Shantanu Thakur-Mamata Bala Thakur

বড়মার ঘর ‘দখলকাণ্ডের’ পর ঠাকুরবাড়িতে পুলিশ, তালা খুলে বার করা হল মমতাবালার জরুরি নথি

মমতাবালার বক্তব্য, ১৯৮৫ সাল থেকে ওই বাড়িতে থাকেন তিনি। শান্তনুরা সেখানে থাকেন না। রবিবার রাতের ঘটনার পর বিষয়টি তিনি পুলিশ প্রশাসনকে জানাবেন বলেও জানিয়েছিলেন।

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা

গাইঘাটা শেষ আপডেট: ০৮ এপ্রিল ২০২৪ ১৬:৪৭
Share:

—নিজস্ব চিত্র।

রবিবার রাতে ধুন্ধুমার কাণ্ডের পর সোমবারও উত্তেজনা ছড়াল গাইঘাটার ঠাকুরনগরে মতুয়া ঠাকুরবাড়িতে। পুলিশের মধ্যস্থতায় ঘরে থাকা জরুরি নথিপত্র হাতে পেলেন তৃণমূল সাংসদ মমতাবালা ঠাকুর।

Advertisement

স্থানীয় সূত্রে খবর, মতুয়াদের প্রয়াত বড়মা বীণাপাণিদেবীর ঘরের ‘দখল’ নিয়েছিলেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী তথা বিজেপির বিদায়ী সাংসদ শান্তনু ঠাকুর। ২০১৯ সালে প্রয়াত হন বীণাপাণি দেবী। ঠাকুরবাড়িতে যে ঘরে তিনি থাকতেন, সেই ঘরেই রবিবার রাতে দলবল নিয়ে শান্তনু চড়াও হন বলে অভিযোগ ওঠে। দাবি, শাবল, হাতুড়ি দিয়ে তিনি নিজেই তালা ভাঙেন। পরিবারের আরও কয়েক জন ছিলেন তাঁর সঙ্গে। বীণাপাণিদেবী বেঁচে থাকাকালীন তাঁর পাশের ঘরে থাকতেন ঠাকুরবাড়ির বড় বৌমা মমতাবালা। বর্তমানে তিনি থাকেন বীণাপাণিদেবীর ঘরটিতেই। মমতাবালার দাবি, শান্তনু ঘর ‘দখল’ নেওয়ার পর সারা রাত তাঁকে ও তাঁর মেয়েকে বাইরেই থাকতেই হয়েছে। রাতের দিকে শান্তনু-ঘনিষ্ঠ কয়েক জন মতুয়া ভক্ত সদর দরজায় তালাও লাগিয়ে দেন। যার ফলে তৃণমূল সাংসদের জরুরি নথিপত্র ভিতরে থেকে গিয়েছিল। সোমবার দুপুরে পুলিশের হস্তক্ষেপে সেগুলিই বার করে এনে মমতাবালার হাতে তুলে দেওয়া হয়।

মমতাবালার বক্তব্য, ১৯৮৫ সাল থেকে ওই বাড়িতে থাকেন তিনি। শান্তনুরা সেখানে থাকেন না। রবিবার রাতের ঘটনার পর বিষয়টি তিনি পুলিশ-প্রশাসনকে জানাবেন বলেও জানিয়েছিলেন। তৃণমূল সাংসদের ঘনিষ্ঠ মহল সূত্রে খবর, সোমবার মমতাবালা গোটা বিষয়টি পুলিশের কাছে জানান। এর পরেই পুলিশ ঠাকুরবাড়িতে গিয়ে মমতাবালার কিছু জরুরি নথিপত্র ঠাকুরবাড়ি থেকে বার করে আনে।

Advertisement

ঠাকুরবাড়ির ঘটনা নিয়ে বিজেপিকে নিশানা করেছেন মমতাবালা। তিনি বলেন, ‘‘নরেন্দ্র মোদী নানা জায়গায় নারীর সশক্তিকরণ নিয়ে অনেক কথা বলেন। তাঁর দলের লোক মহিলাদের উপর এ ভাবে অত্যাচার করছে! রাজ্যসভার সাংসদ হয়ে যদি আমাকে এই অত্যাচার সহ্য করতে হয়, তা হলে ভাবুন, ২০২৪ সালে বিজেপি ক্ষমতায় এলে দেশের সাধারণ মহিলাদের হাল কী হবে? আমি সমগ্র নারী সমাজের কাছে বিচার চাই।’’ শান্তনু মতুয়াদের আবেগে আঘাত করেছেন বলে দাবি করেছেন মমতাবালা। তিনি বলেন, ‘‘আমি মনে করি, বড়মার প্রতি যে কোটি কোটি মানুষের শ্রদ্ধা রয়েছে, সেই শ্রদ্ধাকে আঘাত করেছে শান্তনু ঠাকুর।’’ বিজেপি সাংসদের বিরুদ্ধে শারীরিক নিগ্রহেরও অভিযোগ তুলেছেন মমতাবালা। ঠাকুরবাড়ির ঘটনা নিয়ে সরব হয়েছে বাংলার শাসকদল তৃণমূল। তাদের বক্তব্য, শান্তনু তাঁর দলবল নিয়ে বড়মার ঘরের ‘দখল’ নেওয়ায় সারা রাত বাইরে কাটাতে হয়েছে মমতাবালা ও তাঁর মেয়েকে। এক্স (সাবেক টুইটার) হ্যান্ডলে তৃণমূলের প্রশ্ন, মোদী তো ‘নারী শক্তি’ নিয়ে এত কথা বলেন, এক মহিলা সাংসদের বিরুদ্ধে লাগাতার হামলার ঘটনায় কি তিনি তাঁর মন্ত্রী (শান্তনু)-র বিরুদ্ধে কোনও পদক্ষেপ করবেন? না কি এই ধরনের হামলার ঘটনাকে সমর্থন করেন মোদী?

হামলার অভিযোগের প্রেক্ষিতে রবিবারই বিবৃতি দিয়েছিলেন শান্তনু। তিনি বলেছিলেন, ‘‘আমার ঠাকুরদার বাড়িতে আমার সমান অধিকার। সেখানে তালা ভেঙে ঢুকব না কী ভাবে ঢুকব, আমার ব্যাপার। একটা ঘরে উনি (মমতা ঠাকুর) থাকুন, অন্য ঘরটি আমরা বুঝে নিয়েছি। মমতা ঠাকুর পুরো বাড়িটাই জবরদখল করে রেখেছিলেন।’’ দল হিসাবে বিজেপি অবশ্য ঠাকুরবাড়ির ‘দ্বন্দ্ব’ নিয়ে কথা বলতে নারাজ। দলের রাজ্যসভার সাংসদ তথা মুখপাত্র শমীক ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘তৃণমূলের মদতে মমতাবালা ঠাকুর এই ধরনের অভিযোগ করছেন। বিজেপি ঠাকুরবাড়ির অভ্যন্তরীণ বিষয়ে ঢুকবে না। বিজেপি চায়, ঠাকুরবাড়ির মর্যাদা অক্ষুণ্ণ থাকুক।’’ মন্তব্য করতে চাননি দিলীপ ঘোষও। বলেছেন, ‘‘এটা ওঁদের পারিবারিক বিষয়। এ নিয়ে কিছু বলব না।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement