Lok Sabha Election 2024

কদমার প্রশংসায় প্রার্থী, শিল্প বাঁচানোর আর্জি মানকরে

পূর্ব বর্ধমানের বুদবুদের মানকর কদমার জন্য বিখ্যাত। কারিগরদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেল, ইংরেজ আমলের আগে থেকেই মানকরের কদমার প্রসিদ্ধি।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

মানকর শেষ আপডেট: ১০ এপ্রিল ২০২৪ ০৮:৩০
Share:

কদমা হাতে শিল্পী। মানকরে। নিজস্ব চিত্র।

বড়সড় একটা কদমা দু’হাতে তুলে ধরে দাঁড়িয়ে আছেন তিনি। নিজের ফেসবুক দেওয়ালে বর্ধমান-দুর্গাপুর লোকসভা কেন্দ্রের বিজেপি প্রার্থী দিলীপ ঘোষের মঙ্গলবারের এমন ছবি রাজনীতির আঙিনায় আনল মানকরের কদমাকেও। কদমার ওজন, বিশেষত্ব জানিয়ে রাজ্য সরকারের তৈরি বর্ধমানের ‘মিষ্টি হাব’ নিয়ে কটাক্ষও করেছেন বিজেপি প্রার্থী। জবাব এসেছে তৃণমূল শিবির থেকেও।

Advertisement

পূর্ব বর্ধমানের বুদবুদের মানকর কদমার জন্য বিখ্যাত। কারিগরদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেল, ইংরেজ আমলের আগে থেকেই মানকরের কদমার প্রসিদ্ধি। শুধু পুজো নয়।
বিয়ে-তত্ত্বে বনেদি পরিবার কদমা ব্যবহার করত। এমন ভাবে কদমা
তৈরি হত যে, তার ভিতরে অনায়াসেই শাড়ি, আলতা, সিঁদুরের মতো
উপকরণ ঢুকে যেত। এখনও বিশেষ কিছু পুজোয় এমন কদমা তৈরি হয়। মানকরের সুনীল মণ্ডল দশ বছরেরও বেশি সময় ধরে এই মিষ্টি তৈরি করছেন। তিনি জানান, তাঁরা সব সময় দুর্গাপুজোর দিকে তাকিয়ে থাকেন। মূলত বিশ্বকর্মা পুজো থেকে মরসুম শুরু হয়।

কদমা নিয়ে দিলীপ ঘোষের মন্তব্য শুনেছেন কারিগরেরা। তাঁরা জানান, কদমার সুনাম শুনে আনন্দিত। এই শিল্পকে বাঁচানোর আর্জিও উঠে এসেছে তাদের গলায়। মানকর গ্রামে চারটি পরিবার বর্তমানে এই কাজে যুক্ত। তবে কোনও সরকারি আর্থিক সাহায্য মেলে না বলে তাঁদের দাবি। সুনীলের কথায়, ‘‘বিভিন্ন শিল্পে সরকার কম সুদে লোনের ব্যবস্থা করে। আমাদের কিছু নেই।’’ মানকরের কারিগর বুড়ো কর, গণেশ দাসরাও এই শিল্পকে বাঁচাতে সরকারি উদ্যোগ জরুরি বলে মনে করেন। তৃণমূলের গলসি ১ ব্লক সভাপতি জনার্দন চট্টোপাধ্যায়ের মন্তব্য, ‘‘এটা আমাদের দুর্ভাগ্য যে দিলীপবাবু এতদিন পরে মানকরের কদমা সম্পর্কে জানলেন। রাজ্য সরকার কদমা শিল্পীদের নিয়েও চিন্তাভাবনা করছে।’’

Advertisement

এ দিন কদমার সঙ্গে বর্ধমানের মিষ্টি হাবের প্রসঙ্গও টেনেছেন বর্ধমান-দুর্গাপুর লোকসভা কেন্দ্রের বিজেপি প্রার্থী। দিলীপের দাবি, ‘‘কদমা প্রসঙ্গে বলে রাখা ভাল, রাজ্য সরকার বর্ধমানে মিষ্টি হাব বানিয়েছে কয়েক কোটি টাকা খরচ করে। কিন্তু, সেখানে মিষ্টি ব্যবসায়ীদের কোনও লাভ হয়নি। বিক্রিবাটাও হয় না। ধীরে ধীরে বন্ধের মুখে মিষ্টি হাব।’’ জাতীয় সড়কে দুর্গাপুরমুখী লেনের অনাময় হাসপাতালের পাশে দ্বি-তল এই মিষ্টি হাবে মোট ২৫টি দোকান ছিল। উদ্বোধন পর থেকেই হাব নিয়ে জটিলতা তৈরি হয়েছে। ব্যবসায়ীরা কখনও দোকান বন্ধ করেছেন, আবার প্রশাসন কখনও বৈঠক করে তা খুলিয়েছেন। সরকারি বাস মিষ্টি হাবে দাঁড় করিয়ে ব্যবসা বাড়ানোর উদ্যোগও বিশেষ কাজে আসেনি বলে অভিযোগ।

এই টানাপড়েনের মধ্যেই গত বছরের মে মাসে বর্ধমানের মিষ্টি ব্যবসায়ীরা ২০টি দোকান জেলা প্রশাসনকে ফিরিয়ে দেয়। তারপর থেকেই বন্ধ মিষ্টি হাব। মিষ্টান্ন ব্যবসায়ীদের পক্ষে সৌমেন দাসের কথায়, ‘‘প্রশাসনের সঙ্গে চুক্তি অনুযায়ী ব্যবসা না করতে পারলে দোকান ফিরিয়ে দেওয়ার কথা ছিল। সেই মতো দোকান ফেরানো হয়েছে।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement