গুলাম নবি আজ়াদ। — ফাইল চিত্র।
আসন্ন লোকসভা নির্বাচনে জম্মু-কাশ্মীরে নতুন মহাজোট গড়েছেন প্রাক্তন কংগ্রেস নেতা তথা ডেমোক্র্যাটিক প্রোগ্রেসিভ আজ়াদ পার্টি (ডিপিএপি)-র প্রধান গুলাম নবি আজ়াদ। ওই কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলে বিরোধী মঞ্চ ‘ইন্ডিয়া’কে রুখতেই এই পদক্ষেপ। রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, আজ়াদদের এই জোট বিজেপির রণকৌশলেরই অঙ্গ।
২০২২ সালে কংগ্রেস ছেড়েছিলেন গুলাম নবি। রাজ্যসভায় তাঁর মেয়াদ শেষ হওয়ার দিন সভায় কেঁদে ফেলেছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী স্বয়ং। পরবর্তীকালে কংগ্রেসের সঙ্গে সম্পর্ক ছেদ করে নতুন দল গড়েন গুলাম নবি। ইতিমধ্যেই তিনি উপত্যকায় জোট তৎপরতা শুরু করে দিয়েছেন। সম্প্রতি জম্মু-কাশ্মীর আপনি পার্টির প্রধান আলতাফ বুখারির সঙ্গে বৈঠক করেছেন। বুখারি আগে পিডিপি-তে ছিলেন। পরে পিডিপি-র সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করে ২০২০ সালে জম্মু-কাশ্মীর আপনি পার্টি গড়েন। উধমপুর-ডোডা আসনে ডিপিএপি-র ভাইস চেয়ারপার্সন জি এম সারুরির বিরুদ্ধে আপনি পার্টি প্রার্থী দেবে না বলে প্রথম দিকে ঠিক করে। ওই কেন্দ্র প্রার্থী প্রধানমন্ত্রীর দফতরের প্রতিমন্ত্রী জিতেন্দ্র সিংহ এবং কংগ্রেসের লাল সিংহ। আগামী ১৯ এপ্রিল ওই আসনে ভোট।
আসন্ন লোকসভা নির্বাচনে উপত্যকায় জোট গড়তে তৎপরতা শুরু করেন গুলাম নবি। তিনি আলোচনা শুরু করেন বুখারি এবং পিপলস কনফারেন্সের সাজ্জাদ লোনের সঙ্গে। আদর্শগত ভাবে বুখারি এবং লোন তীব্র বিরোধী গুলাম নবির। কিন্তু ভোটের ময়দানে সেই বিরোধ সরিয়ে রেখে একজোট হয়েছেন তাঁরা। লক্ষ্য উপত্যকায় ‘ইন্ডিয়া’ যেন কোনও সুবিধা না পায়।
গুলাম নবির নেতৃত্বাধীন জোট প্রকাশ্যে বিজেপির ছোঁয়া বাঁচিয়ে চলছে। সূত্রের খবর, এই মহাজোটকে পরোক্ষে সব রকম সহযোগিতা করে চলেছে বিজেপি। লক্ষ্য, এই মহাজোট বিরোধী মঞ্চ ‘ইন্ডিয়া’ তথা কংগ্রেসের ভোটে থাবা বসাবে, যার ফলে উধমপুর, জম্মু এবং উপত্যকার আসনগুলিতে সুবিধা পাবেন পদ্মপ্রার্থীরা।
‘ইন্ডিয়া’য় থাকা সত্ত্বেও ন্যাশনাল কনফারেন্স এবং পিডিপির আসন সমঝোতা হয়নি। তারা উপত্যকার তিনটি আসনেই পরস্পরের বিরুদ্ধে প্রার্থী দেবে। এর ফলে অনন্তনাগ এবং বারামুলা আসনে অসুবিধায় পড়তে পারে উপত্যকার এই দুই দল।
এই পরিস্থিতিতে গুলাম নবির নেতৃত্বাধীন মহাজোট বিজেপির মেরুকরণে সুবিধা করে দিতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে। কাশ্মীর রাজনীতিতেও তা উল্লেখযোগ্য প্রভাব ফেলবে। বিশ্লেষকদের একাংশের ধারণা, আজ়াদদের মহাজোটের রণকৌশল এবং প্রার্থী নির্বাচন— ভবিষ্যতে এই কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলের রাজনৈতিক ছবিই পাল্টে দিতে পারে।