জন বার্লা।
আলিপুরদুয়ার লোকসভা আসনে বিজেপির লোকসভা প্রার্থী মনোজ টিগ্গার বিরুদ্ধে একাধিক বাগানে ‘ভারতীয় টি ওয়ার্কার্স ইউনিয়ন’ বা বিটিডব্লিউইউ-এর নেতা-কর্মীরা প্রচারে নামলেন। যে ঘটনাকে ঘিরে আসন্ন লোকসভা নির্বাচনে আলিপুরদুয়ার কেন্দ্রে বিজেপির ‘চাপ’ আরও বাড়ল বলেই মনে করছেন আলিপুরদুয়ারের রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকেরা।
সূত্রের খবর, বিটিডব্লিউইউ নেতাদের সঙ্গে ইতিমধ্যেই যোগাযোগ শুরু করে দিয়েছেন তৃণমূলের চা শ্রমিক সংগঠনের নেতারা। যে সংগঠনের শীর্ষ নেতা কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী ও বিদায়ী বিজেপি সাংসদ জন বার্লা। শুধু তা-ই নয়, তৃণমূলের তরফে বার্লার সঙ্গেও যোগাযোগ করা হচ্ছে বলে রাজ্যের শাসক দল সূত্রের খবর। যদিও এ ব্যাপারে দিনভর বিভিন্ন সময়ে বার্লার সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তিনি ফোন ধরেননি। তৃণমূলের জেলা সভাপতি তথা রাজ্যসভার সদস্য প্রকাশ চিক বরাইক বলেন, “এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়ার আমি কেউ নই। তাই কোনও মন্তব্যও নেই।”
মাদারিহাটে রেলের অনুষ্ঠান মাঝপথে ছেড়ে বুধবার স্টেশন থেকে বেরিয়ে যাওয়ার সময় বার্লাকে ‘নো ভোট টু মনোজ টিগ্গা’ বলতে শোনা গিয়েছিল। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বিটিডব্লিউইউ-এর এক শীর্ষ নেতা জানান, আলিপুরদুয়ার লোকসভা জুড়ে বিভিন্ন চা বাগানে এ নিয়ে প্রচার শুরু হয়ে গিয়েছে। আসন্ন লোকসভা নির্বাচনে মনোজ টিগ্গা যাতে কোনও অবস্থায় ভোট না-পান, সে বিষয়ে সংগঠনের নেতা-কর্মীরা প্রচার চালাচ্ছেন।
যদিও এই বিষয়ে প্রসঙ্গে মনোজ টিগ্গা বলেন, “দু’দিন আগে বিটিডব্লিউইউ-এর বৈঠকে যাঁরা উপস্থিত ছিলেন, তাঁদের নেতাদের নব্বই শতাংশই আমার সঙ্গে যোগাযোগ রাখছেন। ফলে, এমন দাবি একেবারেই ভিত্তিহীন।” যার উত্তরে তৃণমূলের রাজ্যসভার সদস্য প্রকাশ বলেন, “নো ভোট টু মনোজ টিগ্গা’ তো জন বার্লাই বলে দিয়েছেন। তাই এটা নিয়েও আমাদের কিছু বলার নেই। বিজেপির লোকেরাই এর উত্তর দিন।” তবে তৃণমূল সূত্রের দাবি, বিটিডব্লিউইউ-এর একাধিক নেতাই তাঁদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছেন। সে অনুযায়ী, চা বলয় প্রধান আলিপুরদুয়ার কেন্দ্রে নিজেদের সংগঠনকে সাজিয়ে তুলতে শুরু করেছে রাজ্যের শাসক দল।
বৃহস্পতিবার নাগরাকাটা স্টেশন সংলগ্ন এলাকায় রেলের একটি অনুষ্ঠান শেষে বার্লাকেও পড়তে হয় বিক্ষোভের মুখে। সূত্রের খবর, স্টেশনপাড়া, ভগৎপুর চা বাগানের কবর লাইনের মতো এলাকাতে শতাধিক পরিবার জলের কষ্টে প্রতি বছর ভোগেন। শুষ্ক মরসুমে সেই ভোগান্তি চরমে ওঠে। এ নিয়ে এ দিন বার্লাকে ঘিরে বিক্ষোভ দেখান স্থানীয় মহিলারা। বার্লার পাল্টা দাবি, ‘জল জীবন মিশন’ প্রকল্পের অধীনে কোটি-কোটি টাকা বরাদ্দ হলেও রাজ্যের জনস্বাস্থ্য ও কারিগরি দফতর উদ্যোগী হয়নি। নাগরাকাটার প্রাক্তন বিধায়ক তথা তৃণমূল নেতা জোসেফ মুন্ডা বলেন, "সাংসদ রাজ্যকে দুষে দায় এড়াতে পারেন না। মানুষ যোগ্য জায়গাতেই প্রশ্ন করেছেন।"
সহ প্রতিবেদন: সব্যসাচী ঘোষ