অরুণাচল প্রদেশে বিজেপিতে যোগ দিলেন চার বিধায়ক। উপস্থিত রয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী পেমা খাণ্ডু (সামনে বাঁ দিক থেকে দ্বিতীয়)। ছবি: ফেসবুক থেকে।
অরুণাচল প্রদেশে একই সঙ্গে হতে চলেছে লোকসভা এবং বিধানসভা ভোট। তার আগে আর একটু মজবুত হল শাসকদল বিজেপির হাত। চার বিধায়ক যোগ দিলেন বিজেপিতে। দু’জন কংগ্রেসের এবং দু’জন ন্যাশনালিস্ট পিপল্স (এনপিপি) পার্টির। তার পরেই ৬০ আসন বিশিষ্ট অরুণাচল বিধানসভায় বিজেপির বিধায়কের সংখ্যা দাঁড়াল ৫৬। কংগ্রেসের আসন সংখ্যা দুই এবং বাকি দুই বিধায়ক নির্দল।
রবিবার রাজধানী ইটানগরে একটি কর্মসূচিতে বিজেপিতে যোগ দিলেন কংগ্রেসের বিধায়ক নিনং এরিং, ওয়াংলিং লোয়ানডং এবং এনপিপির বিধায়ক মুটচু মিথি, গোকর বাসার। মঞ্চে উপস্থিত ছিলেন অরুণাচলের মুখ্যমন্ত্রী পেমা খাণ্ডু এবং অসমের মন্ত্রী তথা অরুণাচলে বিজেপির নির্বাচনী দায়িত্বপ্রাপ্ত অশোক সিঙ্ঘল। এরিং পশ্চিম পাসিঘাট কেন্দ্রের বিধায়ক এবং ওয়াংলিন বরদুরিয়া বোগাপানির বিধায়ক। মুটচু এবং গোকর যথাক্রমে রোয়িং এবং বাসারের বিধায়ক।
২০১৯ সালের বিধানসভা নির্বাচনে ৬০টির মধ্যে ৪১টি আসন পেয়েছিল বিজেপি। গত ১৫ বছরে ইটানগরে বহু বার রাজনৈতিক টানাপড়েন হয়েছে। এক সময় কংগ্রেস দুর্গ হিসেবে পরিচিত ছিল অরুণাচল। ২০১১ সালে হেলিকপ্টার দুর্ঘটনায় তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী দোর্জি খান্ডুর মৃত্যু হয়। এর পরে অশান্তি শুরু। প্রথমে জারবম গামলিন মুখ্যমন্ত্রী হন। কংগ্রেসে শুরু হয় গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব। গামলিনকে সরিয়ে ক্ষমতা দখল করেন নাবাম টুকি। ২০১৪ সালের ভোটে কংগ্রেস ৪২ আসনে জিতলে টুকি ফের মুখ্যমন্ত্রী হন। কিন্তু কালিখো পুলের নেতৃত্বে পেমা-সহ বিদ্রোহী বিধায়কেরা তাঁকে সরিয়ে সরকার গড়েন। মামলা আদালতে গড়ায়। রাষ্ট্রপতি শাসনে টুকি ক্ষমতা ফিরে পেলেও কংগ্রেস নেতৃত্ব প্রথমে পেমার এবং তাঁর অনুগামীদের দাবি মেনে তাঁকেই মুখ্যমন্ত্রী করেন। পরে পেমার নেতৃত্বে অধিকাংশ বিধায়ক দলবদল করে পিপিএতে যোগ দেন। আঞ্চলিক দল পিপিএ সরকার গড়ে। পরে তাঁরা ফের দল বদলে বিজেপিতে যোগ দেন। এর পর অরুণাচল দ্বিতীয় বার বিজেপির হাতে আসে। অতীতে দলবদলের জেরে কিছু দিনের জন্য রাজ্যে গেগং আপাংয়ের নেতৃত্বে বিজেপি সরকার এসেছিল।
২০১৯ সালের নির্বাচনের আগে অরুণাচলে পরিস্থিতি ছিল উত্তপ্ত। পেম এবং নেডার তৎকালীন চেয়ারম্যান হিমন্তবিশ্ব শর্মা বিপক্ষে থাকা নেতাদের ভোটের টিকিট দেননি। এর পর সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেয়ে ক্ষমতা দখল করে বিজেপি। মুখ্যমন্ত্রী হন পেমা। ক্রমে এক এক করে বিরোধী বিধায়ক যোগ দেন বিজেপিতে। এ বার ভোটের আগে যোগ দিলেন আরও চার।