প্রজাতান্ত্রিক মোর্চায় সামিল অবসরপ্রাপ্ত আমলা গোপাল লামা৷ ছবি: নিজস্ব চিত্র।
পাহাড়ের ক্ষমতাসীন দল গোর্খা প্রজাতান্ত্রিক মোর্চায় যোগ দিলেন রাজ্য সরকারের অবসরপ্রাপ্ত আমলা গোপাল লামা। আগামী লোকসভায় তিনি মোর্চা এবং তৃণমূলের যৌথ প্রার্থী হচ্ছেন বলে ইতিমধ্যে আলোচনা শুরু হয়েছে। বুধবার শিলিগুড়ি লাগোয়া পিনটেল ভিলেজে অনীত থাপার নেতৃত্বে প্রজাতান্ত্রিক মোর্চার কেন্দ্রীয় কমিটির বৈঠক হয়েছে। সেখান থেকেই গোপাল লামাকে দলে যোগদানের প্রস্তাব নিয়ে আবেদন জানানো হয়। পরে, পিনটেলেই উত্তরীয় পরিয়ে রাজ্য সরকারের প্রাক্তন আমলাকে দলে স্বাগত জানান অনীত। আপাতত দলের কেন্দ্রীয় কমিটির উপদেষ্টা হিসাবে গোপাল লামা কাজ করবেন বলে ঠিক হয়েছে।
প্রজাতান্ত্রিক মোর্চার সভাপতি তথা জিটিএ প্রধান অনীত থাপা বলেন, ‘‘গোপাল লামার প্রশাসনিক অভিজ্ঞতা বিরাট। উনি গোর্খা নয়, দার্জিলিং জেলার সঙ্গে ওঁর মাটির সম্পর্ক। বিভিন্ন স্তরে পরিচিতিও রয়েছে। আমরা দলের বিভিন্ন বিষয়ে ওঁর পরামর্শ নেব।’’ আর ভোটের প্রার্থী প্রসঙ্গে অনীতের জবাব, ‘‘সঠিক সময় সব কিছুর ঘোষণা হবে।’’
দলীয় সূত্রের খবর, গত সপ্তাহেই কলকাতায় তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং মোর্চা সভাপতি অনীতের বৈঠক হয়েছে। সেখানে গোপাল লামা-সহ আরও কয়েকটি নাম নিয়ে আলোচনা হয়েছে। প্রজাতান্ত্রিক মোর্চার নেতা তৃণমূলের প্রতীকে লড়াই করবেন বলে ঠিক হয়ে রয়েছে। সূত্রের দাবি, সে নিরিখে এগিয়ে আছেন রাজ্য সরকারের এই প্রাক্তন আমলা। তাঁর সম্পর্কে যাবতীয় তথ্য ইতিমধ্যে কলকাতায় পৌঁছে দেওয়া হয়েছে। শিলিগুড়ির মহকুমা শাসক থেকে দার্জিলিঙের অতিরিক্ত জেলাশাসক, পর্যটন দফতরের ডেপুটি ডিরেক্টর থেকে জিটিএ-র ওএসডি (অফিসার অন স্পেশাল ডিউটি) পদে গোপাল লামা কাজ করেছেন। ভূমি দফতরেও তিনি উঁচু পদে ছিলেন।
দার্জিলিং লোকসভা আসনে বিজেপি দেশের প্রাক্তন বিদেশ সচিব হর্ষবর্ধন শ্রিংলাকে প্রার্থী করতে পারে বলে চাউর হয়েছে। এর পাল্টা, রাজ্য সরকারের এক প্রাক্তন আমলাকে প্রার্থী করা নিয়ে তৃণমূল এবং প্রজাতান্ত্রিক শিবিরে আলোচনা শুরু হয়। দলের নেতারা জানাচ্ছেন, প্রজাতান্ত্রিক মোর্চায় যোগ দিয়ে তৃণমূলের প্রতীকে গোপাল লড়াই করতেই পারেন। এতে বিরোধীদের কিছুই বলার নেই। কারণ, দার্জিলিঙের জিএনএলএফ নেতা নীরজ জিম্বাও বিজেপির প্রতীকে জিতে বিধায়ক হয়েছেন। গতবার অমর সিংহ রাইকেও তৃণমূলের প্রতীকে প্রার্থী করা হয়েছিল। দলের যোগ দেওয়ার ফলে, গোপাল এখন থেকে ময়দানে সরাসরি কাজ শুরু করতে পারবেন।
জীবনে প্রথম কোনও রাজনৈতিক দলে যোগ দিয়ে গোপাল লামা বলেন, ‘‘অনীত থাপা’রা পাহাড়ে দারুণ কাজ করছেন। দীর্ঘদিন পরে জমির পাট্টা দেওয়া, পর পর উন্নয়নের কাজ হচ্ছে। শিক্ষা এবং স্বাস্থ্যেও উন্নতি হচ্ছে। এতে আমার অভিজ্ঞতা থেকে কিছু পরামর্শ দিতে পারলে ভালই হবে।’’ তবে তাঁকে প্রার্থী করা নিয়ে আলোচনা চলছে তা স্বীকার করে নিয়েছেন অবসরপ্রাপ্ত আমলা। তিনি বলেন, ‘‘আমার নাম কলকাতায় প্রার্থিপদের জন্য গিয়েছে শুনেছি। সেখান থেকে যা বলার, বলা হবে। আমি এখনই কিছু বলছি না। সবাই চাইলে, নিজের মাটির এলাকা থেকে ভোটে লড়াই করব।’’