেষ্ট তাৎপর্যপূর্ণ। জাঠ অধ্যুষিত ওই এলাকায় বিজেপিকে হারাতে কংগ্রেস-এসপির পাশে স্থানীয় দলগুলি এগিয়ে আসছে— লোক দলের সমর্থন তার প্রমাণ। এ নিয়ে কংগ্রেস নেতা জয়রাম রমেশ বলেন, ‘‘ইন্ডিয়া-র চার-চারটি বৈঠকের পরে আরএলডি এনডিএ-তে যোগদান করেছে। কিন্তু আজ সকালে ‘ভারত জোড়ো ন্যায় যাত্রা’য় রাহুল গান্ধীকে চৌধরী চরণ সিংহের গঠিত দলের নেতা-কর্মীরা উদ্দীপনার সঙ্গে অভ্যর্থনা জানান। যা অনেক কিছু বলে দিচ্ছে।’’

Advertisement

যদিও জয়রামের ওই দাবিকে বিশেষ গুরুত্ব দিতে চাননি বিজেপি নেতৃত্ব। তাঁদের বক্তব্য, আরএলডি-ই পশ্চিম উত্তরপ্রদেশের জাঠ সমাজের প্রতিনিধিত্ব করে, লোক দল কেবল খাতায়-কলমেই রয়েছে।

এ দিকে, দলীয় কর্মীদের অসন্তোষ সত্ত্বেও গুজরাতের ভারুচ আসনটি আম আদমি পার্টি (আপ)-কে ছেড়েছে কংগ্রেস। যা নিয়ে আজ জয়রাম জানিয়েছেন, জোটরক্ষার স্বার্থে কড়া সিদ্ধান্ত নিতে হয়েছে। সনিয়া গান্ধীর প্রাক্তন রাজনৈতিক সচিব আহমেদ পটলের পুরনো কেন্দ্র ছিল ভারুচ। স্বভাবতই ওই আসনটি আপ নেতৃত্বকে ছেড়ে দেওয়ায় সামাজিক মাধ্যমে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন আহমেদ-কন্যা মুমতাজ। ভারুচ আসনটি আপ-কে দেওয়ায় স্থানীয় কংগ্রেস কর্মীদের কাছে ক্ষমা চেয়েছেন তিনি। আহমেদ পটেলের ছেলে ফয়জ়ল ওই সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনার দাবি তুলে বলেছেন, ‘‘আমি বা দলীয় কর্মীরা কেউই ওই সিদ্ধান্তে খুশি নই। আশা করব, গান্ধী পরিবার ওই সিদ্ধান্ত আরও এক বার ভেবে দেখবে।’’ দলীয় কর্মীদের ক্ষোভের বিষয়টি মাথায় রেখেই বৃহত্তর স্বার্থে ওই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে দাবি জয়রামের। তিনি বলেন, ‘‘ওই সিদ্ধান্তে আমিও হতাশ। কিন্তু ওই সিদ্ধান্ত দল ও বিরোধী জোটকে শক্তিশালী করার জন্য নেওয়া হয়েছে। সিদ্ধান্ত দলের জন্য হয়, ব্যক্তির কথা মাথায় রেখে হয় না।’’

ভারুচ কেন্দ্র আপের হাতে তুলে দেওয়া আসলে আহমেদ পটলের প্রতি রাহুলের প্রতিশোধ বলে কংগ্রেসে কোন্দল উস্কে দেওয়ার কৌশল নিয়েছে বিজেপি। রাহুলের নাম না করে বিজেপি নেতা জয়বীর সিংহ গিলের কটাক্ষ, ‘‘এটা যুবরাজের প্রতিশোধ।’’ আর বিজেপি আইটি শাখার প্রধান অমিত মালবীয়ের বক্তব্য, ‘‘কংগ্রেস আসলে আহমেদ পটেলের ঐতিহ্যকে মুছে দিতে চাইছে।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement