নতুন পার্টি অফিসের সামনে ধর্নায় আদি বিজেপির নেতা-কর্মীরা। — নিজস্ব চিত্র।
লোকসভা ভোটের মুখে নব্য বনাম আদির দ্বন্দ্বে নাজেহাল হাওড়ার বিজেপি। গত বিধানসভা ভোটের সময়ে যাঁরা দলে যোগ দিয়েছিলেন তাঁদের বিরুদ্ধে গুরুতর অভিযোগ তুলে শুক্রবার ডোমজুড়ে ধর্নায় বসেন আদি বিজেপির কর্মীরা। পুলিশ দিয়ে বিক্ষোভকারীদের সরিয়ে দেওয়ার চেষ্টা হলে পরিস্থিতি আরও উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। গোটা ঘটনায় অস্বস্তিতে বিজেপি। কটাক্ষ করেছে তৃণমূল।
ভোটের মুখে হাওড়া সদরে বিজেপির গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব প্রকাশ্যে। সূত্রের খবর, ২০২১ সালে বিধানসভা ভোটের ঠিক মুখে তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দিয়েছিলেন তৎকালীন তৃণমূল বিধায়ক রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর সঙ্গেই বিজেপিতে গিয়েছিলেন ডোমজুড় এলাকায় তাঁর অনুগামীরাও। তার পরে বিধানসভায় হেরে আবার তৃণমূলে ফিরেছেন রাজীব। কিন্তু সূত্রের খবর, সেই সময় যাঁরা রাজীবের পিছু পিছু বিজেপিতে যোগ দিয়েছিলেন, তাঁদের অনেকেই আর তৃণমূলে ফেরেননি। তাঁরা থেকে গিয়েছেন বিজেপিতেই। তাঁদেরই নব্য বিজেপি নামে অভিহিত করে আক্রমণ শানিয়েছেন আদি বিজেপির কর্মকর্তারা। স্থানীয় সূত্রে খবর, ওই এলাকায় বিজেপির রাশও মূলত নব্য বিজেপির হাতেই। তা নিয়েই গোলমালের সূত্রপাত।
বৃহস্পতিবার ডোমজুড়ের জগদীশপুরে বিজেপির একটি পার্টি অফিসের উদ্বোধন করা হয়। সেই অনুষ্ঠান ঘিরেই আবার নতুন করে প্রকাশ্যে চলে আসে আদি বনাম নব্য দ্বন্দ্ব। অভিযোগ, আদি বিজেপির নেতা-কর্মীরা বঞ্চনার অভিযোগ তুলে বিক্ষোভ দেখান। পুরনো কর্মীদের মধ্যে অন্যতম প্রবীর কয়াল বলেন, ‘‘তৃণমূল ছেড়ে কোটি টাকা দিয়ে বিজেপিতে যোগদান করেছেন গোবিন্দ হাজরা। তাঁকে দল থেকে বিতাড়িত করার দাবিতেই আমরা ধর্নায় বসেছিলাম। সারা রাত ধর্না দিয়েছি। পুলিশ দিয়ে আমাদের জোর করে তুলে দেওয়ার চেষ্টা হয়েছিল। আমাদের টলানো যায়নি।’’
প্রত্যাশিত ভাবেই বিজেপির অন্তর্দ্বন্দ্বকে কটাক্ষ করেছে তৃণমূল। তৃণমূলের ডোমজুড় ব্লক সভাপতি তাপস মাইতির কটাক্ষ, ‘‘এটাই তো বিজেপির সংস্কৃতি। আদি- নব্যের দ্বন্দ্বের প্রভাব ভোটেও পড়বে।’’ গোটা ঘটনায় অস্বস্তিতে পড়েছে পদ্মশিবির। হাওড়া সদরের বিজেপি সম্পাদক ওম প্রকাশ সিংহ বলেন, ‘‘এটা দলের অভ্যন্তরীণ ব্যাপার। আলোচনার মাধ্যমে মিটিয়ে ফেলা হবে।’’