গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ
হাওড়া সেতুতে ওঠার মুখে একটি হলুট ট্যাক্সি আটকে লক্ষ লক্ষ টাকা উদ্ধার করল হাওড়া সিটি পুলিশ এবং কেন্দ্রীয় বাহিনী। গ্রেফতার করা হয়েছে মধ্যপ্রদেশের দুই বাসিন্দাকে। ভোটের মুখে এত টাকা কোথা থেকে নিয়ে আসা হয় এবং কোথায় নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল, তার তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ।
পুলিশ সূত্রে খবর, বুধবার দুপুর ১২টা নাগাদ হাওড়ার গোলাবাড়ি থানার সামনে নাকা তল্লাশি চলছিল। পুলিশের সঙ্গে কেন্দ্রীয় বাহিনীও ছিল ওই অভিযানে। ওই সময় একটি হলুদ ট্যাক্সিকে দেখে সন্দেহ হয় তাদের। গাড়িটি থামিয়ে তল্লাশি চালিয়ে দুটো ঢাউস ব্যাগ উদ্ধার করেন তদন্তকারীরা। দুটো ব্যাগ থেকে সব মিলিয়ে নগদ ৫৮ লক্ষ ৭১ হাজার টাকা নগদ উদ্ধার করা হয়েছে।
এই ট্যাক্সি থেকে উদ্ধার হয় লক্ষ লক্ষ টাকা। —নিজস্ব চিত্র।
ওই ট্যাক্সিতে ছিলেন প্রশান্তকুমার সোনি এবং ভুপেন্দ্র সিংহ নামে দুই ব্যক্তি। প্রথম জনের বয়স ৩৯ বছর। দ্বিতীয় জনের বয়স ৩৪। পুলিশি জিজ্ঞাসাবাদে তাঁরা জানান, তাঁরা মধ্যপ্রদেশের বাসিন্দা। এত টাকা নিয়ে দুই যাত্রী কোথায় যাচ্ছিলেন, তা নিয়ে পুলিশ প্রশ্ন করলে জবাবে দু’জনেই বলেন বড়বাজারে গয়না কিনতে যাচ্ছিলেন তাঁরা। কিন্তু টাকার উৎস এবং ওই গয়না দিয়ে কী করবেন, এ রকম নানা প্রশ্নের কোনও সদুত্তর দিতে পারেননি দু’জন। ওই টাকার কোনও বৈধ কাগজপত্রও দেখাতে পারেননি দুই যবক। এর পর দু’জনকে আটক করে আয়কর দফতরে খবর দেয় পুলিশ। জানা গিয়েছে, দু’জনকে বৃহস্পতিবার আদালতে হাজির করানো হবে।
প্রাথমিক তদন্তের পর পুলিশ জানতে পেরেছে, দুই যুবক উত্তরপ্রদেশ থেকে একটি ট্রেনে চাপেন। সেখান থেকে চম্বলে এসে চম্বল এক্সপ্রেস ধরে বর্ধমান স্টেশনে নামেন। তার পর একটি লোকাল ট্রেনে করে কোন্নগর আসেন। সেখান থেকে আবার হলুদ ট্যাক্সি ভাড়া করে কলকাতার পথে রওনা দিয়েছিলেন। ঠিক হাওড়া সেতুতে ওঠার আগে গোলাবড়ি থানার পুলিশ এবং কেন্দ্রীয় বাহিনীর জওয়ানেরা ওই ট্যাক্সিটিকে আটকায়। এই ঘটনা প্রসঙ্গে হাওড়া সিটি পুলিশের কমিশনার প্রবীণকুমার ত্রিপাঠী জানান, একই সঙ্গে গোলাবাড়ি থানির পুলিশ এবং কেন্দ্রীয় বাহিনী নাকা তল্লাশি চালাচ্ছিল। তাতে এই বিপুল পরিমাণ টাকা উদ্ধার হয়েছে। প্রাথমিক ভাবে মনে করা হচ্ছে অবৈধ ভাবে ওই টাকা নিয়ে আসা হয়েছে। ভোটের মুখে এত টাকা উদ্ধারের ঘটনাকে গুরুত্ব দিয়ে দেখা হচ্ছে বলে জানান পুলিশ কমিশনার।
তিনি বলেন, ‘‘বৃহস্পতিবার অভিযুক্তদের আদালতে হাজির করানো হলে তাঁদের বিরুদ্ধে আলাদা করে একটি এফআইআর দায়েরের অনুমতি চাইবে পুলিশ। কারণ, ভোটের সময় ওই টাকা কোথা থেকে আসছে, তা খতিয়ে দেখতে হবে।’’