মামলার পরে রানাঘাট আদালত থেকে বেরোচ্ছেন জগন্নাথ। —নিজস্ব চিত্র।
চাকরি দেওয়ার নাম করে টাকা তোলা, দুর্নীতি, সন্ত্রাস সৃষ্টিকারী বলে বিজেপি প্রার্থী জগন্নাথ সরকারকে কটাক্ষ করেছিলেন রানাঘাট লোকসভা কেন্দ্রে তৃণমূল প্রার্থী মুকুটমণি অধিকারী। তার জবাবে মুকুটমণির বিরুদ্ধে মানহানির মামলা করলেন জগন্নাথ। সোমবার রানাঘাট আদালতে বিচারক প্রবীর মহাপাত্রের এজলাসে মামলা দায়ের হয়। নির্বাচনের আগে যা নিয়ে শোরগোল পড়েছে
রাজনৈতিক মহলে।
অভিযোগ, গত ১১ মার্চ একটি বৈদ্যুতিন সংবাদ মাধ্যমে সাক্ষাৎকারের সময় মুকুটমণি, তোলাবাজ, সন্ত্রাস সৃষ্টিকারী ব্যক্তি, কল্যাণী এমসের দুর্নীতির সঙ্গে যুক্ত, চাল কল, ঠিকাদারদের কাছ থেকে টাকা তোলা, মানুষকে আর্থিক প্রতারণা ইত্যাদির সঙ্গে জগন্নাথ যুক্ত বলে মন্তব্য করেছিলেন। এই নিয়ে জগন্নাথ আদালতের দ্বারস্থ হবেন বলে আগেই হুঁশিয়ারি দিয়েছিলেন। সোমবার পাঁচটি ধারায় মুকুটমণির বিরুদ্ধে মানহানির মামলা দায়ের করেন তিনি।
রাজনৈতিক মহলের অনেকের মতে, সদ্য বিজেপি ছেড়ে তৃণমূলে যোগ দেওয়া রানাঘাট দক্ষিণের বিধায়ক মুকুটমণি অধিকারীকে রানাঘাট কেন্দ্রে প্রার্থী করেছে তৃণমূল। মুকুটমণি যখন বিজেপিতে থাকার সময়েই তাঁর সঙ্গে জগন্নাথের দূরত্ব তৈরি হয়। তৃণমূলে যোগ দেওয়ার পর সরাসরি ব্যক্তি আক্রমণের পথে হাঁটেন মুকুট। জগন্নাথও যে চুপ করে থাকবেন না, তা আগেই আন্দাজ করা গিয়েছিল। আবার জগন্নাথ যদি মামলা না করতেন, সে ক্ষেত্রে রাজনৈতিক ভাবে তাঁকে প্রশ্নের মুখে পড়তে হত। সেজন্যই বিজেপি প্রার্থী সরাসরি আদালতের দ্বারস্থ হয়ে কার্যত তৃণমূল প্রার্থীকে ভোটের আগে চাপে রাখলেন। এ দিন মামলা দায়ের করার পর আদালত থেকে বেরিয়ে জগন্নাথ বলেন, "প্রায় ৩৫ বছর ধরে স্কুলে শিক্ষকতা করেছি। পাঁচ বছরের সাংসদ হিসেবে মানুষের সঙ্গে প্রতিনিয়ত যোগাযোগ রয়েছে। তৃণমূলের প্রার্থী আমাকে তোলাবাজ, সন্ত্রাস সৃষ্টিকারী বলেছেন। নিশ্চিত ভাবে এতে আমার সম্মানহানি হয়েছে। যে কারণে আমি তাঁর বিরুদ্ধে আদালতের দ্বারস্থ হয়েছি।" জগন্নাথের আইনজীবী রাজা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, "আইনের প্রতি আমাদের আস্থা রয়েছে। এ দিন মামলাটি বিচারক গ্রহণ করেছেন।"
পাল্টা মুকুটমণি বলেন, "আমি তৃণমূলের প্রার্থী হওয়ায় বিজেপি প্রার্থী ভয় পাচ্ছেন। তাই আদালতের দ্বারস্থ হয়েছেন। রানাঘাট লোকসভার প্রায় ১৭ লক্ষ মানুষ যে কথা বলছে, আমিও জগন্নাথ সরকার সম্পর্কে সেই কথাই বলছি। তাহলে বিজেপি প্রার্থীকে লোকসভার সব মানুষের বিরুদ্ধেই মামলা করতে হয়।"