অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। ছবি: সংগৃহীত।
ডায়মন্ড হারবারে ‘তাঁর জয়ের ব্যবধান’ নিয়ে বুধবার বসিরহাটের সভা থেকে ভবিষ্যদ্বাণী করলেন তৃণমূলের সেনাপতি অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। পাশাপাশি, বসিরহাটের লোকসভায় কত ভোটে জিততে হবে, তারও লক্ষ্যমাত্রা দলকে বেঁধে দিলেন তিনি। বুধবার রাতে নিজের এক্স হ্যান্ডলে বসিরহাটের মানুষকে ধন্যবাদ জানিয়ে অভিষেক লিখেছেন, “বসিরহাটের মানুষ ঝড়বৃষ্টিকে উপেক্ষা করে আজ জড়ো হয়েছিলেন। তাদের সম্মিলিত গর্জন বজ্রপাতের গর্জনকেও লজ্জায় ফেলে দিয়েছে। বাংলা বিরোধী বিজেপি জমিদারদের বিসর্জন নিশ্চিত করতে সকল প্রতিকূলতাকে উপেক্ষা করে বাংলার অধিকারের লড়াইয়ে যোগদান করুন।”
অভিষেক বলেন, ‘‘আপনাদের এবং আমার ভোট এক দিনে (১ জুন)। ডায়মন্ড হারবারে চার লাখ ভোটে এ বার ওদের (বিরোধীদের) গ্যারাজ করে দেব। এক দম বান্ডিল করে দেব। আপানারা চার লাখ করতে পারবেন তো? আগের বার সাড়ে তিন লাখ ছিল। এ বার চার লাখ হবে তো?’’ অভিষেক ২০১৪ সাল থেকে ডায়মন্ড হারবারের সাংসদ। এ বারও তিনি ওই কেন্দ্রে তৃণমূলের প্রার্থী হিসাবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। বুধবার সন্ধ্যা পর্যন্ত কোনও বিরোধী দলই অভিষেকের বিরুদ্ধে প্রার্থী কে হবেন তা ঘোষণা করেনি।
শাহাজাহান শেখ গ্রেফতার হওয়ার পর থেকে রাজনৈতিক মহলে তো বটেই, তৃণমূলের মধ্যেও এই প্রশ্ন ছিল, এ বার বসিরহাটে তৃণমূলের হয়ে ভোট করাবেন কে? ২০১৪ এবং ২০১৯ সালের লোকসভা ভোটে বসিরহাটে তৃণমূলের হয়ে ভোট করানোর কাজে অন্যতম মাথা ছিলেন শাহজাহান। অনেকের মতে, এ বার সন্দেশখালি-উত্তর পরিস্থিতিতে অভিষেক বুধবার দলের কর্মী-সমর্থকদের মনোবল বৃদ্ধি করতেই ডায়মন্ড হারবারের সঙ্গে বসিরহাটের প্রতিযোগিতা তৈরি করে দিতে চেয়েছেন।
গত লোকসভা ভোটে বসিরহাটে তৃণমূল প্রার্থী করেছিল অভিনেত্রী নুসরত জাহান রুহিকে। এ বার আর তাঁকে টিকিট দেয়নি শাসকদল। বুধবারের সভায় নুসরত নিয়ে কোনও মন্তব্য করেননি অভিষেক। ২০০৯ সালে জেতা সাংসদ হাজি নুরুলকে এ বার ফের বসিরহাটে প্রার্থী করেছে তৃণমূল। নুরুল এখন হাড়োয়ার বিধায়ক। সন্দেশখালির ঘটনার পর বসিরহাট লোকসভা নিয়ে যখন বিবিধ ব্যাখ্যা চলছে রাজনৈতিক মহলে, তখন অভিষেক জেতা-হারা প্রসঙ্গে না গিয়ে সরাসরি ব্যবধান বেঁধে দিতে চাইলেন।
বুধবারের সভা থেকে সাত দফা ভোট নিয়েও তোপ দেগেছেন অভিষেক। তাঁর কথায়, ‘‘২০২১ সালে আট দফায় ভোট করেছিল। তখন বলেছিল কোভিডের জন্য এত দফায় করতে হচ্ছে। এ বার অজুহাতটা কী?’’ বাংলার শাসকদল দাবি করেছিল, এক দফায় ভোট করা হোক। সেই মর্মে জাতীয় নির্বাচন কমিশনে স্মারকলিপিও দিয়েছিল তৃণমূল। অভিষেক প্রশ্ন তুলেছেন, কেরল, তামিলনাড়ুর মতো রাজ্যে কম দফায় ভোট হলে বাংলায় এত দফায় ভোট কেন? যদিও বাংলার পাশাপাশি বিহার এবং উত্তরপ্রদেশেও সাত দফাতেই ভোট হচ্ছে। বুধবারের সভা থেকে অভিষেক এ-ও বলেন, ‘‘আগের বার আট দফায় ভোট করেছিল, গো হারা হারিয়েছিলাম। এ বার আরও গো হারা হারাব।’’