মালদহের সভায় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ছবি: ভিডিয়ো থেকে।
আলিপুরদুয়ারের আদিবাসী নেতা প্রকাশ চিক বরাইককে প্রার্থী করেছে তৃণমূল। মমতা মালদহের সভা থেকে বলেন, ‘‘আমাদের অনেক আদিবাসী নেতা আছেন। প্রকাশ চিক বরাইক আমাদের রাজ্যসভার সাংসদ। তা সত্ত্বেও এ বার আলিপুরদুয়ার থেকে দাঁড়িয়েছে। সম্ভবত জিতে যাবে।’’
মালদহ উত্তরের তৃণমূল প্রার্থী প্রসূন বন্দ্যোপাধ্যায়ের জন্য ভোট চাইতে গিয়ে মমতা বলেন, ‘‘প্রসূনকে ভোটটা দিয়ে দেখুন। ও এখানে আপনাদের জন্য পড়ে থাকবে। আপনাদের কথা বলবে। ওকে ভোট দিয়ে দেখুন। আমার আর এক প্রার্থী আছেন শাহনওয়াজ ভাই। ও অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের নামী ছাত্র। সব ছেড়ে এখানে এসেছেন মালদহের মানুষকে ভালবেসে।’’
মমতা বলেন, ‘‘পরিযায়ী শ্রমিকেরাও ভোট দিয়ে যাবেন। যাতে দুষ্টুমি করে আপনাদের নাম বাদ দিতে না পারে। আমি কথা দিচ্ছি, সিএএ, এনআরসি এখানে করতে দেব না। এটা হলে সকলে পরিচয়, নাগরিকত্ব হারাবেন। মাছ, মাংস, ডিম খেতে বারণ করছে ওরা। কে কী খাবে নিজের ব্যাপার। কেন ধমকাবেন আপনারা?’’
‘আয়ুষ্মান ভারত’ নিয়ে মমতা বলেন, ‘‘‘আয়ুষ্মান ভারত’ করলে কেন্দ্র অর্ধেক টাকা দিত, বাকি আমাদের দিতে হত। পেত মাত্র ৫০ লাখ মানুষ। স্বাস্থ্যসাথীতে ১০ কোটি মানুষ পরিষেবা পান। কেন ‘আয়ুষ্মান ভারত’ করতে দেব বাংলায়?’’
১০০ দিনের কাজ নিয়ে মমতার তোপ, ‘‘১০০ দিনের কাজের টাকা ওরা দেয়নি। আটকে রেখেছে। কিন্তু বাংলা ভিক্ষা চাইবে না। যত বেশি সাংসদ আমরা নেব, তত বেশি দিল্লি থেকে কাজ করতে পারব। বাংলার প্রাপ্য আদায় করব। আমরা প্রকল্প চালু করেছি— কর্মশ্রী। এর মাধ্যমে জব কার্ড হোল্ডারদের ৫০ দিনের কাজের গ্যারান্টি দেওয়া হচ্ছে। কেউ চাইলে ৬০ দিনও করতে পারেন।’’
ভোটের আগে বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে যে সমীক্ষা করা হচ্ছে, তাকে ‘ভুয়ো’ বললেন মমতা। বললেন, ‘‘কোনও সমীক্ষা বিশ্বাস করবেন না। সব বিজেপি টাকা দিয়ে করিয়েছে। বিধানসভায় ২০০টি ভোট পাবে বলেছিল। পায়নি। এ বারও পাবে না।’’
‘ইন্ডিয়া’ নিয়ে মমতা বলেন, ‘‘বাংলায় ‘ইন্ডিয়া’ নেই। আমি ওই জোট তৈরি করেছিলাম। কিন্তু এখানে বিজেপি, সিপিএম, কংগ্রেস ভাই ভাই। এখানে ওদের কাউকে ভোট দেবেন না।’’
গাজোলের সভা থেকে মালদহের বিজেপি প্রার্থী খগেন মুর্মুকে আক্রমণ করে মমতা বলেন, ‘‘খগেনবাবু, আপনাকে ভোট দিতাম যদি আপনি বাংলার হয়ে আওয়াজ তুলতেন। কেন ১০০ দিনের কাজ বন্ধ? কেন সংসদে প্রশ্ন তোলেননি? আপনি কোথায় ছিলেন? কংগ্রেস কোথায় ছিল?’’
তীব্র গরমে দীর্ঘমেয়াদী ভোট নিয়ে আবার নির্বাচন কমিশন এবং বিজেপিকে আক্রমণ করলেন মমতা। বললেন, ‘‘কাঠফাটা রোদ। প্রতি বার এই সময়ে ভোট ফেলা হয়। অন্যান্য বার মে মাসের মধ্যে ভোট শেষ হয়ে যায়। এ বার জুন অবধি চলবে। কাকে সুবিধা করিয়ে দেওয়ার জন্য? বিজেপি আসলে মানুষের কষ্ট বোঝে না। ওরা সারা দেশে ঘুরে বেড়াবে, পার্টির হয়ে প্রচার করবে। আমাদের হোটেল ভাড়া করে থাকতে হয়। মোদী প্লেন ব্যবহার করেন। সব সুবিধা নেন।’’
মুখ্যমন্ত্রী তথা তৃণমূলের সর্বোচ্চ নেত্রী গাজোলের মাঠের সভামঞ্চে উপস্থিত হয়েছেন। তাঁকে ঘিরে জনসমাগম হয়েছে।