জলপাইগুড়ির সাংসদ জয়ন্ত রায়। —ফাইল চিত্র।
তাঁকে ফের টিকিট দেওয়া নিয়ে প্রকাশ্যেই সঙ্ঘের আপত্তি ছিল। ফলে তিনি এ বার জলপাইগুড়ি আসনে টিকিট পাচ্ছেন না, এটা ধরেই নেওয়া হয়েছিল দলের একটা অংশ থেকে। রাজনৈতিক মহলে এখনও চর্চা চলছে বর্তমান সাংসদ জয়ন্ত রায়ের পরিবর্ত প্রার্থী নিয়ে। এখনও একাধিক বিকল্প নাম নিয়ে চর্চা চলছে বিজেপিতে। এই নামগুলির মধ্যে শীর্ষে রয়েছে এক মহিলা নেত্রীর, যিনি গত বিধানসভা ভোটে বিজেপির হয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে হেরেছেন। রয়েছে উত্তরবঙ্গেরই একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপকের নাম, যিনি মতুয়া সম্প্রদায়ভুক্ত এবং সঙ্ঘের একটি অংশের পছন্দের। সম্ভাব্য প্রার্থী হিসেবে রয়েছে এক তরুণ চিকিৎসকেরও নাম।
কিন্তু এরই মধ্যে নতুন করে আবার জয়ন্তর নাম দলেরই শীর্ষ নেতৃত্বের একাধিক আলোচনায় ভেসে উঠেছে বলে খবর। এবং প্রার্থী হিসাবে ফের জয়ন্তর নামেই ‘সিলমোহর’ পড়তে চলেছে বলে জেলা বিজেপিরই একটি সূত্রের খবর। দলের কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব এমনই ইঙ্গিত পাঠিয়েছে জেলায়। শুরু হতে চলেছে জয়ন্তর প্রচারের প্রাথমিক প্রস্তুতিও। গেরুয়া শিবিরের একটি সূত্রের দাবি, বিকল্প প্রার্থীরা কেউই রাজনৈতিক অভিজ্ঞতায় গত পাঁচ বছরের সাংসদ জয়ন্ত রায়কে টক্কর দিতে পারবেন না এবং জয়ন্তর প্রশাসনিক অভিজ্ঞতাও রয়েছে। বিজেপির মধ্যে লড়াকু নেতা বলে পরিচিত কেউই জয়ন্তর বিকল্প হয়ে উঠতে পেরেছেন কিনা তা নিয়ে ধন্দে রয়েছে দল। সে সব কারণে নিমরাজি হয়েও জয়ন্তর প্রার্থীপদ মেনে নিতে পারেন নেতৃত্ব।
বিজেপি সূত্রের দাবি, জয়ন্তর নাম নিয়ে দল এবং সঙ্ঘের বড় অংশের আপত্তির কারণ, গত পাঁচ বছরে তিনি কেন্দ্রীয় সরকারের কাজ নিয়ে ‘সরব’ হননি। দলের নানা অনুষ্ঠানের বাইরে ধারাবাহিক রাজনীতিতে সক্রিয় ছিলেন না। নিজের লোকসভা কেন্দ্রেও নিয়মিত রাত্রিবাস করেননি বলে সঙ্ঘের একাংশের দাবি। সে কারণেই বিকল্প প্রার্থী খোঁজায় মন দিয়েছিল দলের একাংশ। সূত্রের দাবি. বিকল্প হিসেবে যে মহিলা নেত্রীর কথা এসেছে, সম্প্রতি তিনি পারিবারিক অভিযোগে জড়িয়েছেন। যে অধ্যাপকের নাম সঙ্ঘের তরফে প্রস্তাব করা হয়েছে, তিনি মতুয়া সম্প্রদায়ের বাসিন্দা। উত্তরবঙ্গের আসনগুলিতে মতুয়া প্রার্থী দেওযার আবেদন নিয়ে মতুয়া সংগঠনগুলি সব দলের উপরেই চাপ বাড়িয়েছে। যদিও ওই অধ্যাপকের রাজনৈতিক পরিচিতি নেই বলে দাবি। একই ভাবে যে তরুণ চিকিৎসকের নাম ভেসে এসেছে, তাঁরও রাজনৈতিক অভিজ্ঞতা নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে। সঙ্ঘের এক কার্যকর্তার কথায়, “২০১৯ সালে যখন চিকিৎসক জয়ন্ত রায়ের নাম প্রার্থী হিসেবে ঘোষণা হল, তখন তাঁর রাজনৈতিক অভিজ্ঞতা কি ছিল?”
বিজেপির জলপাইগুড়ি জেলা সভাপতি বাপি গোস্বামী বলেন, “প্রার্থী নিয়ে যা বলার দলের উচ্চতর নেতৃত্ব বলবেন। বিদায়ী সাংসদ গত পাঁচ বছরে যে যে উন্নয়নের কাজ করেছেন, সেগুলি আমরা আরও একবার মানুষের কাছে তুলে ধরছি।” ইতিমধ্যে জেলা বিজেপির তরফে সাংসদের ছবি দিয়ে ভোট দেওয়ার আবেদন লেখা হোর্ডিং ছাপানো হয়েছে, সাংসদের কাজকর্মের ফিরিস্তি প্রকাশ করা হচ্ছে। জয়ন্ত রায় বলেন, “দল যা
বলবে তাই হবে।”