হিরণ চট্টোপাধ্যায়। —ফাইল চিত্র।
কেশপুরে ছাপ্পা হয়েছে বলে ভোটের দিন থেকেই অভিযোগ করে আসছিলেন ঘাটালের বিজেপি প্রার্থী হিরণ চট্টোপাধ্যায়। পুনর্নির্বাচনেরও দাবি করেছিলেন। এ বার স্ট্রং রুম পরিদর্শনে গিয়ে হিরণের মন্তব্য, ‘‘নির্বাচনের দিন কেশপুরে লুঙ্গি ডান্স করে প্রশাসনের ষড়যন্ত্রে গণতন্ত্র হত্যা করা হয়েছে। এর জন্য কেশপুরের মানুষের কাছে ক্ষমা চাইছি।’’ কমিশনের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন বিজেপি প্রার্থী। পাল্টা হিরণের দাবিকে অমূলক বলে মন্তব্য করে উড়িয়ে দিয়েছে তৃণমূল।
বুধবার সন্ধ্যায় ঘাটাল রবীন্দ্র মহাবিদ্যালয়ে স্ট্রং রুম পরিদর্শনে যান হিরণ। সেখান থেকে বেরিয়ে তিনি দাবি করেন, যে দিন স্ক্রুটিনি হয়েছিল, সে দিন কেশপুরের দু’টি বুথের সিসি ক্যামেরা দেখতে চেয়েছিলেন। কিন্তু দায়িত্বে থাকা পর্যবেক্ষক তাতে বাধা দিচ্ছিলেন। শেষমেশ তিনি দেখাতে বাধ্য হন। হিরণ বলেন, ‘‘কেশপুরের ৭১ ও ৭৪ বুথের ভিডিয়ো ফুটেজে দেখা গিয়েছে, কী ভাবে তৃণমূল কর্মীরা ভোটারদের প্রভাবিত করেছে। প্রতিবাদ করেছিলাম। কিন্তু পর্যবেক্ষক বা রিটার্নিং অফিসার কেউ শোনেননি। সমস্ত ইভিএম মেশিন সিল করে চলে যান। কেশপুরে ২০০ বুথে বিজেপির এজেন্টকে বসতে দেয়নি তৃণমূল। খুল্লাম খুল্লা ছাপ্পা মেরেছে। এ নিয়ে নির্বাচন কমিশনে অভিযোগ জানিয়েছিলাম। কিন্তু এখনও পর্যন্ত কোনও উত্তর আসেনি।’’
স্ট্রং রুমে যাওয়ার আগে জেলাশাসকের দফতরে ভোটগণনা সংক্রান্ত সর্বদল বৈঠকেও যোগ দিয়েছিলেন হিরণ। সে ব্যাপারে তিনি বলেন, ‘‘আজ জেলাশাসক, পুলিশ সুপারের সঙ্গে দেখা হয়েছিল। দু’জনকেই বললাম, ভোটের দিন লুঙ্গিবাহিনী যে কাণ্ড করল, তাণ্ডবনৃত্য চালাল কেশপুর জুড়ে, আপনারা তার কী ব্যবস্থা নিয়েছেন? তাঁরা বলছেন, তদন্ত হচ্ছে। আমি বলেছি, আপনি তো ব্যর্থ এসপি। আপনার তো পদত্যাগ করা উচিত ছিল ২৫ তারিখ সন্ধ্যাবেলায়। উনি উল্টে বলেছেন, লিমিটের বাইরে কথা বলছেন। জেলাশাসকের জবাব, তাঁর কাছে কোনও উত্তর নেই। নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে কথা বলতে বলছে। নির্বাচন কমিশন নিশ্চুপ।’’ তবে এত কিছুর পরেও ঘাটালে তিনিই জিততে চলেছেন বলে দাবি করেছেন হিরণ। তিনি বলেন, ‘‘যতই আটকানোর চেষ্টা হোক, বাংলার মানুষ দু’হাত তুলে আশীর্বাদ করেছেন মোদীজিকে। বিপুল ভোটে বিজেপিকে জেতাবে আগামী ৪ তারিখে। যে ভাবে কেশপুরে ষড়যন্ত্র করে গণতন্ত্রকে হত্যা করল, তার জন্য আমি লজ্জিত। দলকে জানিয়েছি। দল যদি মনে করে, হাই কোর্টে যাবে।’’
পাল্টা তৃণমূলের ঘাটাল সাংগঠনিক জেলা সভাপতি আশিস হুদাইত বলেন, ‘‘হিরণ বাজে কথা বলেছেন। কমিশনের উপর আস্থা রয়েছে আমাদের। নির্বাচনটা তো আর তৃণমূল দেখেনি। কমিশন সন্তুষ্ট ঘাটাল লোকসভা নির্বাচনে। উনি যে কথা বলছেন, সেটা তার রাজনৈতিক দৃষ্টিভঙ্গি। উনি যে দাবি তুলেছেন, সেই দাবি অমূলক।’’